#কলকাতা: সময় যত এগোচ্ছে, পাল্টাচ্ছে আমাদের লাইফস্টাইল, খাদ্যাভ্যাস, ও বিভিন্ন অভ্যেস। তার ওপরে অতিমারী নিঃসন্দেহে সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকটাই। ওয়ার্ক ফ্রম হোমের একদিকে যেমন ভালো দিক রয়েছে, তেমনই খারাপ দিকও রয়েছে।
রাতের পর রাত জেগে কাজ করা এই কয়েকমাসে অনেকটাই স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে প্রায় সকলের কাছে। বাড়ি থেকে কাজ করার মানসিক চাপও কম নয়। চিকিৎসকরা তাই বার বার বলছেন, এই পরিস্থিতিতে একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যার মধ্যে ডায়াবেটিসের মতো ক্রনিক ডিজিজও বাদ যাচ্ছে না।
এমনিতেই বেশ কিছু সমীক্ষা বলছে, ডায়াবেটিস এখন প্রায় ঘরে ঘরে এবং আগামী কয়েক বছরে এই নিয়ে সচেতনতা না বাড়ালে প্রতি ঘরেই একজন করে ডায়াবেটিক রোগীর খোঁজ মিলবে।
এবার ডায়াবেটিস যেহেতু ক্রনিক ডিজিজ, তাই এই রোগে আক্রান্ত হলে বা ভুগতে শুরু করলে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিস নিয়ে আতঙ্কের চেয়ে সচেতনতা বেশি প্রয়োজন। নিয়ম মানলে, স্বাভাবিক লাইফস্টাইলে বাঁচলে এই রোগ সহজেই সারিয়ে তোলা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি নিয়ম মানার কথা বলছেন তাঁরা-
১) খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও ওজন নিয়ন্ত্রণ- একসঙ্গে বেশি পরিমাণে খাওয়ার পরিবর্তে বারে বারে অল্প অল্প খেতে হবে। কারণ একসঙ্গে অনেকটা খাবার খাওয়া রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এর পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণ ও মেদ কমানোও প্রয়োজন। বিশেষ করে অ্যাবডোমেনের অংশে মেদ কমাতে হবে। কারণ এই অংশে মেদ ইনসুলিনে তারতম্য ঘটায়। টাইপ ২ ডায়াবেটিস সাধারণত বাড়তি ওজনের জন্যই হয়ে থাকে।
২) নিয়মিত শরীরচর্চা করা প্রয়োজন- বাড়িতে বসে কাজ করার ফলে অনেকেরই হাঁটাচলা বা বাইরে বেরোনো হচ্ছে না। এতে ডায়াবেটিস হতে পারে। প্রতি দিন ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করলে, ব্যায়াম করলে এবং অ্যাকটিভ থাকলে ডায়াবেটিসের প্রবণতা কমতে পারে। নাচ, অ্যারোবিকস, সাঁতার বা যোগ ব্যায়াম করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। পাশাপাশি দিনে ৩০ মিনিট অন্তত হাঁটলেও এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
৩) স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে- জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড, মিষ্টিজাতীয় খাবার ও মিষ্টি যে কোনও পানীয় থেকে দূরে থাকতে হবে। ফ্যাটজাতীয় খাবার, খুব নুন আছে এমন খাবারও এড়িয়ে যাওয়া ভালো। এর পরিবর্তে চিকিৎসকরা বাড়িতে বানানো খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। পাশাপাশি, কার্বোহাইট্রেড আছে এমন খাবার খেলে ভালো। তাই ওটস, সবুজ শাক-সবজি ডায়েটে রাখতে হবে।
৪) ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দূরে থাকতে হবে- ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যেস থাকলে ডায়াবেটিসের প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। যদি কারও ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে এই অভ্যেস ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এই অভ্যেস বন্ধ করতে হবে এবং এর পরিবর্তে ঘন ঘন জল পানের প্রবণতা বাড়াতে হবে।
৫) ফ্যাট-ফুড থেকে দূরে থাকতে হবে- অনেক সময় লো-কার্বোহাইট্রেডযুক্ত খাবার সাময়িক ভাবে আমাদের শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে এই নিয়মে চললে শরীর খারাপ হতে পারে ও ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। তাই শরীরে কতটা কার্বোহাইট্রেডের প্রয়োজন, তা জানার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামার্শ নিতে হবে।
৬) জল পান ও ফাইবারজাতীয় খাবার- ঘন ঘন জল পান করতে হবে। ফাইবার আছে এমন খাবার খেতে হবে। তা হলে ইনসুলিনের মাত্রায় সেভাবে পরিবর্তন হবে না!
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।