কলকাতা: ভোট বড় বালাই! লক্ষ্য তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে থাবা বসানো। আর তাই সংখ্যালঘুদের মন পেতে এখন মরিয়া বঙ্গ বিজেপি। পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে মুসলিমরা 'শত্রু' নয়, বিজেপির ‘বন্ধু'’ এটা প্রমাণ করতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছে না গেরুয়া শিবির। মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে বাংলার সংখ্যালঘু এলাকায় বিশেষ প্রচার অভিযান কর্মসূচি ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া ব্রিগেড। এ রাজ্যে ক্ষমতার স্বাদ পেতে গেলে প্রয়োজন সংখ্যালঘুদের সমর্থন। এই বুঝেই কি সংখ্যালঘু 'প্রেম' প্রমাণে মরিয়া হয়ে উঠেছে রাজ্য বিজেপি? প্রশ্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের। ২৪- এ ক্ষমতা ধরে রাখতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী লাইন বদল বিজেপির? বিজেপি সংখ্যালঘুদের বিরোধী নয়, সুর বদলে এখন বঙ্গ বিজেপি নেতাদের মুখে মুখে এই বার্তাই শোনা যাচ্ছে। গত সোমবার বিজেপির রাজ্য দফতর মুরলীধর সেন লেনে দেখা গেল এক নজিরবিহীন ছবি। এই ঘটনা কখনও ঘটেছে কিনা তা মনে করে উঠতে পারছেন না পদ্ম শিবিরের অনেকেই।
আরও পড়ুন- শুক্রের অবস্থান পরিবর্তনে বদলে যেতে চলেছে এই সব রাশির জীবন! ভাল হবে না মন্দ ?
এক সংখ্যালঘু পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কাহিনী রীতিমত সাংবাদিক সম্মেলন করে সামনে আনলেন এ রাজ্যের বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য, প্রবীণ বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়া ও দলের সংখ্যালঘু সেলের এক নেতা। তারপর থেকেই সংখ্যালঘুদের প্রতি যে বিশেষ নজর দিচ্ছে বঙ্গ বিজেপি তা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিজেপির রাজ্য দফতরে বঙ্গ পদ্ম শিবিরের নেতাদের সাথে এক ফ্রেমে সংখ্যালঘু পরিবারকে পাশে বসিয়ে সেই পরিবারের সঙ্গে থেকে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে আনার কাহিনি তুলে ধরার মাধ্যমে এ রাজ্যের সংখ্যালঘুদের ফের আরও একবার পাশে থাকার বার্তা দিল পদ্ম শিবির বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। একবালপুর থানা এলাকার এক মহিলাকে কাজের টোপ দিয়ে বিদেশে নিয়ে গিয়ে কার্যত তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ পেয়ে ওই মহিলাকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উদ্যোগী হয় বঙ্গ বিজেপি।
আরও পড়ুন- রাশিফল ১১ ফেব্রুয়ারি; দেখে নিন কেমন যাবে আজকের দিন
রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে দীর্ঘ যোগাযোগ করে অবশেষে ওই মহিলাকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় বলে সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন পদ্ম নেতারা। সেই সংখ্যালঘু মহিলা এবং তাঁর স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ভারত সরকার এবং বিজেপির প্রচেষ্টার ফলেই ওই মহিলাকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। তবে শুধু শমীক ভট্টাচার্যই নন, বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়া থেকে শুরু করে সেদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির থাকা সংখ্যালঘু সেলেন নেতা, সবার মুখেই নরেন্দ্র মোদির 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ' - এই কথা বারে বারে উচ্চারিত হয়।
ঘরোয়া কোন্দল, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পাশাপাশি সাম্প্রতিক আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের দলত্যাগে যখন তীব্র অস্বস্তিতে বঙ্গ পদ্ম শিবির, ঠিক তখনই বিজেপির সংখ্যালঘুদের মন জয় করার নানান কৌশলে কতটা রাজনৈতিকভাবে লাভ হয় তাদের, তার উত্তর দেবে সময়ই। তবে 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ' - মোদির এই স্লোগান এখন শোনা যাচ্ছে পদ্ম নেতাদের মুখে মুখে। তবে খোদ রাজ্য দফতরে নজিরবিহীন সাংবাদিক সম্মেলনের পর থেকেই সংখ্যালঘু ইস্যুতে বিজেপির 'ভোলবদল' নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তারপর লোকসভা। এই দুই নির্বাচনকে সেমিফাইনাল আর ফাইনাল ম্যাচ হিসেবে দেখছে গেরুয়া শিবির। সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে দুই ভোটে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যেই কী সংখ্যালঘু ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান বদল করল পদ্ম ব্রিগেড? উঠছে প্রশ্ন। যদিও রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সাফাই,' ভোটের দিকে তাকিয়ে নয়, আমাদের লক্ষ্য সবার আপদে বিপদে পাশে থাকা'। ভোট বড় বালাই!
ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bengal BJP, BJP