ARPITA HAZRA
#কলকাতা: ভ্যাকসিনকাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জনের কুকীর্তির জাল বহুদূর বিস্তৃত | জেরায় দেবাঞ্জন (Debanjan Deb) জানিয়েছে, বেলিয়াঘাটাতে সিক্যুরিটি প্রোভাইডার কোম্পানিকেও ভুয়ো আইএএসের পরিচয় দিয়ে নিরাপত্তা রক্ষী বা দেহরক্ষী নিয়েছিল সে | ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে একটি পোর্টাল অনলাইনের মাধ্যমে দেহরক্ষীর জন্য অ্যাড দেওয়া হয়েছিল | এরপর ওই নিরাপত্তা প্রোভাইডার কোম্পানি যোগাযোগ করে দেবাঞ্জনের সঙ্গে | ওই কোম্পানির সিনিয়র ম্যানেজার দেবব্রত মৈত্র জানান, যখন দেবাঞ্জনের সঙ্গে তিনি কসবা অফিসে দেখা করতে যান, তাঁর আগে অগ্রিম অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে যেতে হয়েছিল | অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতো নীল বাতির গাড়ি | মোবাইল ফোন বাইরে জমা দিয়ে ভিতরে ঢুকতে হত | মাত্র তিন দিনে ভুয়ো নথি দিয়ে পাইয়ে দিয়েছিল টেন্ডার | যেখানে ওয়ার্ক অর্ডারে KMC লোগো, হলোগ্রাম ছিল | দেহরক্ষীর জন্য তিন মাসের চুক্তির ভুয়ো টেন্ডার পাইয়ে দেয় | এমনকি wbfincorp থেকে টাকা দিত প্রতি মাসে |"
৩৪ হাজার টাকা দিত মাসে ওই দেহরক্ষীর জন্য যা জিএসটি নিয়ে প্রায় ৪০ হাজার | তবে তিন মাসের জন্য বললেও মাস দুই পর টারমিনেশন করে দেয় দেবাঞ্জন | কারণ, অজুহাত দেয় পুরোনো দেহরক্ষী ফিরে এসেছে | ওই কোম্পানির আধিকারিকদের দাবি , চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত দেহরক্ষী রেখেছিল দেবাঞ্জন | ৩ মাসের চুক্তি হলেও ২ মাস পরই বলে দেয় আর লাগবে না | ওই কোম্পানির আধিকারিকদের দাবি দেবাঞ্জন বলেছিল, " তিনি আইএএস অফিসার তিনি সরকার থেকে দেহরক্ষী পান | তাঁর দেহরক্ষী প্রয়োজন |" ওই কোম্পানির অধিকারিকরা ভাবেন সরকারি অফিসারদের সঙ্গে কাজ করলে ভাল রেপুটেশন হবে | সে কারণেই ওই কোম্পানি চুক্তিতে রাজি হয় | ভুয়ো KMC লোগো দিয়ে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয় ওই কোম্পানিকে | কোম্পানি এক আধিকারিক জানান, দেবাঞ্জন নিজেকে ব্যাস্ত দেখাত | মিনিট পনেরোর বেশি সময় দিত না | বলতো তাঁকে যেন সব সময় ফোন না করা হয় | কারণ তিনি ভীষণ ব্যস্ত মানুষ |
এই কোম্পানি থেকেই সোনারপুরের বাসিন্দা অরবিন্দ বৈদ্য নামে দেহরক্ষীকে বা PSO কে পাঠানো হয়েছিল দেবাঞ্জনের জন্য | লালবাজারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দরকারে সহযোগিতা করবেন বলে জানান কোম্পানিরে আধিকারিকরা | এ ভাবেই শুধু পুলিশ, নেতা-মন্ত্রী নয় সামাজিক জীবনেও সর্বত্র আইএএস -এর পরিচয় দিত দেবাঞ্জন | ভুয়ো আইএএসের কুকীর্তির জাল বহুদূর বিস্তৃত বলেই মনে করছে গোয়েন্দারা| দেবাঞ্জনকে জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য কলকাতা পুলিশের সিটের আধিকারিকদের হাতে | পুলিশ সুত্রে খবর, হেয়ার স্ট্রিটে প্রতারণার নতুন অভিযোগ দায়ের হল দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে | অভিযোগ, এক কোটি দু লক্ষ টাকার মাস্ক ও স্যানিটাইজার স্টকিস্ট-এর থেকে কিনে পেমেন্ট করেনি দেবাঞ্জন| তাঁকে জেরায় জানা গিয়েছে, ২০২০ সালে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দু কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে তাঁর | জাল নথি দিয়ে ২০ লক্ষ টাকা আইসিআইসিআই থেকে লোন নিয়েছিল সে | লালবাজারে ১২ জনকে আজ মোট জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে | এদের মধ্যে কিছু দেবাঞ্জনের কর্মী ও প্রাক্তন কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে | তাঁরা জানায়, চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেয় দেবাঞ্জন | এরপর এদেরকে নিজের কোম্পানিতে কর্মী বানিয়ে নেয় বলেই জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে |
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Debanjan Deb, Fake IAS