হাওড়া: প্লাস্টিক বর্জের দাপটে সঙ্কটে জলজ প্রাণীরা। একদিকে যেমন নির্বিচারে গাছ কেটে সবুজ ধ্বংস করা হচ্ছে, অন্যদিকে প্রোমোটার ও জমি হাঙরদের দাপটে দ্রুত পুকুর, জলাশয় হারিয়ে যাচ্ছে। শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও জলাভূমি ভরাট হওয়ার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। এদিকে এখনও যেটুকু পুকুর, দিঘি আছে সেগুলো নোংরা আবর্জনা ও প্লাস্টিকে পরিপূর্ণ। এদিকে প্লাস্টিক ডিকম্পোজ হয় না, অর্থাৎ তার পচন নেই। ফলে পরিবেশের সঙ্গে মিশেও যায় না। আর তার ফলে প্রবল সমস্যার মুখে পড়েছে জলজ প্রাণীরা। বস্তুত প্লাস্টিকের দাপটে বহু জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
দিন কয়েক আগে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা গিয়েছিল, একটি বেঙ্গল মনিটর লিজার্ডের মুখে প্লাস্টিক কন্টেনার আটকে গিয়েছে। সে ওই অবস্থাতেই ঘোরাফেরা করছে। তা দেখে স্থানীয় মানুষরা খবর দেয় পশুপ্রেমী সংগঠনকে। তাদের সদস্যদের তৎপরতায় বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর তফসিলি-১ তালিকাভুক্ত বেঙ্গল মনিটর লিজার্ডটির প্রাণ রক্ষা পায়।
আরও পড়ুন: মহাভারতের কর্ণের স্নানের পুকুরকে কেন্দ্র করে শিরুয়া মেলার শুরু, যা রাজবংশীদের কাছে অতি পবিত্র
এটা ব্যতিক্রম ঘটনা নয়। হাওড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে চলেছে। এই প্রসঙ্গে পরিবেশপ্রেমী কৌশিক মুখোপাধ্যায় বলেন, জলজ প্রাণীদের বাঁচানোর ক্ষেত্রে পরিকল্পনার অভাব আছে। পরিবেশে ভারসাম্য দরকার। কিন্তু মানুষের হঠকারি কাজকর্মের ফলে অন্যরা বিপন্ন হয়ে পড়ছে। এক্ষেত্রে মানুষের পাশাপাশি প্রশাসনকেও আরও সজাগ ও সতর্ক হতে হবে। তিনি আরও বলেন, এমন একদিন আসতে পারে যখন ইট, কাঠ, পাথর, টাকা-পয়সা থাকবে, কিন্তু থাকবে না অক্সিজেন! আরেক পরিবেশপ্রেমী শুভজিৎ মাইতি জানান, হাওড়া নিম্ন গাঙ্গেয় এলাকার একটি জেলা। গোটা জেলাটি জলাভূমির উপর দাঁড়িয়ে আছে। শুরু থেকেই এই জেলার মানুষের জীবিকা ছিল চাষবাস। কয়েক বছরে বিভিন্ন কারণে দ্রুত এই জেলায় নগরোন্নয়নের ঢল নেমেছে। কিন্তু তা অনিয়ন্ত্রিতভাবে চলছে। অথচ মানুষ জানেই না তার কতটুকু উন্নয়ন প্রয়োজন। সেই সীমা পার করে গিয়েছে বলেই পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, ক্ষতি হচ্ছে বাস্তুতন্ত্রের।
রাকেশ মাইতি
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।