ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুকন্যাকে ফেরাল NRS! ৯ দিন ধরে খোলা আকাশের নীচে পড়ে
- Published by:Simli Raha
Last Updated:
ABHIJIT CHANDA
#কলকাতা: আবারও কাঠগড়ায় শিয়ালদহের এনআরএস হাসপাতাল।দুরারোগ্য ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত আড়াই বছরের শিশুকে দিনের পর দিন ধরে ঘুরিয়ে ভর্তি না নেওয়ার অভিযোগ। নদিয়ার পায়রাডাঙ্গার বুনিয়াদপুর গ্রামে বাড়ি সনাতন মন্ডলের। অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন সনাতন। তাঁর স্ত্রী সুচিত্রা মন্ডল গৃহবধূ।
হতদরিদ্র পরিবার। তাঁদের একমাত্র কন্যা সন্তান ঐত্রী মন্ডল ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। মাস দুয়েক আগে হঠাৎই নাক দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে তার ৷ সঙ্গে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর। কল্যাণী জহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানান, ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ছোট্ট ঐত্রী। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে গোটা মণ্ডল পরিবারের। কী করবে, কোথায় যাবে, কিছু ভেবে কূলকিনারা পায় না তাঁরা।
advertisement
advertisement
কল্যাণী জেএনএম হাসপাতাল থেকে ছোট্ট ঐত্রীকে রেফার করে দেওয়া হয় শিয়ালদহ এনআরএস হাসপাতালে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ঐত্রীকে ৷ কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, সেদিন থেকে ঐত্রীকে ভর্তি নেয়নি হাসপাতাল। শেষমেষ, প্রায় হাতে-পায়ে ধরে ভর্তি করলেও ২২ তারিখে এক প্রকার জোর করে বন্ড সই করে ছেড়ে দেওয়া হয় ঐত্রীকে। এরপর থেকে চড়কিপাক শুরু মণ্ডল পরিবারের। সনাতন, সুচিত্রা, ছোট্ট আড়াই বছরের ঐত্রীর ঠিকানা হয় হাসপাতালের শিশু বিভাগের উল্টোদিকের মাঠ। খোলা আকাশের নিচে দিন-রাত পড়ে থাকতে হয় তাঁদের। প্রতিদিন নিয়ম করে একবার শিশু বিভাগ, সেখান থেকে ক্যানসার বিভাগ, সেখান থেকে আবার হেমাটোলজি বিভাগ। কিন্তু প্রত্যেক জায়গা থেকেই শুনতে হয়েছে শুধু না। প্রত্যেকটা বিভাগ থেকেই শুধু বলা হয় যে কোথাও বেড নেই। এদিকে ছোট্ট ঐত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। প্রতিদিনই কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আর তার সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্তের ছোপ ছোপ দাগ। অবিলম্বে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন। কিন্তু ভর্তি না নিলে রক্ত কোথা থেকে দেবে?
advertisement
হাউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতে সনাতন মন্ডলের আক্ষেপ, আমার একমাত্র মেয়ে। শুধু গরীব বলে কি আমরা বাঁচাতে পারবো না? আমাদের তো ক্ষমতা নেই নার্সিংহোমে ভর্তি করানোর। প্রতিদিন সরকারি হাসপাতালের এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে ঘুরপাক খাচ্ছি, কিন্তু ভর্তি নেওয়া তো দূরে থাক, অনেক সময়ই মুখ ঝামটা শুনতে হচ্ছে। কেউ কি দাঁড়াবে না আমাদের পাশে ? ছোট্ট ঐত্রীকে বুকে জড়িয়ে চোখের জল বাঁধ মানছে না মা’র। সুচিত্রা মন্ডল বলছেন, মেয়েটা যে চোখের সামনে নেতিয়ে পড়ছে, চিকিৎসা শুরু না হলে তো চোখের সামনেই মারা যাবে।
advertisement
NRS হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, হেমাটোলজি বিভাগ এবং শিশু ক্যান্সার বিভাগ দু'জায়গাতেই কোনও বেড খালি নেই। আমরা নিরুপায়। বেড খালি হলেই যত দ্রুত সম্ভব এই শিশুটিকে আমরা ভর্তি করব। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এখানেই,মরণাপন্ন এই শিশুটিকে অন্য কোনও বিভাগে ভর্তি করিয়ে এর কি চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব নয়? নাকি শুধুমাত্র বেড খালি না থাকার অজুহাতে দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত এই শিশুটিকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে দিতে সাহায্য করবে গোটা এই সিস্টেম!
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
March 02, 2020 2:31 PM IST