নিম্নমানের সুতো দিয়ে ফের অস্ত্রোপচার, আরও এক সদ্যোজাতের মৃত্যুর অভিযোগ NRS-এ
- Published by:Pooja Basu
Last Updated:
বহু আশা নিয়ে তারা এই শহর কলকাতায় এসেছিলেন। কোথায় স্বপ্ন পূরণ হলো? উল্টে সব হারিয়ে তাদেরকে ফিরে যেতে হবে গ্রামের বাড়িতে। কে নেবে তার দায়?
#কলকাতা: ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই আবারও এক সদ্যোজাতের মৃত্যু। আবারও কাঠগড়ায় শিয়ালদহ এন আর এস হাসপাতাল। এবার মালদহের গাজলের বাসিন্দা শিল্পী বিবির ১৭ দিনের কন্যা সন্তানের। ১২ ফেব্রুয়ারি মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন শিল্পী দেবী। সঠিকভাবে মলদ্বার তৈরি না হওয়ায় সদ্যোজাতকে রেফার করে দেওয়া হয় শিয়ালদহ এন আর এস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ১৬ তারিখ গভীর রাতে শিল্পী তার সন্তানকে নিয়ে এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি হয়। ১৭ তারিখে প্রথম অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু সেই একই বিপত্তি।অস্ত্রোপচারের সেলাই ছেড়ে যাওয়ায় ফের তাঁকে ২৪ তারিখ অস্ত্রোপচার করতে হয়। পরপর দুটো অস্ত্রোপচারের ধকল সামলাতে পারল না এই ছোট্ট শিশুটি। শনিবার সন্ধ্যায় মারা যায় ১৭ দিনের এই সদ্যোজাত। বিক্ষোভ নয়, প্রতিবাদ নয়, কান্নায় ভেঙে পড়ল বাবা-মা। তাদের একটাই প্রশ্ন, বহু আশা নিয়ে তারা এই শহর কলকাতায় এসেছিলেন। কোথায় স্বপ্ন পূরণ হলো? উল্টে সব হারিয়ে তাদেরকে ফিরে যেতে হবে গ্রামের বাড়িতে। কে নেবে তার দায়?
প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনা বাদুড়িয়ার বাসিন্দা লিভিয়া পারভীনের ১০ দিনের পুত্রসন্তানেরও মৃত্যু হয়। এক্ষেত্রেও অভিযোগ ছিল,নিম্নমানের সুতা দিয়ে মলদ্বারের অস্ত্রোপচার করার জন্য সুতো ছিঁড়ে যাওয়ায় তিন, তিন বার অস্ত্রোপচার করতে হয়। আর পরিণতি হয় মৃত্যু।দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় হাসপাতালের তরফ থেকে। পাশাপাশি রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগও তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।
advertisement
সুতো কাণ্ডের তদন্তে দুই তদন্ত। কমিটির একটি ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের। অপরটি এনআরএস এর আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি।দুই তদন্ত কমিটির নিশানায় এই এই মুহূর্তে হাসপাতালে সুতো সরবরাহের দায়িত্বে থাকা পৃথক তিন সংস্থা। এনআরএস হাসপাতালে তিনটি কম্পানি সুতোর সরবরাহ করতো। শুচার ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, লোটাস সার্জিক্যাল প্রাইভেট লিমিটেড, মেরিল সার্জিকাল প্রাইভেট লিমিটেড। লোটাস এবং মেরিল দুটোর অফিসই রাজ্যের বাইরে,মুম্বাই এবং বেঙ্গালুরুতে। সুচার এর অফিস টালিগঞ্জ প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড এ নথিভূক্ত হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী। কলকাতার সংস্থাটির অফিসে এসে দেখা গেল সেই অফিস ছয় মাস আগেই উঠে গেছে। অন্যত্র চলে গিয়েছে। কলকাতা থেকে তারা ব্যবসা গুটিয়ে অন্যত্র চলে গেলেও আজও এনআরএস হাসপাতালের রেকর্ড খাতাতে তাদের প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের ঠিকানাটিই রেজিস্টার্ড অফিস হিসেবে নথিভুক্ত রয়ে গেছে।
advertisement
advertisement
শুক্রবারই এই তিন সংস্থার সরবরাহ করা সুতোর ৩২ টি নমুনা তদন্তের জন্য সংগ্রহ করে ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ।রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল এর তদন্ত কমিটিও সুতোর নমুনা পরীক্ষার পাশাপাশি, ৩ সংস্থা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে সূত্রের খবর।তবে তার মাঝখানে নতুন করে আরো এক সদ্যোজাত এর মৃত্যু যে প্রশ্নটা তুলে দিয়ে গেল,তার উত্তর হয়ত মিলবে না।কমিটির পর কমিটি গড়ে আর কি হবে,যারা যাওয়ার তারা তো চলেই যাচ্ছে,প্রশ্ন এদিন সদ্য সন্তানহারা মা শিল্পী বিবির।আর এক সন্তানহারা বাবা মুর্তাজা হোসেনও কাঁদতে কাঁদতেই বলেন,আমার সন্তান ত চলেই গাছে,কিন্তু আরো এক পরিবারের ও কোল খালি হতে গেল,যারা দায়ী,তাদের জন্য কঠোর শাস্তি চাই।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
March 01, 2020 9:33 AM IST