#কলকাতা: প্রার্থী নিয়ে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আগেভাগেই সতর্ক করেছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। দক্ষিণ কলকাতার বিজয়া সম্মেলনে গিয়েই পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, দেবাশিষ কুমারদের পাশে বসিয়ে বার্তা দিয়ে এসেছিলেন তিনি। আর মনোনয়ন পর্ব পেশের পরে দেখা গেল সেই দক্ষিণ কলকাতাতেই প্রার্থী নিয়ে একটা মতানৈক্য তৈরি হল। ফলে তনিমা চট্টোপাধ্যায়, সচ্চিদানন্দ বন্দোপাধ্যায় ও রতন মালাকার এই তিন ব্যক্তিই এখন নজরে। সকলের নজর এই তিনজনকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে কি দল বলবে? নাকি গোঁজ প্রার্থী হিসাবেই লড়াই চলবে ৬৮,৭২ ও ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে।
কলকাতা পুরসভার ৭২,৭৩,৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে তাই গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি একপ্রকার সতর্ক করেই বলেছিলেন, টিকিট না পেয়ে বিরোধীতা করলে রাজনৈতিক ভাবে একঘরে হয়ে পরতে হবে। তাই যারা টিকিট পাবেন না তারা যেন দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। কিন্তু এই তিন ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে সেটা হল না।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন আগামী শনিবার ৪ ডিসেম্বর। তার আগে দলের শীর্ষ নেতারা এই বিক্ষুব্ধ তিন প্রার্থীর মানভঞ্জন করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারে কিনা সেটাই দেখার। আর তা না হলে বিষয়টি যথেষ্ট অস্বস্তিকর হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি কলকাতা পুরসভার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর রতন মালাকার কে এবার মনোনয়ন দেয়নি দল। তার বদলে টিকিট দেওয়া হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
আরও পড়ুন: কলকাতা পুরভোটে প্রতীক পাচ্ছে না লিবারেশন, দ্বারস্থ নির্বাচন কমিশনের
দীর্ঘদিন ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর থাকার পর এবার টিকিট না পেয়ে হতাশ রতন মালাকার সোজা নির্দল হিসাবেই মনোনয়ন জমা দিয়ে দিয়েছেন তার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি জানিয়েছেন, মনোনয়ন প্রত্যাহারের কোনো সম্ভাবনা নেই। আর কার্তিক বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মানুষ সব দেখছে। রাজনৈতিক লড়াই যা হওয়ার হবে। অপরদিকে, ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত আরও একটি ওয়ার্ডেও দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তৃণমূলেরই আরেক প্রাক্তন কাউন্সিলর সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। শোভন চট্টোপাধ্যায় মেয়র থাকাকালীন, ২০১০-২০১৫ সালে সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চেয়ারম্যান করেছিলো তৃণমূল কংগ্রেস। সেই ‘মনুয়া’দা এবার ৭২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। খোদ দলের রাজ্য সভাপতির ভাই এবং ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর সন্দীপ রঞ্জন বক্সির বিরুদ্ধে দলেরই প্রাক্তন কাউন্সিলর ও পুর চেয়ারম্যান মনোনয়ন জমা দেওয়ায় অস্বস্তি ছড়িয়েছে দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে।
আরও পড়ুন: ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডে দেবাশীষ কুমার গরীবের মসিহা,জনগণের বন্ধু
রতন মালাকার ও সচ্চিদানন্দ বন্দোপাধ্যায় টিকিট পাননি। কিন্তু ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণার পরেও বাদ গিয়েছে তনিমা চট্টোপাধ্যায়ের নাম। ২৬ তারিখ দলের ঘোষিত প্রার্থী তনিমা চট্টোপাধ্যায়কে বদল করে বিদায়ী কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়কেই আবার টিকিট দিল তৃণমূল কংগ্রেস। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনেই, তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটেই ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সুদর্শনা। এদিকে এই ওয়ার্ডে প্রথম যাকে প্রার্থী করা হয়েছিল সেই প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায় দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে ওই ওয়ার্ড থেকেই নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।সচ্চিদানন্দ-তনিমা-রতন এই জনেই তাই আপাতত রাজনৈতিক মহলের নজরে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।