#কলকাতা: বেহালায় জমি রাক্ষসদের থাবা খেলার মাঠে।রীতিমত আঁটোসাঁটো হয়ে নেমেছে মাঠ দখল করতে।সঙ্গে রয়েছে এরাজ্যের সরকারি দলের মদত পুষ্ট প্রভাবশালীরা।আশঙ্কায় রয়েছে স্থানীয় ক্লাবের খুঁদে খেলোয়াড়রা।একে একে স্নানের পুকুর শেষ,তার পর মাঠ।দরবার করে লাভ হচ্ছেনা ,বলে দাবী স্থানীয়দের। বেহালা রায় বাহাদুর রোডে,২০ কাঠার একটি খেলার মাঠ।একসময়,জমিদার শৈলেন্দ্র নাথ রায় ,ওই জায়গাটিকে,ছেলেদের খেলার মাঠ,কোচিং ক্যাম্প,ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে আরম্ভ করে স্থানীয় ক্লাব গুলির জন্য খুলে দেন।সেই রীতি মেনেই, প্রায় ৩৭ বছরের বেশি ওখানে চলে আসছে সবকিছু।রায় পরিবার থেকে কোনো দিন কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি, এ ব্যাপারে।
হঠাৎ করেই ২১ শে ফেব্রুয়ারী সকালে,বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী নিয়ে দুজন আইনজীবী সমেত ওই জমি দখল করতে আসে কয়েকজন অপরিচিত।ঘটনায় অবাক হয়ে পড়েন ওই মাঠের মালিকরা, সুবীর রায় ও গৌতম রায়।ওনারা বাধা দিলে ,ওই দুষ্কৃতীদের হুমকিতে রীতিমত ভয় পান রায় পরিবার। খবর পেয়ে স্থানীয় ক্লাবের সদস্য থেকে,কচি কাঁচার দল, তাদের মাঠ দখল হয়ে যাচ্ছে শুনে দৌড়ে আসে মাঠে।কোনো ভাবে বাধা মানতে চায়নি ওই জবর দখল করতে আসা সশস্ত্র গুন্ডারা। এরপর রায় পরিবার খবর দেয়,বেহালা থানার পুলিশকে।বেহালা থানার পুলিশ সেই সময় ,কোনো ভাবে সাহায্য করতে আসেনি রায় পরিবারকে।
জমির একজন মালিক সুবীর বাবু পেশায় আইন জীবি। তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেন ' বাংলার বন্ধু ' নামে একটি সংগঠনকে আলিপুর আদালত পার্মানেন্ট ইঞ্জাংশনের আদেশ দিয়েছেন।কি ভাবে মালিক পক্ষর অজ্ঞাতে এই ঘটনা ঘটল? খোঁজ নিয়ে দেখা যায়,ওই সংস্থার পক্ষথেকে সম্পাদক, সমর ভূষণ সরকার ও বিদ্যুৎ কুমার ঘোষ ওই সংস্থার তরফ থেকে মামলা করেছেন। সুবীর বাবু দের তরফ থেকে দাবী ,ওনারাই মাঠের মালিক। তবে ওই সংস্থা আদালতে ১২ কাঠার কিছু বেশি জমির ইঞ্জাংশন পেয়েছে। ওই সংস্থার অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করলে ,সমর বাবুকে পাওয়া যায়। তবে সমর বাবুরা তাদের সংস্থার পক্ষে, জমির আজ অবধি দেওয়া,খাজনার রশিদ,পৌরসভার খাজনার রশিদ,জমির সরিকি ভাগের রেজিস্ট্রির কাগজ,জমির পরচা সবই দেখান।ওনাদের দাবী ওই জমিটির কোনো ভাবে মালিকানা দাবী করতে পারেন না সুবীর বাবুরা।ওই সংস্থার দাবী,সংস্থাকে জমিটি দান করেছে রায় পরিবারের অন্যান্য সরিকেরা।সেই দলিল ও দেখান। এই বিষয়টি নিয়ে রায় পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন।তবে আশ্চর্যের বিষয় হল,' বাংলার বন্ধু ' সংস্থা ৭ নম্বর ঠিকানার জমি দাবী করছেন।কিন্তু মাঠটি হল ৯ নম্বর ঠিকানায়।এবং যে দাগ নম্বর দিয়ে আদালতের আদেশ নিয়েছেন।তার সঙ্গে ওই মাঠের কোনো সম্পর্ক নেই। এই বিষয় গুলি সামনে আসা পর্যন্তও ওই সংস্থা ,ওই মাঠটি দাবী করছে।আবার যার সঙ্গে মালিকানার কোনো সম্পর্ক নেই,ওই মাঠের ফুটবল প্রশিক্ষক ,তপন ঘোষকে পার্টি করে মামলা করেছে সমর বাবুরা। ওই সংস্থার দাবী ,তারা ওই মাঠে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় বা হকারদের বাজার বানিয়ে দেবেন। সমর বাবুর কথা শুনে ,বেশ ভালই লাগলো। তাই বলে খেলার মাঠ দখল করে, প্রমোটিং? তখনই মনে হল জমি রাক্ষসদের গল্প রয়েছে।আমাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে বেশ কয়েকবার রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম নেন সমর বাবু।বলেন ওনাকে আগে বলা হয়েছিল।ওনাদের সভাপতি অনেক বার, মেয়র থাকা কালীন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে বলেছিলেন ওই মাঠ দখল করে হাসপাতাল বা বহুতল বাজার বানানোর জন্য। এই সংস্থার পেছনে,কোন প্রভাব শালী রয়েছেন! খোঁজ নিয়ে দেখা যায়,সুজয় ভদ্র নামে ওই এলাকার এক প্রভাব শালী তৃণমূল নেতা ওই কাজের পেছনে রয়েছে।যার অঙ্গুলি হেলনে এই অসম্ভব কাজ সম্ভব হতে চলেছে।যার কারণে সেই দিন কোনো পুলিশ রায় পরিবারের আবেদনে দিনের বেলা আসেনি। এই সুজয় ভদ্র ওই ' বাংলার বন্ধু ' র সভাপতি। প্রত্যেকটি নাগরিকের প্রশ্ন,ওই মাঠটি থাকবে তো?
SHANKU SANTRA
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।