#কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ৩৯ বছরের সম্পর্ক এক লহমায় ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। উত্তরপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক প্রবীর ঘোষালকে মীরজাফর দাগিয়ে দিয়ে পাল্টা প্রচারে নামল তৃণমূল। গোটা দিন ধরে চলল প্রবীর ঘোষালের ছবিতে কালিমা লেপন এবং উত্তরপাড়া -হিন্দমোটর অঞ্চলে তৃণমূলের অভিনব কায়দায় 'শুদ্ধিকরণ'।
দীর্ঘদিন ধরেই বেসুরে বাজছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একদা অনুগত প্রবীর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় অনুপস্থিত ছিলেন, তারপর ধাপে ধাপে ইস্তফা দিয়ে সোজা দিল্লি রওনা। দলত্যাগ সম্পর্কে প্রবীরের যুক্তি ছিল দলে তাঁকে হারানোর একটি চক্র তৈরি হয়েছে। উল্টো দিকে তৃণমূল বলছে দীর্ঘদিন ধরেই প্রবীর নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছেন, তাই প্রবীর বিদায়ে একরকম খুশিই এলাকার তৃণমূল কর্মীরা। সেটা বোঝাতেই রীতিমতো উৎসবে মাতলেন তাঁরা। এদিন সকালে কোন প্রবীর যখন ডুমুরজোলা স্টেডিয়াম-মুখী তখনই মিছিল বের করে তৃণমূল। হিন্দমোটর ধারসা অঞ্চলের কাছে গঙ্গাজলে শুদ্ধিকরণও করা হয় রাস্তাঘাট। এমনকি প্রবীরের বাড়ির সামনে রীতিমতো খই ছড়িয়ে হরিধ্বনি তুলতেও দেখা যায় একদল তৃণমূলকর্মীকে।
প্রবীর নিজের দল ছাড়ার আগে রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন কানাইপুর পঞ্চায়েতের তরফে কোননগরের রাস্তা তৈরি করতে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কিন্তু তৃণমূল বলছে, প্রবীর বিভেদমূলক রাজনীতি করে এতদিন দলের ক্ষতি করেছেন। প্রমাণ স্বরূপ তাঁর তুলে আনছেন লোকসভা নির্বাচনের ফল। লোকসভা নির্বাচনে জেলার আসনের জিতলেও হুগলি লোকসভা আসনে হেরে যায় তৃণমূল কংগ্রেস। তার দায় প্রবীরের ওপরেই দিচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। তাঁর বিদায়েই তাই শুদ্ধিকরণ শুরু করেছেন তাঁরা। তাঁরা বুঝিয়ে দিচ্ছেন, প্রবীর ঘোষাল চলে যাওয়ায় তারা এক রকম খুশি কারণ দলের জন্য দীর্ঘদিন প্রবীর ঘোষাল উন্নয়নমূলক কোনো কাজই করেননি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দল ছাড়লেও প্রাক্তন দলনেত্রী সম্পর্কে কুকথা বলেননি প্রবীর ঘোষাল। তাঁর রোষ ছিল জেলার একাংশের উপর। এমনকি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মুখেও তিনি বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর পরিবারের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা,কৃতজ্ঞতা থাকবে।