#কলকাতা: ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি বা জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি তৈরি করল রাজ্য় সরকার। সুগত বসু, সুরঞ্জন দাস, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক, অনুপম বসু, সৈকত মৈত্র, অভীক মজুমদার, ধ্রুবজ্য়োতি চট্টোপাধ্য়ায়, চীরঞ্জীব ভট্টাচার্য, কল্য়াণময় গঙ্গোপাধ্য়ায়ের মতো বিশিষ্টদের নিয়ে তৈরি হল এই কমিটি। দু'মাসের মধ্যে এই কমিটি রিপোর্ট দেবে।
৩৪ বছরের শিক্ষানীতির খোলনলচে বদলে ফেলে শিক্ষাক্ষেত্রে বড়সড় পরিবর্তনের পদক্ষেপ করেছিল মোদি সরকার ৷ মন্ত্রিসভার বৈঠকে ছাড়পত্র পেয়েছিল নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি ৷ এবার সেই জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে কী পদক্ষেপ করা হবে তার জন্য় বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির কাজ হবে পুরো শিক্ষানীতি পর্যালোচনা করা। তা কতটা বাস্তবায়িত হচ্ছে তা দেখা।
আরও পড়ুন : রাজভবনে রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক, কী নিয়ে আলোচনা? ট্যুইটে যা জানালেন ধনখড়
নয়া নীতিতে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে স্কুলেই ভোকেশনাল শিক্ষায়৷ এই নয়া শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, ছাত্রদের মধ্যে স্কুল জীবন থেকেই অঙ্ক ও বিজ্ঞান ভাবনা বাড়াতে ভোকেশনাল শিক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছে৷ ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস ৬ থেকেই কোডিং শিখবে৷
আরও পড়ুন : আকাশছোঁয়া মূল্য, কম দামে সবজি ও ফল দিতে বড় সিদ্ধান্ত রাজ্যের, ঘোষণা মমতার
নয়া শিক্ষানীতির অন্যতম পরিবর্তন হল আঞ্চলিক মাতৃভাষাকে গুরুত্ব দেওয়া এবং শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে আঞ্চলিক মাতৃভাষাকেই সামনের সারিতে রাখা। নতুন শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, কমপক্ষে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা বা শিক্ষাদানের মাধ্যম হিসাবে আঞ্চলিক বা স্থানীয় মাতৃভাষাকে মাধ্যম করতে হবে। সেটা যদি অষ্টম শ্রেণি বা তার বেশি করা যায়, তাহলে আরও ভাল হয়। সমস্ত স্কুল স্তর ও উচ্চশিক্ষায় সংস্কৃত পড়ার সুযোগ পাবে পড়ুয়ারা। এখানে মানা হবে তিনটি ভাষার নীতি। অর্থাৎ তিনটি ভাষা পড়ানো হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছে শিক্ষামহল।
নয়া ব্যবস্থায় ‘গুরুত্বহীন’ মাধ্যমিক ৷ একাদশ-দ্বাদশে কোনও স্ট্রিম থাকবে না ৷ উচ্চমাধ্যমিকে কলা ও বিজ্ঞান তফাৎ থাকছে না ৷ বিষয় বাছাইয়ে বাধ্যবাধকতাও থাকছে না ৷ অর্থাৎ কেউ পদার্থবিদ্যার সঙ্গে চাইলে সঙ্গীত নিয়েও পড়তে পারেন। আবার রসায়ন আর ইতিহাসও একসঙ্গে পড়া যাবে।নয়া শিক্ষা নীতিতে স্কুল শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চশিক্ষাতেও বড়সড় পরিবর্তন আসতে চলেছে ৷ এবার থেকে স্নাতক অনার্স কোর্স তিন বছরের নয়, চার বছরের ৷ স্নাতকোত্তরে ১ বা দুবছরের কোর্স পড়ানো হবে ৷ এছাড়া স্নাতক ও স্নাতকোত্তর একসঙ্গে পড়ার জন্য ৫ বছরের একটি ইন্টিগ্রেটেড কোর্সেরও ব্যবস্থা রয়েছে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে ৷
উচ্চশিক্ষার নীতি নির্ধারণে থাকবে একটিই সংস্থা ৷ প্রত্যেক পড়ুয়ার জন্য অ্যাকাডেমিক ব্যাঙ্ক অফ ক্রেডিট ৷ উচ্চশিক্ষার কোর্সে ভর্তিতে কমন এনট্রান্স টেস্ট ৷ তৈরি হবে ন্যাশনাল টেস্ট এজেন্সি ৷ এমফিল উঠে যাচ্ছে, থাকছে শুধু পিএইচডি ৷
আইআইটির প্রতিষ্ঠানকে আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হতে জোর ৷ উচ্চশিক্ষায় নাট্যশাস্ত্র, খেলার মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত হবে ৷ এছাড়া কলেজগুলিকেও ফিনান্সিয়ালি আরও কিছু সুবিধা দেওয়া হবে ৷ গোটা দেশে যে ৪৫ হাজার কলেজ রয়েছে তাতে ২০৩৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ এনরোলমেন্টের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে কেন্দ্র ৷ কলেজগুলিকে গ্রেডের উপর ভিত্তি করে স্বশাসন দেওয়া হবে ৷ল' এবং মেডিক্যাল ছাড়া বাকি সমস্ত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার ছাতার তলায় আসতে চলেছে।
পর্যালোচনা করে দু মাসের মধ্য়ে রিপোর্ট দেবে রাজ্য়। পুরোটাই হবে পড়ুয়াদের ভবিষ্য়তের কথা মাথায় রেখে। জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে মহারাষ্ট্র এবং কেরালা যে নির্দেশিকা জারি করেছে, তাও দেখা হবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।