#কলকাতা: উত্তর-পূর্বের রাজ্য দখলের পরে, এবার তৃণমূলের নজরে দেশের পশ্চিমাঞ্চল। তৃণমূল কংগ্রেস শিবির সূত্রে খবর, আরব সাগরের পাড়ে জোড়া ফুল ফোটাতে তৎপর তাঁরা। আগামী বছর ৪০ আসনের গোয়া বিধানসভায় ভোট। সেখানেই আসন দখলের লক্ষ্যে এগোচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তারই প্রথম ধাপ হিসাবে আজ তৃণমূলে যোগ দিলেন গোয়ার একাধিক নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বড় নাম গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফালেরিও। একই সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দিলেন গোয়ার অন্যতম পরিচিত মুখ লাভু মামলেদার। যোগ দিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক এন শিবদাস। যিনি সাহিত্য আকাডেমি পুরষ্কার প্রাপক। যোগ দিয়েছেন রাজেন্দ্র শিবাজী কাকোদর। ইনি গোয়ার অন্যতম পরিচিত মুখ পরিবেশ আন্দোলন নিয়ে৷ এদিন সকলেই প্রথমে নবান্নে যান তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এরপর ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে সাংবাদিক বৈঠক করে হয় আনুষ্ঠানিক যোগদানপর্ব।
তৃণমূল কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য শুধু নেতা যোগ দিলেই হবে না। সমাজে সত্যিকারের যাদের ভূমিকা ও পরিচয় আছে তাঁরাই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হাত ধরতে প্রস্তুত হয়েছেন। ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস জিতেছিল ১৭টি আসন। বিজেপি জিতেছিল ১৩টি আসন। যদিও রাজনৈতিক পালাবদলের পরে, বিজেপি সরকার গঠন করে। এবার গোটা দেশ জুড়ে বিজেপির একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মুখ হিসাবে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে তুলে ধরতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস।
বিজেপির একমাত্র শক্তিশালী বিরোধী যে মমতা বন্দোপাধ্যায়ই তা বোঝাতে পশ্চিমের রাজ্যে এবার সংগঠন গড়তে চলেছে তৃণমূল। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় দায়িত্ব নেওয়ার পরেই জানিয়েছিলেন, যেখানে যাবেন সেখানে একটি বা দুটি আসন পাওয়া লক্ষ্য নয়। আসলে তারা চাইছেন পাকাপোক্ত সংগঠন গড়ে তুলতে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল সেই কাজ শুরু করেছে বিজেপি শাসিত রাজ্য ত্রিপুরাতে। এবার সেই কাজই তারা শুরু করল গোয়ায়। সেই সূত্রেই আজ বিকেলেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, দীর্ঘ দিনের বিধায়ক লুইজিনহো ফালেরিও। কংগ্রেসের এই প্রবীণ নেতা জাতীয় রাজনীতিতেও অত্যন্ত পরিচিত নাম। ২০১৩ সাল থেকে জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে কাজ করছেন। এর পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য যা সেভেন সিস্টার নামে পরিচিত তার দায়িত্বে ছিলেন ইনি। যার মধ্যে ছিল ত্রিপুরা রাজ্য। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা রাজ্যে সংগঠন পাকাপোক্ত করতে নেমেছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। সুস্মিতা দেব দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রতিদিন এই রাজ্যে সময় দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: 'প্রধানমন্ত্রী বাঙালিদের উপর ভরসা করেন না', বিস্ফোরক বাবুল সুপ্রিয়! হঠাৎ কেন মোদিকে তোপ?
আগামী দিনে তাঁর লক্ষ্য এই রাজ্য সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া কলকাতা থেকে পালা করে তৃণমূলের সাংসদ-মন্ত্রী, সাংগঠনিক নেতারা যাতায়াত করছেন। গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফালেরিও তৃণমূলে যোগ দেওয়ায়, একই ঢিলে দুই পাখি মারা হয়ে যাবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।৪০ আসনের গোয়া বিধানসভায় বিজেপির আসন বর্তমানে ২৭, কংগ্রেসের ৫, গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টির ৩, ন্যাশালসিস্ট কংগ্রেস পার্টির হাতে ১, মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির হাতে ১ ও নির্দলদের হাতে রয়েছে ৩টি আসন। যদিও ২০১৭ সালে গোয়ায় কংগ্রেস পেয়েছিল ১৭ আসন। বিজেপি পেয়েছিল ১৩ আসন। বিজেপির একমাত্র শক্তিশালী বিরোধী যদি কেউ হতে পারে সেটা যে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দল সেটাই বুঝিয়ে দিতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্য বিজেপি বিরোধী দলকে ভোট দিলে সেই দলের বিধায়ক শিবির বদলে ফেলতে পারেন। তৃণমূলকে ভোট দিলে তারা বিজেপি বিরোধী শিবিরেই থাকবে এটা বুঝিয়ে দিতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস।গোয়ার রাজনৈতিক অবস্থান বুঝতে ইতিমধ্যেই সেখানে ঘাঁটি গেড়েছে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের দল। সূত্রের খবর দীপাবলির পরে গোয়া যেতে পারেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। এমনকি যেতে পারেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।