#কলকাতা: মধ্যরাত থেকেই বিভিন্ন সীমানায় দাঁড়িয়ে আছে ট্রাক। ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে আজ, সোমবার থেকে টানা তিনদিন ধর্মঘটে গিয়েছে রাজ্যের প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ ট্রাক। সংগঠনের দাবি ২০১৮ সাল থেকে একাধিকবার তারা সমস্যা মেটানোর জন্যে দ্বারস্থ হয়েছেন রাজ্য প্রশাসনের। যদিও গত তিন বছরে সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি বলে দাবি তাদের। এই অবস্থায় রাজ্যে অতিরিক্ত অ্যাক্সেল লোড চালু, ওভারলোডিং বন্ধ এবং পুলিশের জুলুম বন্ধ করার দাবি জানিয়ে তারা ধর্মঘট পালন করছে।
পুজোর মুখেই ট্রাক মালিকদের ডাকে এই ধর্মঘটের জেরে মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কা করছে সাধারণ মানুষ। ধর্মঘট তুলে নেওয়ার জন্যে ইতিমধ্যেই অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন। ট্রাক সংগঠনের দাবি, গোটা দেশে মোটর ভেহিক্যালস আইন মেনে লরিতে অ্যাক্সেল লোড বৃদ্ধি করা হয়েছে। শুধুমাত্র আমাদের রাজ্যেই তা বৃদ্ধি করা হয়নি। যদি অ্যাক্সেল লোড বৃদ্ধি করা হয় তাহলে ওভারলোডিং কমবে, রাস্তা খারাপ হবে না বলে দাবি সংগঠনের। সংগঠনের দাবি গোটা দেশে ৯ টন ওজনের গাড়ি বহন করছে সাড়ে এগারো টনের পণ্য। ১৬ টনের গাড়ি বহন করছে ১৮.৫ টনের পণ্য। ২০ টনের গাড়ি বহন করছে ২৫ টনের পণ্য। ২৫ টনের গাড়ি বহন করছে ৩১ টনের পণ্য। শুধুমাত্র এই রাজ্যেই তা মানা হচ্ছে না বলে দাবি। বিভিন্ন অভিযোগ গত তিন বছর ধরে বারবার উঠেছে। শেষমেষ তাই পুজোর মুখেই বন্ধ হল ট্রাক চলাচল।
হিলি, চ্যাংড়াবান্ধা, পেট্রাপোল সহ একাধিক সীমানায় দাঁড়িয়ে আছে একের পর এক ট্রাক। দাঁতন, চিচিড়া, আসানসোল সীমানায় দাঁড়িয়ে আছে একের পর এক ট্রাক। কোনো ট্রাকে ফল, কোনো ট্রাকে সবজি, মাছ, ডিম, ওষুধ, পোশাক সব ট্রাকবন্দি হয়ে পড়ে আছে। এর মধ্যে বেশ কিছু ট্রাকে পচনশীল দ্রব্য থাকায় তা পচতে শুরু করে দিয়েছে। ফলে ধর্মঘটের জেরে একদিকে যেমন অসুবিধায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তেমনি অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন ক্রেতারাও। সংগঠনের সভাপতি সুভাষ বোস জানিয়েছেন, "আমরা অপারগ। গত তিন বছর ধরে বারবার বলেও কোনও লাভ হয়নি৷ তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই আমরা আজ থেকে ৭২ ঘন্টার ধর্মঘটে গেলাম।"
মুলত বিহার, দিল্লি, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশার ট্রাক আটকে আছে সীমানায়। ইতিমধ্যেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করার জন্যে বারবার আবেদন জানাচ্ছে প্রশাসন। একাধিক জেলায় জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের অফিস থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে ট্রাক ইউনিয়ন গুলোর সাথে। যদিও ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে অনড় ট্রাক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। ফলে দ্রুত আলোচনার মধ্যে দিয়ে সমস্যার সমাধান না হলে মুল্য বৃদ্ধি হবে ব্যাপক ভাবে।