কলকাতা: বরাদ্দ আটকে যেতে পারে এই আশঙ্কায় প্রশাসনিক স্বচ্ছতা রাখতে সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্পে উপভোক্তাদের নামের সঙ্গে আধার সংযোগ জেলাগুলিকে দ্রুত করার নির্দেশ দিল নবান্ন। এ ব্যাপারে জাতীয় সামাজিক প্রকল্পের মাধ্যমে দেওয়া বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতার প্রাপকদের ছাড় দিতেও নারাজ সরকার।
কেন্দ্রীয় সরকার প্রশাসনিক স্বচ্ছতা রাখতেই উপভোক্তাদের নামের সঙ্গে আধার সংযোগ ও আধার বেস পেমেন্ট সিস্টেম চালু করেছে কেন্দ্র। কিন্তু বহু রাজ্য তা নিয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গও প্রথম দিকে গুরুত্ব না দিলেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের নাম যাচাই করতে গিয়ে এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছে। সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যসচিব জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বারবার এ ব্যাপারে সচেতন করে দিয়েছেন। পাশাপাশি রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের তরফ থেকেও এনিয়ে জেলাগুলিকে বার্তা পাঠানো হয়েছে। কারণ, বেশিরভাগ সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের কাজ রূপায়ণের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত দফতরেরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।
এই মুহূর্তে রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় সামাজিক প্রকল্পে ১৪ লক্ষ ৪১ হাজার ৪৬০ জন তিন ধরনের ভাতা পেয়ে থাকেন। এগুলি হল বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা। এর মধ্যে মাত্র ৯ লক্ষ ৭৯ হাজার ৬০০ ভাতা প্রাপক অর্থাৎ ৬৮ শতাংশ তাদের আধার সংযোগ করা হয়েছে। গত এক মাসে চাপে পড়ে জেলাগুলি বেশিরভাগ কাজটা করেছে। মহারাষ্ট্রে যেখানে ৯১.১ শতাংশ প্রাপকের আধার সংযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন- সুমন কাঞ্জিলালের দলত্যাগ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বড় ধাক্কা! আক্ষেপের সুর পদ্ম শিবিরে
এই তিন প্রকল্পের ক্ষেত্রে কলকাতার পাশ্ববর্তী দুই জেলা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা সবচেয়ে পিছিয়ে। উত্তর ২৪ পরগনা তিনটি প্রকল্প প্রাপকের ৪২ শতাংশের বেশি আধার সংযোগ হয়নি। ঝাড়গ্রাম, নদীয়া ও কোচবিহারও রয়েছে এই পিছিয়ে থাকা তালিকায়। তারা ৫০ শতাংশ উপভোক্তার আধার সম্পন্ন করতে পারেনি। তবে কালিম্পং, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান ও হাওড়ার ৯০ থেকে ৯৭ শতাংশ আধার সংযোগের কাজ শেষ করে ফেলেছে। নবান্নর কর্তাদের কথায়, আধার সংযোগ নিশ্চিত করতে পারলেই একই ব্যক্তি কোনও ভাবেই একই ধরনের একাধিক প্রকল্প থেকে সুযোগ নিতে পারবে না।
কেন্দ্রীয় সরকার ন্যাশানাল পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়াকে সামনে রেখে আধার বেস পেমেন্ট সিস্টমের মধ্যে সরাসরি উপভোক্তাদের কাছে সরকারি প্রকল্পের আর্থিক সাহায পৌঁছে দিতে চায়। এরফলে গ্রামের কোন মানুষ কোন সরকারি প্রকল্পের সুযোগ পেয়েছে বা পায়নি তা নিশ্চিত হওয়া সহজ। কোনওভাবেই রাজনৈতিক প্রভাবে একই প্রকল্পের সুবিধা এক ব্যক্তি দ্বিতীয়বার নিতে পারবে না। এই তিন প্রকল্পরে ক্ষেত্রে মাত্র ৪২ শতাংশ নাম আধার বেস পেমেন্ট সিস্টেমে অর্ন্তভুক্ত কার সম্ভব হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কেন্দ্রের কাছ থেকে ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকার বরাদ্দ এখনও পায়নি রাজ্য। তবে ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার উপভোক্তার তালিকায় ৭৪ শতাংশ ক্ষেত্রেই আধার সংযোগ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি কাজ চলছে। প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য কিছু ক্ষেত্রে সময় লাগছে। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পে আগেই জানিয়ে দিয়েছে উপভোক্তাদের কাছে টাকা পৌঁছাবে আধার বেস পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Nabanna