Justice Abhijit Ganguly: তৃণমূলের প্রতীক কাড়ার হুঁশিয়ারি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের, পাল্টা 'অরণ্যদেব' কটাক্ষ কুণালের
- Published by:Debamoy Ghosh
- Reported by:ARNAB HAZRA
Last Updated:
একা কুণাল নন, এ দিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷
#কলকাতা: বেআইনি ভাবে নিযুক্তদের চাকরি বাঁচাতে গিয়ে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করেছিল রাজ্য মন্ত্রিসভা৷ অযোগ্যদের চাকরি বাঁচাতে তৈরি করা এই শূন্যপদ তৈরির বিজ্ঞপ্তি বাতিল না করলে প্রয়োজনে গোটা মন্ত্রিসভাকে আদালতে ডেকে পাঠানোর হুঁশিয়ারি দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীক প্রত্যাহার করার জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনকে বলবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিলেন বিচারপতি৷
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের পরেই নাম না করে তাঁকে বেনজির আক্রমণ করলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ৷ শাসক দলের মুখপাত্রের অভিযোগ, বিচারপতির চেয়ারের অপব্যবহার করা হচ্ছে৷ বিচারপতির চেয়ারে বসে অবসরের পর রাজনীতি করার জমি তৈরি করার অভিযোগও তুলেছেন কুণাল ঘোষ৷
অযোগ্যদের চাকরি বাঁচাতে কার নির্দেশে আদালতে আবেদন করা হয়েছিল, তা জানতে এ দিন শিক্ষা সচিব মণীশ জৈনকে কলকাতা হাইকোর্টে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ সেই মতো এ দিন আদালতে হাজির হন শিক্ষা সচিব৷ প্রথমেই শিক্ষা সচিবের উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'আপনি কি জানেন যে কমিশনের আইন অনুযায়ী কোন বেআইনি নিয়োগ করা যায়না?' জবাবে শিক্ষা সচিব বলেন, 'হ্যাঁ৷'
advertisement
advertisement
এর পরেই বিচারপতি জানতে চান, তাহলে কেন অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা হল? জবাবে শিক্ষা সচিব জানান, রাজ্য মন্ত্রিসভাই অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরিতে অনুমোদন দিয়েছিল৷ শিক্ষা সচিব বলেন, 'উপযুক্ত স্তর থেকে নির্দেশ এসেছিল। ব্রাত্য বসুর নির্দেশ এসেছিল। তিনি আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছিল। আমরা আইনজীবী এবং অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে কথা হয়েছিল। আইন দপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়। মুখ্যসচিবকে জানানো হয়। ক্যাবিনেটে নোট পাঠানো হয়। '
advertisement
এ কথা শুনেই আরও ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, 'আমি বিস্মিত যে কিভাবে ক্যাবিনেটে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? যেখানে আইনে এর কোন সংস্থান নেই!' শিক্ষা সচিবের উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, 'আপনার কি মনে হয়না যে ক্যাবিনেট তার এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সংবিধানবিরোধী কাজ করা হয়েছে ? ক্যাবিনেটের সদস্যরা সই করলেন ? কেউ তাদের সতর্ক করলেন না?'
advertisement
এর পরেই হুঁশিয়ারির সুরে বিচারপতি বলেন, 'হয় ক্যাবিনেটকে বলতে হবে যে আমরা অযোগ্যদের পাশে আমরা নেই এবং ১৯ মে-র বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে হবে। নাহলে এমন পদক্ষেপ করব যেটা গোটা দেশে কখনো হয়নি। আমার সন্দেহ আছে যে, হয় গণতন্ত্র সঠিক হাতে নেই আর নাহলে গণতন্ত্র বিকশিত হয়নি। আমি গোটা মন্ত্রিসভাকে পার্টি করে দেব। সবাইকে এসে উত্তর দিতে হবে। শো কজও করতে পারি। বিধানসভার দলনেতা হন মুখ্যমন্ত্রী আর লোকসভায় দলনেতা প্রধানমন্ত্রী। আমি ইলেকশন কমিশনকে বলব তৃণমূল কংগ্রেসের লোগো প্রত্যাহার করার জন্য, দল হিসাবে তাদের মান্যতা প্রত্যাহার করতে বলব নির্বাচন কমিশনকে। সংবিধান নিয়ে যা ইচ্ছা করা যায়না।'
advertisement
ক্ষোভের সঙ্গে বিচারপতি আরও বলেন, 'আমি মুখ্যমন্ত্রীর যন্ত্রণা বুঝতে পারি, কিন্তু কিছু দালাল যারা মুখপাত্র বলে পরিচিত তারা আদালতের নামে যা ইচ্ছা বলছে। বলছে যে নিয়োগ হলেই আদালতে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসছে। আদালত কি এগরোল নাকি যে আসলেই স্থগিতাদেশ পেয়ে যাবে?'
advertisement
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই কড়া মন্তব্যের পরেই পাল্টা সরব হন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ৷ নাম না করেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য এবং পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি৷ কেন বিচারপতি তৃণমূলের প্রতীক কেড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন, তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন কুণাল৷ সরাসরি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম অবশ্য করেননি কুণাল৷
তৃণমূল নেতা বলেন, 'আমাদের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা আছে৷ অনেক বিচারপতিই নীরবে ন্যায় বিচারের কাজ করছেন৷ কিন্তু ইমেজ বিল্ডিং করেন না৷ সরকারের ভুল হলে বলবেন, কোনও প্রভাবশালীর ভুল হলেও অবশ্যই বলবেন৷ কিন্তু অমুককে ডেকে পাঠাবো, তমুককে হাজিরা দিতে বলব, এটা হতে পারে না৷ আমি কারও নাম বলছি না৷ আমি বলছি এজি- অরণ্যদেব গঙ্গোপাধ্যায়৷ বিচারকের চেয়ারের প্রোটেকশন নিয়ে কেউ যদি বলে আমার দল তুলে দেবেন, তাঁকে কি রসগোল্লা খাওয়াবো? পশ্চিমবঙ্গের বদনাম করছেন৷ আপনি বিচারকের চেয়ারের অপব্যবহার করছেন৷ অবসরের পর রাজনীতি করার জমি তৈরি করছেন৷ বিচারকের আসনে বসে রাজনৈতিক উইশলিস্ট পূরণ করা যায় না৷ বিচারকের আসনের অপব্যবহার করছেন৷' কুণাল আরও বলেন, 'অরণ্যদেব গঙ্গোপাধ্যায়, আপনি যা করার করে নিন৷ তৃণমূলের তো অনেক মুখপাত্র আছে৷ দালাল মুখপাত্র না বলে নাম করে বলুন না৷'
advertisement
একা কুণাল নন, এ দিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ তিনি বলেন, 'বিচারপতি মুখে কী বললেন তাতে কিছু যায় আসে না৷ উনি যা বলেছেন, ওনার লিখে দেওয়ার সাহস দেখানো উচিত ছিল৷ এই বিষয়টা তো মামলার কোনও কথা নয়, মামলার মধ্যে কোথাও নেই৷ যদি তৃণমূলের প্রতীক তুলে দেওয়ার মামলা হত, তাহলে দেখা যেত৷ তখন তৃণমূলও যা করার করত৷ মামলার বিষয় না হলে কোনও বিচারপতির সে বিষয়ে কথা বলা নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না৷ বিচারপতিকে অনেক বেশি শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে হয়৷ '
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
November 25, 2022 6:47 PM IST