কলকাতা: সত্যজিৎ রায়ের সোনার কেল্লার মুকুলকে খুঁজতে রাজস্থানে পাড়ি দিয়েছিলেন ফেলুদা এবং তোপসে। বাস্তবের মুকুলও যে এভাবে হারিয়ে যাবেন, কে জানত! বাস্তবে মুকুল থাকলেও ফেলুদা নেই৷ তাই মুকুলকে খুঁজতে দিল্লি গেল বিধাননগর পুলিশের বিশেষ দল৷
এর পাশাপাশি মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ সল্টলেকের বিজেপি নেতা পীযূষ কোনোডিয়াকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ৷ গতকাল রাতেই হঠাৎ কলকাতা থেকে বিমানে দিল্লি যান মুকুল রায়৷ মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের অভিযোগ, তাঁর বাবার মানসিক অবস্থা ঠিক নেই৷ এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ভুল বুঝিয়ে মুকুলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ শুভ্রাংশুর৷ গতকাল রাতেই বিমানবন্দর এবং বীজপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন শুভ্রাংশু রায়৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নিল বিধাননগর পুলিশ৷
আরও পড়ুন: 'বাবা মানসিক ভাবে অসুস্থ', 'নিখোঁজ' মুকুলকে ঘরে ফেরাতে চান পুত্র শুভ্রাংশু! বিস্ফোরক অভিযোগ
দিল্লি যাওয়ার সময় গাড়ির চালক রাজু এবং দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ভগীরথ মাহাতো মুকুল রায়ের সঙ্গে ছিলেন৷ অভিযোগপত্রে ওই দু জনের নামও উল্লেখ করেছেন শুভ্রাংশু৷ তাঁর অভিযোগ, মুকুল যেহেতু মানসিক ভাবে স্থিতিশীল নন, তাই পরিবারের অনুমতি ছাড়া তাঁকে কোথাও নিয়ে যাওয়া অনৈতিক৷ মুকুল কী করে দিল্লি যাওয়ার বিমানের টিকিট কাটার টাকা পেলেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু রায়৷
গতকাল সন্ধ্যে থেকেই মুকুল রায়ের আচমকা দিল্লি যাত্রা নিয়ে জোর জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে৷ গতকাল বিকেলে সল্টলেকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ কলকাতা থেকে বিমান ধরে দিল্লি রওনা দেন মুকুল৷ মুকুল রায় বিমানে উঠে যাওয়ার পর কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছন পুত্র শুভ্রাংশু৷ মুকুলকে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়ার জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন তিনি৷ যদিও ততক্ষণে মুকুলের বিমান উড়ে যাওয়ায় তাঁকে নামানো সম্ভব হয়নি৷ রাত পৌনে দশটা নাগাদ দিল্লি পৌঁছন মুকুল৷ সেখানে পৌঁছেও অবশ্য বিমাবন্দরে অসংলগ্ন কথা বলতে শোনা যায় প্রবীণ এই নেতাকে৷ মুকুল দাবি করেন, তিনি দিল্লির বিধায়ক এবং সাংসদ৷ তাই রাজধানীতে গিয়েছেন তিনি৷
শুভ্রাংশুর অভিযোগ পেয়েই তাঁর খোঁজে তৎপর হয় পুলিশ৷ শুভ্রাংশুর দাবি, মুকুলের ফোন বন্ধ রয়েছে৷ ফলে ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না৷ মুকুলের সঙ্গে থাকা দুই সঙ্গীর ফোনও বন্ধ বলে অভিযোগ শুভ্রাংশুর৷ তাঁর আরও অভিযোগ, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সিআইএসএফ জওয়ানরা অসহযোগিতা করার কারণেই তিনি গতকাল বিমানবন্দরে মুকুল রায়কে আটকাতে পারেননি৷
মুকুল অন্তর্ধান রহস্যের তদন্তে নেমে বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে পুলিশ৷ মুকুল রওনা হওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে আর কেউ ছিলেন কি না, তাও দেখা হচ্ছে৷ ফোনেও মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ৷ দিল্লিতে পুলিশের যে দলটি গিয়েছে, তারা মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করে কথা বলার চেষ্টা করবে৷
তবে শুধু সোনার কেল্লার গল্পের মতো হারিয়ে যাওয়া নয়৷ দুই মুকুলের মধ্য মিল-অমিল আরও আছে৷ গল্পের মুকুল পূর্ব জন্মের কথা বলতে পারত৷ কাকতালীয় হলেও বাস্তবের মুকুল এখন স্মৃতিভ্রংশের সমস্যায় ভুগছেন বলে দাবি তাঁর ছেলে শুভ্রাংশুর৷ অমিল বলতে, গল্পের মুকুল ছিল বালক, আর বাস্তবের মুকুল বৃদ্ধ হয়েছেন৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Mukul roy, Sonar Kella