#কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া থেকে দক্ষিণ অফ্রিকার জোহানেসবার্গ শহরে ব্রিকস সম্মেলনে বিদেশমন্ত্রকের প্রতিনিধি দলে থাকা...ভুয়ো সিবিআই আধিকারিক (Fake CBI Officer) সনাতন রায়চৌধুরীকে (Sanatan Roychowdhury) জেরায় উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইতিমধ্যেই সনাতনের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কার কার সঙ্গে কথা বলত সে, কোনও প্রভাবশালী কারও সঙ্গে কথা হত কিনা? মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে সনাতনের পাসপোর্ট।
ম্যারাথন জেরায় সনাতন তদন্তকারী গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, ২০০৯ লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিল সে। দমদম থেকে ‘লোক জনশক্তি পার্টি’র হয়ে নির্বাচনে প্রতিনিধিত্ব করে। ৫ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছিল।আইনজীবী হিসেবে তথ্য জমা দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনে। একইসঙ্গে তার দাবি, ২০১৮ সালে দক্ষিণ অফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনে (10th BRICS Summit in Johannesburg in 2018) বিদেশমন্ত্রকের প্রতিনিধি দলে ছিল সে। সে বারে সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।
কিন্তু কীভাবে ব্রিকস সম্মেলনে অংশগ্রহ করল সনাতন? তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যেই বিদেশমন্ত্রকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে। এ খানেই শেষ নয়। ইন্দো-জাপান সম্মেলনেও অংশ নেন সনাতন। টোকিও সামিটেও অংশগ্রহণ করেন। কীভাবে টোকিওতে অংশগ্রহণ করল খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কে বা কারা সাহায্য করল সেই বিষয়ে গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সনাতন রায়চৌধুরীর কাছ থেকে বিজেপির সদস্যপদের (BJP Membership) রসিদ, রাজ্য সরকারের আইনি উপদেষ্টার ভুয়ো ভিজিটিং কার্ড এবং বিজেপির ন্যাশনাল এগজিকিউটিভ মেম্বারের কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
কীভাবে পুলিশের জালে পড়ল প্রতারক সনাতন?
জানা গিয়েছে, ২৫ জুন তালতলা থানার আধিকারিকরা প্রথম সনাতনের 'কীর্তি' ধরে ফেলেন। এক অভিযুক্তকে ছাড়াতে গিয়ে নিজে ফেঁসে যায় সে। জানা গিয়েছে, ২৫ জুন নিজেকে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের উপদেষ্টা পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে সে। পুলিশের তখনি সন্দেহ হয়, কারণ মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে উপদেষ্টা পদের কোনও অস্তিত্বই নেই। এরপরেই খোঁজখবর নিয়ে আধিকারিকরা বিষয়টি বুঝতে পারেন। তারপরে সনাতনের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেন। তারপর থেকে তার খোঁজ চলছিল। প্রসঙ্গত, CBI-র DIG গড়িয়াহাট থানাকে চিঠি দিয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সনাতনের সঙ্গে CBI-র কোনও সম্পর্ক নেই।
অন্যদিকে, ৩০ জুন গড়িয়াহাট থানায় ফের তার বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করেন ম্যান্ডেভিলা গার্ডেন এলাকার এক মহিলা। তাঁর অভিযোগ, সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়ে গড়িয়াহাটে তাঁর ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি হাতানোর চেষ্টা করছিল সনাতন। নীল বাতি গাড়ি নিয়ে আসতেন সনাতন রায়চৌধুরী। তারপরেই সোমবার রাতে সনাতনকে গ্রেফতার করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তার ব্যবহৃত নীল বাতি লাগানো গাড়িটি। গাড়ি থেকে সিবিআই-এর লোগো দেওয়া স্টিকার উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সনাতন বরানগরের মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা। পেশায় আইনজীবী। নিজেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে পরিচয় দিত। নীল বাতি গাড়ি নিয়ে ঘুরত। এ দিকে আবার ডিজিটাল প্লাটফর্মে সিবিআই স্পেশাল কাউন্সিলের পদাধিকারী বলে নিজের পরিচয় দিত। উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে পার্কস্ট্রিট থানা এলাকা থেকে এমনই এক ভুয়ো আধিকারিকে হাতেনাতে ধরা হয়েছিল। ধৃতের নাম ছিল আসিফুল হক। আসিফুলও নিজেকে ভিজিল্যান্স অফিসার বলে পরিচয় দিত। নীল বাতি লাগানো গাড়িও ব্যবহার করত। বুধবার জেরায় অসঙ্গতি ধরা পড়তেই তাকেও গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Fake CBI Officer, Kolkata