Howrah: ধারালো তলোয়ারের উপর শুয়ে সন্ন্যাসী! ভয়ঙ্কর রীতি মেনে আজও চলে এই ধর্মরাজের পুজো
- Published by:Soumabrata Ghosh
Last Updated:
প্রায় ২৩০ বছরের রীতি মেনে ধর্মরাজ পুজো পাঁচলার গঙ্গাধরপুর গ্রামে। পুজো উপলক্ষে শালেভর ও বিভিন্ন প্রাচীন রীতি আজও অক্ষত।বাংলার গ্রামীণ দেব দেবীর অন্যতম হল ধর্মরাজ।
#হাওড়া : প্রায় ২৩০ বছরের রীতি মেনে ধর্মরাজ পুজো পাঁচলার গঙ্গাধরপুর গ্রামে। পুজো উপলক্ষে শালেভর ও বিভিন্ন প্রাচীন রীতি আজও অক্ষত।বাংলার গ্রামীণ দেব দেবীর অন্যতম হল ধর্মরাজ। গ্রামাঞ্চলে সাধারণত ধর্মরাজের আরাধনা হয়ে থাকে জাঁকজমকপূর্ণ, পুজো উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয় শালেভর। মূলত চৈত্র বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ আষাঢ় এই চার মাসে বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত হয় গাজন উৎসব। শিব, মনসা ঠাকুরের পাশাপাশি ধর্মরাজের পুজ উপলক্ষেও গাজন অনুষ্ঠিত হয়। গাজন উৎসবে দেখা যায় দেবতাকে সন্তুষ্ট করতে সন্ন্যাসীরা নিজেদের দেহে বাণফোড়ার মত বিভিন্ন রকম কষ্ট করে। সেরকমই এই গাজন উৎসব অর্থাৎ ধর্মরাজ পূজোয় সন্ন্যাসীরা শালেভরের মাধ্যমে ধর্মরাজকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেন। সাতটি আস্ত তলোয়ার সারি সারি সাজানো বাঁশের উপর কলাগাছের অংশ দিয়ে বিশেষ উপায় লাগানো থাকে। পূজোর ১২ দিন আগে থেকে বিভিন্ন নিয়ম ৯ দিন আগে থেকে শুরু হয় গাজনের গান। যদিও এই ধর্মরাজ পূজোয় বহু মহিলা ভক্ত উপোষ করেন তবে পুরুষেরা শালেভরে অংশগ্রহণ করে শুধুমাত্র। সন্ন্যাসীরা সন্ন্যাস গ্রহণ করলে কম পক্ষ একদিন মালাসা রাখতে হয় তার পর দুদিন নির্জলা উপবাস। গ্রামের সমস্ত বাড়ি বাড়ি সন্ন্যাসীরা হাজির হন, দেবতার নাম নিয়ে সেইসঙ্গে পরিবারের মঙ্গল কামনায় পরিবারের বসত বাড়ির ছাদের উপর দিক করে ছুড়ে দেওয়া হকের গুঁড়ি।
পুজোর আগের দিন অনুষ্ঠিত হয় স্নানযাত্রা বা মুক্তস্নান এই স্নান মূলত ধর্মরাজ কে নিয়ে যাওয়া হয় স্নানে। সন্ন্যাসীদের সাতটি করে তলোয়ারকেও স্নান করানো হয়। স্নান পুকুরের জল এলাকার মানুষ সংগ্রহ করে রাখত প্রবৃত্ত জল হিসেবে। স্থানীয়দের কথায় জানা যায়,এক কালে কঠিন কঠিন রোগ নিরাময় হত এই জলে। সেই বিশ্বাস আজও মানুষের মধ্যে। তাই ওই দিন দেখা যায় বিভিন্ন পাত্রে জল সংগ্রহ করতে মানুষকে। দুইদিন শুকনো নির্জলা উপবাস করে সন্ন্যাসীদের শালেভর।
advertisement
আরও পড়ুনঃ দীর্ঘ যন্ত্রণার অবসান! দূষণমুক্ত হবে গ্রাম
পাশাপাশি ঝুলঝাপ,বেত খেলা, ধারালো বঁটির উপর ঝাপসহ নানান রীতি আজও প্রচলিত। পূজোর দিন ভোর থেকে শুরু হয় পূজা অর্চনা ও ঝাঁপ। সারা দিন ধরে পূজার্চনা বিভিন্ন রীতি এবং মাটির তৈরি কুমির পুজো। রীতি মেনে পুজোর দিন বিকালে ঘটির উপর ফুল দিয়ে মন্ত্র পাঠ, যতক্ষণ সেই ঘটির মাথায় রাখা ফুল নিচে না পরছে ততক্ষণ চলবে মন্ত্র পাঠ। চলিত ভাষায় যেটাকে বলা হয় ফুল কাছড়ানো। ফুল কাছরানো সম্পূর্ণ হলে শুরু হবে শালেভর। শালে তলোয়ারের উপর সন্ন্যাসী জোড় হাত করে দেবতার নাম নিতে থাকেন।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুনঃ মাইক্রো ছবি! তাও আবার ট্যাবলেটের উপর! অবাক কান্ড সৈকতের
নাম নিতে নিতে শাল দেবতার মন্দির প্রদক্ষিণ। কম পক্ষে ৩ পাক প্রদক্ষিণ করতে হয়ে নিয়ম মেনে বা তার চেয়ে বেশি। গঙ্গাধরপুর গোন্ডলপাড়া দুটি গ্রামের মিলিত এই ধর্মরাজ পুজোতে প্রতিবছর ১২-১৫ থেকে ৩০ জন পর্যন্ত সন্ন্যাসী হয় গ্রামের মানুষ। শাল শেষে অনুষ্ঠিত হয় আবার ঝাঁপ, মূল সন্ন্যাসীকে ধারালো বঁটির উপর ঝাঁপ দিতে দেখা যায়। প্রায় মাঝ রাত পর্যন্ত চলে পূজার্চনা পরদিন নই হাড়ি বা ঘট ডুবিয়ে গাজন উৎসবের সমাপ্তি হয়।
advertisement
RAKEAH MAITY
view commentsLocation :
First Published :
July 11, 2022 10:16 PM IST