কেন খ্রিস্টান, ইহুদি আর মুসলিমরা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়েছে জেরুজালেমের অধিকার নিয়ে

Last Updated:

পৃথিবীর তিন উল্লেখযোগ্য ধর্মমতের অনুরাগী- খ্রিস্টান, ইহুদি আর মুসলিমদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়েছে জেরুজালেমের জমি নিয়ে।

মানুষের সভ্যতার ইতিহাসে সব চেয়ে পুরনো কোনও কিছুর যদি তালিকা তৈরি করতে হয়, তাহলে সবার প্রথমে নাম উঠে আসবে ধর্ম এবং শহরের। মানুষের বসতি স্থাপনের ইতিবৃত্ত যেমন প্রাচীন, তেমনই প্রাচীন সেই বসতিকে কেন্দ্র করে তার ধর্মাচরণের গাথা। এই দিক থেকে দেখলে ইজরায়েলের অন্তগর্ত জেরুজালেম যে বিশ্বের সভ্যতার নিরিখে সর্বাধিক প্রাচীন শহর, সে নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকে না। আর সুপ্রাচীন বলেই পৃথিবীর তিন উল্লেখযোগ্য ধর্মমতের অনুরাগী- খ্রিস্টান, ইহুদি আর মুসলিমদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়েছে জেরুজালেমের জমি নিয়ে। হয়েছে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, আবার পরস্পরের সহাবস্থান মেনে না নিয়েও উপায় থাকেনি তাদের।
হিব্রু ভাষার ইয়েরুসালাইম বা আরবি ভাষার অস-উল-কুদ নামে পরিচিতি এই জেরুজালেমের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য স্থান এবং প্রাণকেন্দ্র হল পুরনো শহর, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয়- ইতিহাসের এই দুই দিক থেকেই তা সমান গুরুত্বপূর্ণ। এই শহর আপাতত অনেকগুলি গলিঘুঁজি আর তার মধ্যে চারটি ধর্মীয় মঠে ভাগ হয়ে গিয়েছে। খ্রিস্টান, ইহুদি, মুসলিম এবং আর্মেনিয়ান এই হল চারটি মত। তবে আর্মেনিয়ানরাও খ্রিস্টধর্মাবলম্বী বলে এই বিশেষ ধর্মের জোর হালে জেরুজালেমে বেড়েছে।
advertisement
পশ্চিমের ওয়াল
advertisement
যদিও রাজনৈতিক ইতিহাস এবং ধর্মীয় ইতিহাসের নিরিখে ইহুদিদের আধিপত্যের দিকটি মেনে নিতে হবে সবার প্রথমে। বাইবেল ধরলে রাজা ডেভিড (King David) এই শহর প্রতিষ্ঠা করেন এবং জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন। তাঁর পুত্র রাজা সলোমনের (King Solomon) দ্বারা টেম্পল মাউন্টে (Temple Mount) ইহুদিদের প্রথম মন্দির বা প্রার্থনালয় তৈরি হয়। ইহুদি ধর্মের পরিত্রাতা মোজেসের (Moses) কর্মভূমিও এই শহর। বর্তমানে অবশ্য ইহুদি আধিপত্য সীমাবদ্ধ হয়েছে কোতেল (Kotel) বা পশ্চিম দেওয়ালের (Western Wall) সীমানায় বিভক্ত হয়ে গিয়ে। আর সেই দেওয়ালের আড়ালে রয়েছে সর্বাধিক পুণ্যভূমি- হোলি অফ হোলিজ (Holy of Holies)। ইহুদি মতে, এখানেই রয়েছে সেই প্রাচীনতম পাথর, যাকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর উৎপত্তি শুরু হয়েছিল। আবার সেই পাথরের উপরেই আব্রাহাম (Abraham) তাঁর পুত্র ইজাককে (Isaac) উৎসর্গ করতে উদ্যত হয়েছিলেন ঈশ্বরের সমীপে।
advertisement
পুনরুত্থানের পুণ্যভূমি
জেরুজালেমের ইতিহাস সব চেয়ে বেশি আবর্তিত হয়েছে ঈশ্বরের পুত্র যিশু খ্রিস্টকে (Jesus Christ) ঘিরে, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ প্রকাশ করা চলে না। জেরুজালেমের বেথলেহেমে তাঁর জন্ম, এর পর প্রাপ্তবয়সে তিনি এখানেই ফিরে আসেন ধর্মপ্রচার করতে। এখানেই তাঁর ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু এবং সমাধি থেকে পুনরুত্থানের অলৌকিক ঘটনা ঘটেছিল বলে বাইবেল (Bible) বর্ণনা করে থাকে। এই সব ঘটনা, বিশেষ করে তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত ঘটনাবলীর সাক্ষী দিচ্ছে পবিত্র সাফালকার গির্জা (Church of the Holy Sepulchre)। এই গির্জা যে বিশাল অংশ জুড়ে অবস্থিত, বলা হয় যে তা গলগথা অর্থাৎ যিশুর ক্রুশবদ্ধ হওয়ার স্থানের সন্নিকটে, যে গিরিগুহায় তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়েছিল তা বর্তমানে এই গির্জার ভূমির অন্তর্গত। ফলে, সঙ্গত কারণেই একে ঘিরে খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের উন্মাদনা রয়েছে।
advertisement
মর্ত্য থেকে স্বর্গে সশরীরে যাত্রা
সব শেষে বাদ দেওয়া যায় না মুসলিম ধর্মের ইতিবৃত্তও। বলা হয় যে হজরত মহম্মদ (Prophet Muhammad) যখন মক্কা থেকে বোরাক নামের অশ্বে সওয়ার হয়ে নিশাকালে সশরীরে স্বর্গে পৌঁছেছিলেন, তখন তিনি এই স্থানে সমস্ত নবীদের সঙ্গে সম্মিলিত ভাবে প্রার্থনায় যুক্ত হয়েছিলেন। সেই স্থানটিতে বর্তমানে গড়ে উঠেছে ইসলাম ধর্মের অন্যতম পবিত্র তীর্থক্ষেত্র অল-অকসা মসজিদ (Al-Aqsa Mosque)। পবিত্র কোরানেও (Quran) একাধিকবার এই নগরীর পবিত্রতার উল্লেখ রয়েছে। সব মিলিয়ে, বিশ্বের আদি ধর্মগুলির মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে জেরুজালেম, কোনওটির চেয়ে কেনওটিরই প্রাধান্য কম বা বেশি নয়।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিদেশ/
কেন খ্রিস্টান, ইহুদি আর মুসলিমরা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়েছে জেরুজালেমের অধিকার নিয়ে
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement