Manoranjan Byapari: 'অপরাধ ক্ষমা করবেন...!' 'ত্রিপল-কাপড়' নিয়ে এবার মুখ খুললেন মনোরঞ্জন! যা বললেন বিধায়ক
- Published by:Sanjukta Sarkar
- news18 bangla
Last Updated:
Manoranjan Byapari: 'বিধায়কসুলভ নয়' কিন্তু 'কাজটা তীব্র জরুরি...' নিজেই এবার 'কাজে' নামলেন মনোরঞ্জন ব্যাপারি!
#কলকাতা : মনোরঞ্জন ব্যাপারি। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রাজ্য রাজনীতি, ইতিমধ্যেই স্পষ্টবক্তা হিসেবে বেশ জোরালো জায়গা করে নিয়েছেন এই প্রবীণ তৃণমূল বিধায়ক। একেবারে সাধারণ জীবন যাত্রার জন্যে পরিচিত তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারি। তবে, মাঝেমধ্যেই তাঁর ফেসবুক পোস্ট বিতর্কের ঝড় তোলে। কখনও সখনও সেই পোস্টগুলি তাঁর দল তৃণমূলের জন্যও অস্বস্তির হয়ে দাঁড়ায়। আবার বিরোধীদের বিরুদ্ধেও সরব হন মনোরঞ্জন। কিছুদিন আগেই বিধানসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সরকারের পুরস্কারের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁকে বিজেপি-তে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক। এবার সেই মনোরঞ্জন ব্যাপারিই মুখ খুললেন বিধায়ক কোটার ত্রিপল ও কাপড় বণ্টনের অব্যবস্থা নিয়ে।
ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় অভিযোগ উঠেছে সরকারি খাতের ত্রিপল ও অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী থেকে শুরু করে পুজোর আগে সরকারি উদ্যোগে জামা কাপড় বণ্টনের অব্যবস্থা নিয়ে। অভিযোগের তির অনেক ক্ষেত্রেই স্থানীয় নেতা কর্মীদের দিকে। সেই কথা কার্যত উল্লেখ করেই আজ ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারি।
advertisement
advertisement
তিনি লিখেছেন, 'পশ্চিমবঙ্গের মা মাটি মানুষের সরকার গত বছর দুর্গা পূজার সময়ে দরিদ্র দুঃস্থ মানুষদের জন্য কিছু শাড়ি কাপড় দিয়েছিল। বর্ষার সময়ে দিয়েছিল বিতরনের জন্য কিছু ত্রিপল। আমি সে গুলো ১৭টা পঞ্চায়েতে ভাগ করে দিয়েছিলাম বিতরনের জন্য। হয়ত তারা সে গুলো নিয়মমত বিতরন করে থাকবেন। তবে আমার যেটা আক্ষেপ ছিল - কোন মানুষ আমাকে এসে বলেনি যে হ্যাঁ আমি বিধায়ক কোটার কাপড় ত্রিপল পেয়েছি- আপনাকে ধন্যবাদ। যা শুনলে আমি আনন্দ পেতাম। বরং অনেকে উল্টে দোষারোপ করেছে , অমুকের পাকা দালান , সে তমুক নেতার আত্মীয় বলে সব পেয়েছে । আমি কিছু পাইনি।'
advertisement

মনোরঞ্জন লেখেন, এই পরিস্থিতিতে তিনি এবার আমি আর কোনও নেতার কাছে কোনও জিনিস দেননি। সব জমা করে রেখেছিলেন বিধায়ক কার্যালয়ে। নেতাগনকে বলেছিলেন- 'যার ত্রিপল কাপড় দরকার বলে আপনার মনে হবে একটা স্লিপ লিখে আমার কাছে পাঠিয়ে দেবেন । আমি নিজের হাতে তাকে সে সব দেব। তবে - কেউ গলায় সোনার চেন হাতে সোনার আংটি পড়ে এসে বলবে আমার একটা ত্রিপল চাই ! সে তিনি যেই হোন আমি কিন্ত তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেব।'
advertisement
বিধায়ক এরপরেই জানান, কিন্তু এইভাবে স্লিপ লিখে দিতে অনেক নেতা সময় পাননি- মনের সায় পাননি। তাই তাঁর কাছে প্রচুর সরকারি মাল জমা হয়ে রয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবার আবার পুজো আসছে। গোডাউন খালি করতে হবে। বাধ্য হয়ে তিনি এখন গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রকৃত অভাবী দুঃস্থ মানুষ খুঁজে খুঁজে তাঁদের হাতে কাপড়-ত্রিপল পৌঁছে দেবার কাজ করছেন। সবশেষে তৃণমূল বিধায়ক যোগ করেন, 'জানি, আমার অনেক কাজ ঠিক বিধায়কের উপযুক্ত কাজ নয়। তা হোক, তবু আমি এটাই করব। কারণ কাজটা তীব্র জরুরি।'
advertisement
রিকশা এবার বিধানসভায়। বলাগড়ে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনোরঞ্জন ব্যাপারির নাম ঘোষণার পর থেকেই এই প্রচার শুরু হয়েছিল হুগলিতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তখন বলেছিলেন, ''মাটির মানুষ মনোরঞ্জন ব্যাপারি। রান্না করেন, রিকশা টানেন, সাহিত্য চর্চাও করেন।''
advertisement
উদ্বাস্তু হিসেবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে এদেশে চলে এসেছিলেন মনোরঞ্জন ব্যাপারির পরিবার। তাঁর পর থেকেই জীবন যুদ্ধে দলিত এই লেখক। কখনও চা বেচেছেন, কখনও ডোমের কাজ করেছেন, কখনও বা স্কুলে রাধুঁনির কাজও করেছেন, আর রিকশাও টেনেছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারি। তাঁর সাদামাটা জীবনযাপনই তাঁকে আলাদা করে দিয়েছে। এহেন মানুষের ওপর ভর করেই কঠিন বলাগড় কেন্দ্র থেকেও জয় আসে তৃণমূলের ঝুলিতে। আর বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই মনোরঞ্জন ছুটে বেড়াচ্ছেন গোটা বিধানসভা এলাকা। কিনেছেন একটি টোটো। সেটিই বিধায়কের বাহন। তাঁর এই মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার, রাখঢাকহীন কথাবার্তায় মন কেড়েছেন এলাকার মানুষের। এবার সেই মনোরঞ্জনই পরোক্ষে মুখ খুললেন দলীয় নেতাদের একাংশের স্বজনপোষণ নিয়ে। বিষয়টি শাসকদলের জন্য অস্বস্তি খানিকটা বাইরে দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
August 22, 2022 1:33 PM IST