#লন্ডন: সারা জীবন যাবতীয় খরচ বহন করতে হবে বাবা-মাকে। দিতে হবে সমস্ত আর্থিক সাহায্য। এবার এমনই দাবি তুলে মামলা করলেন ইংল্যান্ডের বাসিন্দা ফইজ সিদ্দিকি (Faiz Siddiqui)। মজার বিষয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করার পরও এখনও বেকার রয়েছেন সিদ্দিকি। তবে, জীবনযাত্রার মানের সঙ্গে কোনও রকম আপোস করেননি তিনি। উল্টে বাবা-মায়ের কাছ থেকেই অর্থ সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন। কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মাকে।
Daily Mail-এর এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে সেন্ট্রাল লন্ডনের হাইড পার্ক এলাকায় একটি বিলাস-বহুল ফ্ল্যাটে বসবাস করেন ফইজ সিদ্দিকি। বাড়িটি কিনেছিলেন তাঁর বাবা-মা। যার দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১০,১৩,৬৪,৯১৪ টাকা। তবে, এই ঝাঁ-চকচকে এলাকায় এত দামি বাড়িতে থেকেও নিজে একটি টাকাও খরচ করেন না। এমনকি ফ্ল্যাটের ভাড়াও দেন না। উলটে প্রতি বার সপ্তাহান্তে বাবা-মায়ের কাছ থেকে ৪০,৫৪৮ টাকা আদায় করে নেন হাতখরচ হিসেবে।
বর্তমানে দুবাইতে রয়েছেন সিদ্দিকির বাবা জাভেদ। তাঁর বয়স হয়েছে ৭১ বছর। সিদ্দিকীর মায়ের নাম রক্ষন্দা। তাঁর বয়স ৬৯ বছর। ছেলের কথায়, বাবা-মায়ের প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। যদি বাবা-মা টাকা দেওয়ার প্রস্তাবে রাজি না হন, তাহলে বিষয়টি গুরুতর আকার নিতে পারে। কারণ এটি মানবাধিকার লঙ্ঘণ। এ নিয়ে উচ্চ আদালত পর্যন্ত মামলা চালিয়ে যাবেন তিনি।
তবে টাকার জন্য মামলা করা সিদ্দিকির কাছে নতুন নয়। এর আগেও বেশ কয়েকটি মামলায় জড়িয়েছেন তিনি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে টিউশন, খারাপ পড়ানো, অপর্যাপ্ত পরিকাঠামো-সহ একাধিক বিষয়ে অভিযোগ তুলে মামলা করেন তিনি। দাবি করেন, তিনি না কি মানসিক অবসাদে ভুগছেন। এর জেরে প্রায় ১ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণও চেয়ে বসেন সিদ্দিকি। বছর তিনেক আগে এই ঘটনা রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিল। তবে আদালতের তরফে সিদ্দিকির এই মামলা ও ক্ষতিপূরণের দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়।
এদিকে, ছেলের একের পর এক মামলায় রীতিমতো ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে উঠেছেন বাবা-মা। তাঁদের কথায়, দিন দিন ছেলের দাবি ও চাহিদা বেড়েই চলছে। যা অযৌক্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার সমস্ত টাকা দেওয়া বন্ধ করতে হবে। দিনের পর দিন ছেলের চাহিদা পূরণ করতে গিয়েই আজ এই অবস্থা!
প্রসঙ্গত, গত বছর ফ্যামিলি কোর্টে মামলাটি খারিজ হওয়ার পর ফের কোর্ট অফ আপিলে সিদ্দিকির মামলার শুনানি হতে চলেছে। The Sun পত্রিকায় এ নিয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্টও প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই মামলা অত্যন্ত বিশেষ ও স্পর্শকাতর। এই মামলার সূত্র ধরে ব্রিটেনে বাবা-মায়ের অধিকার ও সন্তানের প্রতি তাদের কর্তব্য নিয়েও একাধিক ইস্যু উঠে আসছে। মাল্টিপল চাইল্ড মেইনটেনেন্স আইন নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আপাতত দেখার, ফইজের দাবি পূরণ হয় কি না!
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Oxford university, Unemployment