স্বপ্নভঙ্গ দম্পত্তির, লক্ষ লক্ষ টাকা চুক্তি করেও ভ্রুণ নষ্ট করল ‘সারোগেট’ মা !

Last Updated:

জুলাই মাসে সেই মহিলার গর্ভে ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা হয়। কিন্তু ৬ মাস পরে উধাও হয়ে যান সেই মহিলা।

#কলকাতা: আইটি সেক্টরে উচ্চপদস্থ স্বামী-স্ত্রী। দু’জনেই সারাদিন কাজে ব্যস্ত। তার মাঝেই স্বপ্ন দেখেছিলেন বাবা-মা হওয়ার। কিন্তু শারীরিক কারণে সেই স্বপ্ন অচিরেই ভেঙে যায়। বহু ডাক্তার দেখিয়েও কোনও ফল মেলে না। অবশেষে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে ইনভিটরো ফারটিলাইজেশন পদ্ধতি গ্ৰহণ করেন তাঁরা। আর সেখানেই যত বিপত্তি।
৮ লক্ষ টাকার চুক্তি হয়। আগাম প্রায় ৪ লক্ষ টাকা দিয়ে দেন এক মহিলাকে। জুলাই মাসে সেই মহিলার গর্ভে ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা হয়। কিন্তু ৬ মাস পরে উধাও হয়ে যান সেই মহিলা। যাবতীয় স্বপ্ন নষ্ট হয় দে দম্পতির। কীভাবে ঘটল এমন ঘটনা ? সারোগেট মাদার ধরা পড়লেও তিনি জানান, মিসক্যারেজ হয়েছে। তিনি কি সত্যি বলছেন ? আর সেখানেই কলকাতা পুলিশের নিউ আলিপুর থানার দক্ষতায় প্রকাশ্যে এল সারোগেট মাদার নিয়ে বেনজির এক ঘটনা।
advertisement
advertisement
দে দম্পতির অভিযোগ পেয়ে পুলিশ জানতে পারে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারোগেট মাদার সারোগেট হাউসে ঠিকঠাক ছিলেন। দক্ষিণ ২৪ পরগণার প্রত্যন্ত গ্ৰামের বাসিন্দা সেই মায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। অবশেষে ২০ ফেব্রুয়ারি সেই সারোগেট মা ধরা পরেন এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বর থেকে। দীর্ঘ পুলিশি জেরায় তিনি জানান, সারোগেট হাউসে একা থাকার সময় তাঁর মিসক্যারেজ হয়। তিনি ভ্রূণ ফেলে দেন নদীতে।
advertisement
পুলিশ একথা বিশ্বাস করে না। কারণ ৬ মাস বয়সের জীবিত বা মৃত ভ্রূণ প্রসব করা বা করানো কারো একার পক্ষে সম্ভব নয়। যদিও সারোগেট মা তাঁর কথায় অনড়। পুলিশ বেশ কয়েকটি টিম তৈরি করে তদন্ত চালাতে থাকে। দেখা যায় ওই সারোগেট মাদার দ্বিতীয় একটি ফোন ব্যবহার করতেন ওই সময়। আর সেই ফোনের টাওয়ার লোকেশন ছিল তিয়ানি বলে দক্ষিণ ২৪ পরগণার এক প্রত্যন্ত গ্ৰামের। শুধু ১৪-১৭ মন্দিরবাজার ও ১৭-১৯ রাতে টাওয়ার লোকেশন ছিল ডায়মন্ডহারবার। এই দুই এলাকার সব হাসপাতাল ও নার্সিং হোমে তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু ওই নামে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাতেও হাল ছাড়েননি নিউ আলিপুর থানার ওসি অমিত মুখোপাধ্যায়। এবার দেখা যায় ওই সারোগেট মাদারের এক প্রেমিক রয়েছে।
advertisement
তাঁর মোবাইল থেকে খোঁজ মেলে সারোগেট মাদারের মায়ের। অদ্ভূত ভাবে দেখা যায় মা ও সারোগেট মাদারের টাওয়ার লোকেশন প্রায় এক। এমনকী, ১৭-১৯ ডিসেম্বর দু’জনের টাওয়ার লোকেশন ডায়মন্ডহারবার। এবার ফের সব হাসপাতাল ও নার্সিং হোমে খোঁজ শুরু হয়। দেখা যায় ওই মা এক গর্ভবতী মহিলাকে নিয়ে ডায়মন্ড হারবারের সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। সেখানে দু’দিন ভর্তি থাকার পর এক মৃত শিশুর জন্ম দেন ওই মহিলা। সারোগেট মাদার নিজের নাম বদলে হাসপাতালে ভর্তি হলেও তাঁর মায়ের নাম বদলাননি।
advertisement
চিকিৎসক ও নার্সরাও ওই সারোগেট মাদারকে শনাক্ত করেন। যাবতীয় রহস্যের কিনারা হল। কিন্তু কেন ওই সারোগেট মাদার এমনটা করলেন? তিনি তো চুক্তি অনুসারে ৮ লক্ষ টাকা পেতেন। অত্যন্ত গরীব ওই মহিলার কাছে এই টাকা অনেক। তাহলে? তখনই প্রকাশ্যে আসে, সমাজের কাহিনি। এখনও আমাদের সমাজের ধ্যান ধারনার বিষয়। আদতে ওই সারোগেট মাদার একজন বিধবা। টাকার লোভে প্রথমে রাজি হলেও পরে শারীরিক পরিবর্তনে তাঁর লোকলজ্জার ভয় তৈরি হয়। তিনি মানসিক অবসাদের শিকার হন। আর সেই কারণেই হয়তো তিনি গর্ভস্থ সন্তানকে নষ্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
advertisement
আর এখানেই পুলিশ পড়েছে বিপাকে। বর্তমান আইন অনুসারে ওই সারোগেট মাদারের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র প্রতারণার মামলাই করা সম্ভব। ২০১৬ সালে সারোগেসি অ্যাক্ট তৈরি হলেও তা পাশ হয়নি। যেখানে কিডনি দানের মতোই সারোগেট মাদার হতে হবে রক্তের সম্পর্কের। যতদিন না হচ্ছে, শুধু টাকার বিনিময়ে এমন উদ্যোগে কারো স্বপ্নের অকালমৃত্যু হবে অথবা, সামাজিক ও লোকলজ্জার ভয়ে 'মা' হবেন প্রতারক ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
স্বপ্নভঙ্গ দম্পত্তির, লক্ষ লক্ষ টাকা চুক্তি করেও ভ্রুণ নষ্ট করল ‘সারোগেট’ মা !
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement