মৃত মায়ের দেহ প্রায় ৩ বছর ফ্রিজারে ঢুকিয়ে রেখেছে ছেলে ! রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডকেও ছাপিয়ে গেল এই ঘটনা
Last Updated:
মৃত মায়ের দেহ দু’বছর ধরে আগলে রেখেছেন ছেলে
#কলকাতা: বছর তিনেক আগে রবিনসন স্ট্রিটে দিদির দেহ মাস ছয়েক ধরে আগলে রেখেছিলেন পার্থ দে। এবারের ঘটনা আরও ভয়ানক। মৃত মায়ের দেহ প্রায় ৩ বছর ধরে আগলে রেখেছে ছেলে। বেহালার ২৫ নম্বর জেমস লং সরণির ঘটনা। নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যায় নিউজ ১৮ বাংলা। তারপরই সামনে আসে গোটা ঘটনা।
এফসিআইয়ের প্রাক্তন কর্মী বীণা মজুমদার প্রায় তিন বছর আগে বেহালার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। তাঁর স্বামী গোপালচন্দ্র মজুমদারও ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিক ছিলেন। স্ত্রী-র মৃত্যুর পর আর সৎকার করেননি। ৯০ বছর বয়সী গোপালচন্দ্রবাবুর কথাতেও অসংলগ্নতা ধরা পড়ে। তাঁর বিশ্বাস ছিল, ছেলেই স্ত্রীকে বাঁচাবেন। এরপরই শুভব্রত বেরিয়ে এসে আমাদের প্রতিনিধিকে আটকান। ঘরে ঢুকতে বাধা দেন। বাধা পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বেহালা থানার পুলিশকে খবর দেন নিউজ ১৮ বাংলার প্রতিনিধি। তারপরই ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। আসেন ডিসি সাউথ ওয়েস্ট ডিভিশন। কিন্তু, পুলিশকেও প্রথমে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন বীণাদেবীর ছেলে। কিছু না পেয়ে ফিরে যায় পুলিশ।
advertisement
advertisement
কিছুক্ষণ পর আবার ঘরে ঢোকে পুলিশ। এবার খোঁজ মেলে বীণা মজুমদারের দেহ। তালাবন্ধ একতলার একটি ঘরের ফ্রিজারের মধ্যে রাখা ছিল তাঁর দেহ। পেটের নাড়িভুঁড়ি বের করে রাসায়নিক মিশিয়ে দেহ সংরক্ষণ করে রাখা হয়। জানা গিয়েছে, বেকার শুভব্রত দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মেডিক্যাল জার্নাল নিয়ে পড়াশোনা করতেন। কীভাবে দেহ সংরক্ষণ করতে হবে সে বিষয়েও চর্চা করতেন তিনি। শুভব্রতকে থানায় নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। এদিকে, শুভব্রতর আরও একটি কীর্তি সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, দু’বছর ধরে লাইফ সার্টিফিকেট দেখিয়ে মায়ের পেনশনের টাকা তুলত ছেলে।
advertisement
এই ঘটনায় হার মেনে যাবে রবিনসন স্ট্রিটও। রবিনসন স্ট্রিটের পার্থ দেও হয়তো শিউরে উঠতেন এই দৃশ্য দেখলে। প্রায় তিন বছর আগে মৃত মায়ের দেহ অবিকৃতভাবে বিশাল ফ্রিজারের মধ্যে বিভিন্ন রাসায়নিকের সাহায্যে রেখে দেওয়া ছিল। বেহালার ২৫ নম্বর জেমস লং সরণির ঘটনা। তারাতলার খুব কাছেই এই ঠিকানা। প্রশস্ত রাস্তার দোতলা বাড়ি। নিউজ ১৮ বাংলার কাছে খবর ছিল একতলায় দেহ রাখা আছে। দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পর এক বৃদ্ধ নেমে আসেন। যিনি এই বাড়ির কর্তা গোপালচন্দ্র মজুমদার । তিনি ফুড কর্পোরেশন ইন্ডিয়ার অফিসার ছিলেন। তাঁর স্ত্রী বীণা মজুমদারও ছিলেন এক অফিসে। তাঁদের একমাত্র সন্তান শুভব্রত।
advertisement
বাবাকে চেপে ধরলে তিনি স্বীকার করেন দু’বছরেরও বেশি সময় আগে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বেহালার বেসরকারি হাসপাতালেই মৃত্যু হয়। তারপর থেকে মৃত স্ত্রীকে আবার বাঁচিয়ে তুলবেন ছেলে, এমনই বিশ্বাস ছিল গোপালচন্দ্রবাবুর । যদিও অসক্ত বৃদ্ধ মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। সংবাদমাধ্যমকে দেখে নানারকম কথা বলতে থাকেন। প্রথমে তিনি বলেন, ছেলে নেই দিল্লিতে আছে। বেহালা থানায় খবর দেওয়ার পর পুলিশ আসে ৷ পুলিশ এলে শুভ দরজা খোলে না। অনেক পরে খোলে। সেসময় দুর্বোধ্য ভাষায় কথা বলতে থাকে। একতলার তালাবন্ধ ঘর খুলতে রাজি হয় না সে। পুলিশ চাপ দিয়ে খোলে। দুটি আলাদা ঘরে দুটি ফ্রিজার। তার একটিতে ছিল মায়ের অবিকৃত দেহ। বুক চেড়া। নাড়িভুঁড়ি বের করে সেলাই করে রাসায়নিক দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখা ছিল দেহ। শুভকে এরপরই আটক করে পুলিশ ৷
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
April 05, 2018 9:04 AM IST