#কলকাতা: গত বছর ২ মে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। তার বর্ষপূর্তিতে বিরোধীদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বিজেপির তীব্র সমালোচনা শোনা গেল তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের গলায়। তবে, তৃণমূল নেত্রীর ট্যুইটে শুধুই মা-মাটি-মানুষকে ধন্যবাদ বার্তা। তিনি লিখেছেন, ''গতবছর এই দিনে দেশের কর্তাব্যক্তিদের আস্ফালনের বিরুদ্ধে বাংলার মা- মাটি- মানুষ তাঁদের অদম্য সাহসের পরিচয় রেখেছিলেন। সেজন্য আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। মা- মাটি-মানুষ সেদিন সারা পৃথিবীকে দেখিয়েছিলেন যে, গণতন্ত্রে মানুষের শক্তির চেয়ে বড় কোন শক্তি নেই। প্রকৃত জাতি-নির্মাণে আমাদের প্রয়াস জারি রাখতে হবে, কারণ অনেক যুদ্ধ লড়তে ও জিততে হবে।''
গতবছর এই দিনে দেশের কর্তাব্যক্তিদের আস্ফালনের বিরুদ্ধে বাংলার মা- মাটি- মানুষ তাঁদের অদম্য সাহসের পরিচয় রেখেছিলেন। সেজন্য আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।( ১/৩)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 2, 2022
এখানেই শেষ নয়, তৃণমূল নেত্রীর সংযোজন, ''আজকের দিনটি আমি মা-মাটি-মানুষের কাছে উৎসর্গ করলাম এবং সকলের কাছে আমার আহ্বান, আজ থেকে এই দিনটি 'মা-মাটি-মানুষ দিবস' বলে অভিহিত হোক। জয় হিন্দ, জয় বাংলা।''
অপরদিকে, তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ''এক, মনে রাখুন, বিজেপির শীর্ষনেতাদের ডেইলি প্যাসেঞ্জারি, সব নখ দাঁত বার করা আক্রমণ, চার আনার বিজেপি কর্মীদের বারো আনা ঔদ্ধত্য, অসভ্যতাকে হারিয়ে জয়। দুই, মনে রাখুন, সিপিএম, কংগ্রেসকে শূন্যে নামিয়ে দিয়ে জয়। তিন, মনে রাখুন, কিছু সুবিধেবাদীর হঠাৎ তৃণমূল ছাড়ার বিশ্বাসঘাতকতা ও হুজুগের বিরুদ্ধে জয়।''
কুণালের সংযোজন, ''চার, মনে রাখুন, দিদির নেতৃত্বে এবং অভিষেকের সেনাপতিত্বে তৃণমূল কর্মীদের জেদের আর আনুগত্যের লড়াইতে জয়। পাঁচ, মনে রাখুন, একদিকে সরকারের কাজ এবং সঙ্গে সাংগঠনিক এক দক্ষ পরিচালনপদ্ধতির মধ্যে দিয়ে জয়। এই বিপুল জয়কে, মানুষের আস্থা ও আমাদের মত সাধারণ সৈনিকদের মানসিক তৃপ্তিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। আত্মসমালোচনার জায়গায় গুরুত্ব দিতে হবে। দল বড়, সরকার বড়, আরও জয়, আরও দায়িত্ব, আরও কাজ, কর্মযজ্ঞ চলছে । ৯৯% কাজ ভালো। ১% ভুল থাকলে ব্যবস্থা হচ্ছে এবং হবে। যে কর্মী, সমর্থক, সংগঠকরা ২০২১-এর চরম ঝুঁকির যুদ্ধে জান কবুল লড়াই দিয়েছেন, তাঁদের সম্মান, মর্যাদা, অধিকারবোধ সত্যিই স্বতন্ত্র। দলে রাজনৈতিক সচেতনতাটাকেই অগ্রাধিকার দিন। দেওয়া হয়। ক্ষমতায় থাকার জন্য মুষ্টিমেয়র মধ্যে যদি ব্যক্তিসমীকরণের প্রশাসনিক লাভক্ষতির হিসেব অগ্রাধিকার পায়, তবে তা বর্জ্যনীয়। আর সতর্ক থাকুন, চারপাশে কারা আসছে, তারা কারা, কী চায়। এই সতর্কতার ছাঁকনি যে কোনও ক্ষমতাসীন দলে জরুরি, তৃণমূলেও জরুরি এবং তৃণমূল নজর রাখছে বলেই বারবার তিনবার মানুষ আশীর্বাদ করছেন।
কুণাল ঘোষ আরও বলছেন, মাথার উপর দিদি, লিডার, দলের প্রাণ, মুখ, শেষ কথা। রয়েছেন তরুণতুর্কী, ক্যাপ্টেন অভিষেক। এবং রয়েছেন নেতা, কর্মী, সমর্থক, দরদীর তৃণমূল পরিবার। বিরোধীরা হাত মিলিয়ে চক্রান্ত চালাচ্ছে। রুখতে হবে। তুলনা করুন আগের সর্বনাশা বাম জমানার সঙ্গে। তুলনা করুন অন্য রাজ্যের সর্বনাশা বিজেপি জমানার সঙ্গে। প্রতিবাদ করুন কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির। উপসংহার একটাই। শীত গ্রীষ্ম বর্ষা, তৃণমূল কংগ্রেস ভরসা।
আরও পড়ুন: ছিঁটকে পড়লেন কেউ, কারও মাথায় চোট! অণ্ডালে ঝড়ের কবলে বিমান, আহত কমপক্ষে ৪০ যাত্রী
বাংলার মানুষ তৃণমূলকে ভালোবাসেন। বিরোধীদের প্রত্যাখ্যান করেন। আমাদের দলের মধ্যে থেকেই কোনো ভুলে ওদের হাত শক্ত হতে দেবেন না। সতর্ক থাকতে হবে সকলে। আরও মনে রাখুন, ফেসবুক, টুইটার একদিন বন্ধ থাকলে বিরোধী দলগুলো উঠে যাবে। ওদের সংগঠন, জনসংযোগ নেই। মিডিয়ার একাংশ আর সোশ্যাল মিডিয়া ভরসা। ওরা গোষ্ঠীবাজিতে দীর্ণ। দেউলিয়া রাজনীতির খাঁচায় আটকে।
আরও পড়ুন: সপ্তাহব্যাপী তাণ্ডবের অবসান! আটক নকশালবাড়ির নয়া ত্রাস, স্বস্তিতে গ্রামবাসীরা
আমাদের দল বড় হচ্ছে, হবে। কিন্তু আমাদের পা পড়ুক এমনভাবে, যে বড় হওয়ার স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার সুফল দল পাবে, কিন্তু মেদজনিত নেতিবাচকতা থেকে সতর্ক থাকতেই হবে। পুরনোরা মানুন, সময়ের সঙ্গে নতুনের পদধ্বনিকে স্বাগত জানাতেই হবে, আমরা ছিলাম বলে আর কেউ আসবে না, তা হয় নাকি? আবার নতুনরা মানুন পুরনোরা ভিত গড়ে না দিলে আজকের মঞ্চটাই থাকত না। যারা দলবদল এবং রিভার্স স্যুইংএর প্লেয়ার, তাঁরাও সবিনয়ে দলত্যাগের দিনটা মনে রেখে আজকের আচরণবিধিতে থাকুন। তৃণমূল দলে এই সমন্বয় আছে এবং থাকবে। মমতাদি অন্তত পাঁচটা প্রজন্ম তৈরি করেছেন, রাজ্য রাজনীতিতে আর কোনও দল বা কোনো নেতা যে কাজটা করেননি। আর এই কারণেই দল থাকবে আরও বহুদিন।''
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Mamata Banerjee, TMC