পুজোর আগেই শিল্প বিনিয়োগে সুখবর, আদানি গোষ্ঠীকেই তাজপুর সমুদ্র বন্দরের দায়িত্ব দিল রাজ্য
- Published by:Siddhartha Sarkar
- news18 bangla
Last Updated:
মোট ২৫ হাজার কোটি টাকা এই গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির জন্য বিনিয়োগ হবে। রাজ্যের শিল্পে বিনিয়োগের দরজা খুলে গেল। দাবি করছেন শিল্পমহলের বিশেষজ্ঞরা।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা: রাজ্যে শিল্পে বিনিয়োগের পক্ষে সুখবর। রাজ্যে অবশেষে তাজপুর সমুদ্র বন্দর প্রস্তাব পাশ হল রাজ্য মন্ত্রিসভায়। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর একাধিকবার বিভিন্ন বৈঠকে রাজ্যে শিল্পে বিনিয়োগ আনা যে তার অন্যতম লক্ষ্য বারবার তা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সোমবার পুজোর আগেই তাজপুর সমুদ্র বন্দর নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল রাজ্য। প্রস্তাবিত তাজপুর গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের দায়িত্ব পেল আদানি গোষ্ঠী। এই প্রস্তাব সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিলমোহর দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র বন্দর ঘিরে রাজ্যে ২৫ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও ১লক্ষের বেশি পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। এই বন্দর প্রকল্প ঘিরে সব মিলিয়ে লগ্নি হবে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে আদানী গোষ্ঠী গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণে। দশ হাজার কোটি টাকা রাজ্য সরকার বিনিয়োগ করবে পরিকাঠামো বিকাশে।তাজপুর বন্দর গড়ে ওঠার পর তা রাজ্যের অর্থনৈতিক বিকাশে এক নয়া মাইলফলক হবে বলে মনে করছে প্রশাসনিক ও বিশেষজ্ঞ মহল। ‘আদানি পোর্টস অ্যান্ড এসইজেড লিমিটেড’ এই বন্দর নির্মাণে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এছাড়াও রাজ্য সরকার বন্দর কেন্দ্রিক পরিকাঠামো উন্নয়নে আরও ১০ হাজার কোটি টাকা লগ্নি করবে।
advertisement
advertisement
জানা গেছে পুজোর পর এই প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে লেটার অফ ইনটেন্ট দেওয়া হবে। গত এপ্রিলে বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে এসে আদানি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান গৌতম আদানি রাজ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা লগ্নি করার ঘোষণা করেছিলেন। আদানির সেই ঘোষণার সবথেকে বড় প্রকল্পটি এই তাজপুর বন্দরই হতে চলেছে। প্রসঙ্গত, ওয়েস্ট বেঙ্গল মেরিটাইম বোর্ড পিপিপি মডেলে ওই বন্দর নির্মাণের জন্য আগ্রহী সংস্থাগুলির কাছ থেকে ইচ্ছাপত্র চেয়েছিল। একাধিক গোষ্ঠী তার জন্য আবেদন করে। যার মধ্য আদানি গোষ্ঠী, জেএসডব্লিউ ইনফ্রাস্ট্রাকচার, এসার পোর্টস, ডিপি ওয়ার্ল্ড, পোর্ট অফ সিঙ্গাপুরের মতো সংস্থা তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ে তোলার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আদানি পোর্ট অ্যান্ড এসইজেড লিমিটেড এবং জেএসডব্লিউ ইনফ্রাস্ট্রাকচার বন্দর গড়ে তোলার জন্য দরপত্র জমা দেয়। উল্লেখ্য, আদানি গোষ্ঠীর এই সংস্থা ভারতের বৃহত্তম বেসরকারি বন্দর অপারেটার।
advertisement
সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান ‘‘আদানি পোর্টস অ্যান্ড এসইজেড লিমিটেড সর্বোচ্চ দর দিয়েছিল।’’ মূলত জাতীয় সড়ক ১১৬বি থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে এই গভীর সমুদ্র বন্দরটি গড়ে উঠবে। এর নাব্যতা হবে ১২.১ মিটার। প্রায় ১৮ কিলোমিটার চ্যানেল এবং জোয়ারের সময়ে নাব্যতা আরও ৩.৯ মিটারের মতো বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মোট নিট নাব্যতা বেড়ে দাঁড়াবে ১৬ মিটার। এর ফলে ১ লক্ষ টন ওজনের ফাঁকা জাহাজ সহজেই বন্দরে নোঙর করতে পারবে বলে সরকারের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
advertisement
ভৌগোলিক অবস্থানের নিরিখে এই বন্দর অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। তাজপুর বন্দর গড়ে উঠলে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি প্রভূত উপকৃত হবে। উত্তরবঙ্গও এই বন্দরের সুবিধা পাবে। এই বন্দরের মাধ্যমে বিশ্ব বাজারে এই সমস্ত রাজ্যগুলি থেকে সহজে ও কম সময়ে পণ্য পাঠানো সম্ভব হবে। রাজ্য সরকার যে ডানকুনি-রঘুনাথপুর করিডর তৈরি করছে, তার সঙ্গেও তাজপুর বন্দর সংযুক্ত হবে। বন্দরটি চালু হওয়ার পর রাজ্য থেকে রপ্তানি যেমন বাড়বে, তেমনই শিল্প ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিরাট দিক খুলে যাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তাজপুরে সমুদ্রের তীরে ১২৫ একর জমিতে বন্দর গড়ে উঠবে। সেখান থেকে চার কিলোমিটার দূরে বন্দর-সংযুক্ত শিল্প গড়ার জন্য আরও ১,০০০ একর জমি নির্মাতা সংস্থাকে রাজ্যের তরফে দেওয়া হবে।
advertisement
প্রস্তাবিত বন্দরটি পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও ছত্তিসগড়ের খনি অঞ্চলগুলির খুব কাছে গড়ে উঠবে। তাজপুর বন্দর চালু হলে বিশেষ করে রাজ্যের লৌহ ও ইস্পাত শিল্প ক্ষেত্র অত্যন্ত উপকৃত হবে। তাজপুরে বন্দর নির্মাণের জন্য কোনও জমি অধিগ্রহণ করতে হবে না। তাজপুরের কাছে দাদনপাত্রে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার যে ১,০০০ একর জমি ছিল, তা প্রস্তাবিত বন্দর সংযুক্ত উন্নয়ন কাজের জন্য শিল্পোন্নয়ন নিগমকে দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷
Location :
First Published :
September 20, 2022 7:50 AM IST