#কলকাতা: জেলায় জেলায় কমিটি ঘোষনার পর বিক্ষুব্ধদের 'বিদ্রোহ' থামার কোনও লক্ষণই নেই। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিনবঙ্গের সব জেলাই সেই তালিকায় নাম তুলে ফেলেছে। আজ সেই বিদ্রোহীদের তালিকায় যুক্ত হল উত্তর কলকাতাও। উত্তর কলকাতার বিজেপি নেত্রী, প্রাক্তন কাউন্সিলর সুনীতা ঝাওয়ার জেলার-সহ সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দোওয়ার কথা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিলেন। ঝাওয়ারের চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা সভাপতি কল্যাণ চৌবে।
রাজ্যে পালাবদল না হলেও, সংগঠনে পালাবদলের ধাক্কায় বিজেপির টালমাটাল অবস্থা এখনও অব্যাহত। এখনও পর্যন্ত অন্তত ২১ জেলায় এই কোন্দল চলছে। উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, রাঢ়বঙ্গের বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষ্মিনবঙ্গের বনগাঁ ও উত্তর কলকাতার গন্ডগোলের বিষয় সরকারিভাবে মেনে নিয়েছে বিজেপি। যদিও, বেসরকারিভাবে এই সংখ্যাটা অনেক বেশি। বিজেপির একাংশের দাবি, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বিষ্ণুপুর, বোলপুর, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, কাঁথি, তমলুক, কল্যাণী, রানাঘাট, বসিরহাট, হাওড়া গ্রামীন, বারুইপুর, মথুরাপুর, ডায়মন্ডহারবার জেলাতেও গোলমাল চলছে। জেলা কমিটি ঘোষনার পর এ বার মন্ডল কমিটি ঘোষনা হলে এই গন্ডগোল প্রতিটি সাংগঠনিক জেলাতেই আরও বড় চেহারা নেবে বলে আশঙ্কা দলের একাংশের।
আরও পড়ুন: দমদম পোস্ট অফিসের সামনে কী এটা! হাতে তুলে যা করলেন সেলসম্যান যুবক...
যদিও, ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী এই গোলমালকে তেমন একটা আমল দিতে নারাজ। রাজ্যের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, 'কমিটিতে জায়গা না পাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক কর্মীদের এই ক্ষোভ, বিক্ষোভই প্রমান করে রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক পরিসরে বিজেপি এখনও প্রাসঙ্গিক এবং অন্যতম শক্তি। দলের সাংগঠনিক পরিবর্তন হলে কিছু ক্ষোভ, বিক্ষোভ হয়, কিন্তু তা সাময়িক।' তবে, ক্ষমতাসীন রাজ্য বিজেপির নেতৃত্ব মুখে যাই বলুন না কেন, দলের এই কোন্দলে তাঁরাও অস্বস্তিতে। আজ এই অস্বস্তির পারদ আরেকটু চড়েছে রাজ্যের তিন প্রান্তে।
আরও পড়ুন: লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পেতে নিয়ম বদল! আবেদনের নতুন নির্দেশ জানুন...
আলিপুরদুয়ারের এক সংখ্যালঘু নেতা বিজেপিকে নিশানা করে বলেছে, জেলায় সংখ্যালঘু মোর্চার জন্য একজন মুসলিম মুখকেও পেল না জেলা বিজেপি! এর থেকেই স্পষ্ট বিজেপিতে সংখ্যালঘু মুসলিমরা কতটা উপেক্ষিত। ঝাড়গ্রামে কমিটি নিয়ে বিবাদের জেরে পার্টি অফিসে তালা লাগিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। আর, উত্তর কলকাতা জেলা কমিটির সহ সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে জেলা সভাপতির কাছে চিঠি পাঠিয়ে দিলেন দলের ৫ বারের কাউন্সিলর সুনীতা ঝাওয়ার। সেটাই হাতিয়ার করে বিক্ষুব্ধ রীতেশ তেওয়ারি ট্যুইটে লিখেছেন, এর থেকে স্পষ্ট বর্তমান বিজেপিতে আদি বিজেপির কোন জায়গা নেই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ১৯-র পর থেকে রাজ্য বিজেপিতে যে আদি আর নব্য বিজেপির লড়াই শুরু হয়েছে, ২১-র বিপর্যয়ের পর তা আবার মাথাচাড়া দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব উত্তরপ্রদেশ-সহ ৫ রাজ্যের ভোট নিয়ে ব্যস্ত থাকায় বাংলার দিকে নজর দেওয়ার সুযোগই পাচ্ছে না। ফলে, প্রতিদিনই রাজ্যে বিজেপির শক্তিক্ষয় হচ্ছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে, রাজ্যে বিজেপির ভাঙন বড় আকার ধারন করতে পারে।
ARUP DUTTA
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: BJP