Coronavirus Pandemic| মেয়েটার কচি হাতে খেলনা আর মুখে খাবার তুলে দিতে গিয়ে মনে হয় আর কতদিন পারব এই ভাবে?

Last Updated:

উত্তেজিত ভাবে একজন কাউকে বলছে, কোন এক নগ্ন বৃদ্ধা নারীকে করোনায় মৃত্যুর পর ফিউনারেল হোম নিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে৷

করোনার এখন এপিসেন্টার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ মৃত্যু মিছিল, কান্না৷ এবং আশ্চর্য রকম স্তব্ধতাও৷ করোনা ভাইরাসের হত্যালীলায় বাকরূদ্ধ বিশ্বের বৃহত্তম শক্তি৷ লকডাউনে জীবনযাত্রার অবস্থা কি ভারতের মতোই? ঠিক কী রকম পরিস্থিতি মার্কিন মুলুকে? সুদূর নিউ জার্সি থেকে লিখলেন  ঋতুপর্ণা ভট্টাচার্য৷
এই লেখাটা যখন লিখছি, আজকের দিনে নিউ ইয়র্কের করোনা রোগীর মৃত্যুসংখ্যা সর্বোচ্চ৷ সেই দেশ করোনা মহামারীর শীর্ষে! আমার বাড়িটা হাডসন নদীর উল্টোদিকে, নিউ ইয়র্ক থেকে আধঘণ্টা দূরে উত্তর নিউ জার্সিতে৷ এখানে কেউ কাউকে জিজ্ঞেস করিনা এখন, “কেমন আছ?” কেবল নিভৃতে ফেসবুক আর মোবাইলে চোখ রাখি৷ স্ট্যাটাস আপডেট দেখলে ভাল লাগে৷ চেনাজানা সকলে ভালই আছে বুঝতে পারার সেটাই যেন একমাত্র উপায় এখন৷
advertisement
advertisement
প্রতিদিন অজস্র দুশ্চিন্তার মেসেজ, ইমেল, ফোন আসে দেশ থেকে৷ আজকাল এড়িয়ে যেতে ইচ্ছে করে৷ ইন্টারনেট খুললেই ইচ্ছে হয় কোথায় কত আক্রান্ত, আর কত মৃতের সংখ্যা সেগুলোই লক্ষ্য করি বারবার৷ মেয়েটার কচি হাতে খেলনা আর মুখে খাবার তুলে দিতে দিতে মনে হয় আর কতদিন পারব এই ভাবে? যে ভাবে শুনছি আশেপাশে বন্দুক কিনছে সবাই, আগাম রুক্ষ দিনের ভয়ে? করোনা না-মারলেও অর্থনৈতিক মন্দা কি বাঁচতে দেবে? যারা অভিবাসী তাদের তো আরও বেশি ধুকপুকুনি৷ কবে করোনার জেরে কোন আইনের পরিবর্তন আসবে, এই দেশের পাট চুকিয়ে তখন হঠাত্‍ যদি ফিরতে হয়!
advertisement
রাস্তাঘাট শুনশান রাস্তাঘাট শুনশান
জানলা বন্ধ করতে গিয়ে বাইরে থেকে কানে আসে আমেরিকান গলার স্বর ৷ উত্তেজিত ভাবে একজন কাউকে বলছে, কোন এক নগ্ন বৃদ্ধা নারীকে করোনায় মৃত্যুর পর ফিউনারেল হোম নিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে৷ সেই বৃদ্ধার ছেলেমেয়েরা কেউ খোঁজ নেয়নি৷ ফোনে কথা বলা লোকটি সম্ভবত তাঁর জামাই৷ এই তো জীবন!
advertisement
কর্তাকে নিয়মিত অফিসে যেতে হচ্ছে৷ প্রাণ হাতে করে যাওয়া আসা যেন! ফিরেই সাফাইয়ের হিড়িক৷ নিজেকে৷ তারপর প্রায় অ্যালকোহলে চান করাচ্ছে নিজের ওয়ালেট, গাড়ির চাবি, ল্যাপটপ-- সবকিছু৷ বাইরের জামাকাপড় ঠিক কুষ্ঠরোগীর মত দূরে ছুড়ে ফেলে রাখা হচ্ছে আলাদা করে৷ অফিসেও নাকি ক্যাফেটেরিয়াতে লোক দেখা যায় না আজকাল৷ যে যার মত কাজটুকু সেরে বাড়ি চলে যেতে পারলেই বাঁচে৷
advertisement
নিত্যদিনের সামগ্রী এখনও পাচ্ছি৷ তবে দোকানের ভেতরে ক্রেতার সংখ্যা সীমিত রাখার জন্য বাইরে বিশাল লাইন৷ অনেক কিছু কেনাকাটার ওপরে বিস্তর বিধিনিষেধ৷ পাওয়াও যাচ্ছে না বেশ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস, যেমন প্যাকেজড পানীয় জল, বাচ্চাদের ডায়াপার, খাবার, বেবি ওয়াইপস, শুকনো খাবার ইত্যাদি৷ অনেক জায়গায় আবার ভারতীয় গ্রসারি স্টোর সব বন্ধ বেশ কিছুদিনের জন্য৷ যে দেশে রান্নার তেল অবধি অনলাইন কিনেছি এক সময়, সেই অনলাইন ডেলিভারিতেও চলছে চরম সঙ্কট৷
advertisement
বাচ্চাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গেলেও ভয় করছে৷ চালু হয়েছে টেলিমেডিসিন৷ অসুস্থ বাচ্চাকে ডাক্তাররা দেখছেন না অনেকেই নিজেদের ক্লিনিকে৷ ভিডিও কলে চিকিত্‍সা৷ সিরিয়াস মনে হলে হাসপাতাল৷
একজন বন্ধু বলল মাস্ক পায়নি কোথাও৷ টিশার্ট কেটে হাতেই নাকি বানিয়ে নেওয়ার উপায় পেয়েছে অনলাইনে|৷ বেঁচে থাকা যে কী ভীষণ জরুরি একটা অভ্যেস! ভেবেছিলাম চেরি ব্লসম উত্‍সবে যাব ওয়াশিংটনে৷ আধ গোলাপী সাদা রংয়ে ঢেকে থাকবে গাছগুলো সব! ঝরেও গেছে এখন হয়ত৷
advertisement
বাইরে বেরোনো হয়নি তাও হয়ত দু’সপ্তাহ হয়ে গেছে প্রায়৷ মাঝেমাঝে ড্রাইভিং লাইসেন্সটায় হাত বুলিয়ে ফেলি বাচ্চাগুলো একা একা খেলে বেড়ায় তখন আমার বাড়ির আশেপাশে৷ কারও হয়ত দাদু, কারও মা-বাবা একটু সঙ্গ দিচ্ছে বাধ্য হয়ে |
দু’একটা পাখি হঠাত্‍ উড়ে যায়৷ ওইটুকু মুক্তি আমার চোখে লেগে থাকে এই দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে, সেই উন্নত আলোকিত দেশ যার ট্যাগলাইন ছিল “আমেরিকান ড্রিম”!
লেখক বিবাহসূত্রে নিউ জার্সির বাসিন্দা
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিদেশ/
Coronavirus Pandemic| মেয়েটার কচি হাতে খেলনা আর মুখে খাবার তুলে দিতে গিয়ে মনে হয় আর কতদিন পারব এই ভাবে?
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement