#কলকাতা: এ যেন শাঁখের করাত। যেতেও কাটছে, আসতেও কাটছে। দুর্গা পিতুরি লেনের সোনার গয়নার কারিগরদের এখন জোড়া সমস্যায় দিন কাটছে। ১১ মে কলকাতার বৌবাজারে ফের নতুন করে ফাটল দেখা দেয়। নিরাপত্তার কারণে এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রশাসনের তরফে ঘোষণা করা হয় বাড়ি খালি করে দেওয়ার জন্য। বাসিন্দাদের পাশাপাশি সোনার গয়নার কারিগরদেরও এলাকা ছাড়তে হয়। কিন্তু নতুন কোনও ঠিকানাও এত দ্রুত খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি বেশিরভাগ কারিগরের। যেগুলো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর ভাড়া বেশ কয়েকগুণ বেশি। কিছু কারিগর অন্য কারখানায় অস্থায়ী ভাবে আশ্রয় পেয়েছেন। যদিও সংখ্যায় তা অনেক কম। এমন অবস্থায় কার্যত কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন সোনার গয়নার কারিগররা।
আরও পড়ুন: ছেড়ে আসা বাড়িতে পড়ে লক্ষ লক্ষ টাকার সোনা! ঘুম উড়েছে দুর্গা পিতুরি লেনের কারিগরদের
অন্যদিকে, যারা কোনওমতে মাথা গোঁজার ঠাই করতে পেরেছেন তাঁরাও কোনও কাজ পাচ্ছে না। লক্ষ্মণ নায়েক বলে একজন কারিগর বলেন, "জীবনের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসার পর আর কোনও থাকার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। হয় একদম ছোট যেখানে দলের সবার পক্ষে থাকা সম্ভব নয় নয়তো আকারে বেশ বড় যেটা আবার একটা ছোট দলের জন্য অনেক বেশি। আর যা ভাড়া চাইছে সেটা দিতে গেলে লাভের গুড় পিঁপড়ে খেয়ে নেবে। এর উপর এলাকায় বাইরের বহু লোক। কার মনে কী আছে বোঝার উপায় নেই। সোনার মতো মূল্যবান জিনিস নিয়ে তো আর ফুটপাতে বসে কাজ করা যায় না। তাই কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন কারিগররা। এ দিকে সঠিক সময়ে কাজ দেওয়ার চাপও রয়েছে।"
আরও পড়ুন: বাড়িটা ঠিক আছে তো এখনও? স্কুল ড্রেস পরে বাড়ি দেখতে এল ছোট্ট অংশুমান
অন্যের কারখানায় অস্থায়ী ভাবে আশ্রয় পেয়েছেন তপন জানা। তিনি বলেন, "বৌবাজার এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে এটা এখন সবাই জানে। তাই বড়বাজার, গড়িয়াহাট এলাকার যে সমস্ত দোকান কাজ দিতো তারা কাজ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে৷ সকলেই ভয় পাচ্ছে তাদের দেওয়া সোনা সুরক্ষিত থাকবে কিনা। অথবা সঠিক সময়ে কাজ কারিগররা শেষ করতে পারবো কিনা। তাই কাজ দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে। এমনি ভাবে কদিন চলবে? এভাবে বেশিদিন চললে তো না খেয়েই মরতে হবে।"
এলাকার সোনা ব্যবসায়ী জিতেন পাল বলেন, "আমার কারখানায় কিছু কারিগরকে স্থান দিতে পেরেছি। সেটাও বা কতদিন পারব। এ বার ঘরও পাওয়া যাচ্ছে না। তো এতোগুলো লোক যাবে কোথায়। কাজ না করতে পারলেও বা চলবে কী করে? একটা শিল্প কার্যত সংকটের মধ্যে পড়ে গেল। প্রশাসন সহযোগিতা করছে বটে কিন্তু সেটা তো যথেষ্ট নয়। তবে খুব দ্রুত সব ঠিক হয়ে যাবে আশা করি।"
UJJAL ROY
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।