কলকাতা: ৩৭ ঘণ্টা টানা তল্লাশি। সঙ্গে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ। অবশেষে, ভোররাতে গ্রেফতারি। প্রকাশ্যে এল নিয়োগ দুর্নীতি চক্রের আরেক চরিত্র অয়ন শীল। ইডি- সূত্রের খবর, এই অয়ন শীলের বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছে ২০১২ সালের টেট-এর নথিও। এর আগে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে শুধুমাত্র ২০১৪ সালের টেট-এর নথি উদ্ধার করেছিলেন ইডি-র গোয়োন্দারা। কিন্তু এখানে শুধুমাত্র ২০১৪ সালের নয়, নথি মিলেছে ২০১২-র টেট-এরও। তা থেকেই সনদেহ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। তবে কি এই নিয়োগ দুর্নীতির শিকড় অতীতের আরও গভীরে লুকিয়ে?
এখনও পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে ২০ জন এজেন্টের নাম পেয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। এই এজেন্টরাই চাকরির বিনিময়ে টাকা তোলা, চাকরিপ্রার্থী জোগাড় করার কাজ করত বলে দাবি গোয়েন্দাদের। Ed সূত্রে খবর, এই এজেন্টরা মাঝে মধ্যেই যেতেন অয়ন শীলের অফিসে। সেখানেই নাকি হতো টাকার লেনদেন। এখনও পর্যন্ত, ৫০ - ৬০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে দাবি করেছে ইডি। সেই লেনদেনের ডিজিটাল ডকুমেন্টস ও কাগজে লেখা নথিও নাকি পেয়েছেন ইডি-র তদন্তকারীরা। অয়নের কম্পিউটার অফিসের আড়ালে নিয়োগ দুর্নীতির কারখানা চলতো রমরমিয়ে। দাবি ইডির।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতের আগে 'দুর্বল' জেলায় নজর! সংগঠন চাঙ্গা করতে জেলায় জেলায় অভিষেক
কম্পিউটারের অফিসে আড়ালে নাকি নিয়োগ দুর্নীতির কারখানা খুলে বসেছিল অয়ন শীল! আশপাশের লোকজনেদের সন্দেহ এড়াতে অয়নের সল্টলেকের এই ডেরাকে, 'কম্পিউটার-এর অফিস' বলে চালাত সে। আর 'কম্পিউটারের অফিসে' আড়ালে চলত নিয়োগ দুর্নীতির ব্যবসা! ধৃত অয়নকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই তথ্য পেয়েছে ইডি।
এছাড়াও, অয়ন শীলের প্রতিবেশীর বিস্ফোরক দাবি, সন্ধের পরেই অয়নের অফিসে বেশি আসতো ছেলেমেয়েরা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁরা আসত মোটরবাইকে। এলাকার মানুষ জানতেন, ওইখানে কম্পিউটার শেখান অয়ন। অয়নও তেমনটাই জানিয়েছিলেন প্রতিবেশীদের। কিন্তু, এতদিন ধরে যে এই জায়গাটা দুর্নীতির আখড়া হয়ে উঠেছে, তা ঘুণাক্ষরেও কেউ টের পাননি।
আরও পড়ুন: সাতসকালে এ কী কাণ্ড! রেল স্টেশনের টিভিতে অ্যাডাল্ট ফিল্ম! টানা ৩ মিনিট চলল 'নীল ছবি'
৩৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর ইডির হাতে ধৃত অয়ন শীলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছে ইডি। সূত্রের খবর, অয়ন শীলের সল্টলেকের বাড়ি কাম অফিস থেকে যে omr শিট পাওয়া গিয়েছে সেগুলির মধ্যে অরিজিনাল অর্থাৎ, আসল omr শিট-ও রয়েছে। এছাড়া, রয়েছে omr-এর ফটোকপি। এই omr শিটগুলির মধ্যে বেশিরভাগই পুরসভা চাকরির নিয়োগের। অয়ন শীলকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অয়ন জানিয়েছেন, পুরসভা নিয়োগের জন্য omr-এর টেন্ডার পেত অয়নের সংস্থা "Abs Infozon private limited"। সেই কারণেই, অফিসে এত ওএমআর শিট রাখা।
এর থেকেই গোয়েন্দারা আন্দাজ করছেন, এই নিয়োগ দুর্নীতি চক্রে আরও অনেক চরিত্রই সুতোয় সুতোয় জড়িয়ে রয়েছেন। তাছাড়া, কোন পথে ওমআরের টেন্ডার পেতেন অয়ন শীল, তা-ও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। এই অয়ন, শান্তনু ঘনিষ্ঠ হওয়া ছাড়াও আরও অনেক প্রভাবশালীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে মনে করছেন ইডির গোয়েন্দারা।
ARPITA HAZRA
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।