কাদা-মাটি নিয়ে স্বামীর ফেলে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ আজও করে চলেছেন মণিকা
Last Updated:
#মোহনপুর: মোহনপুরে মণি-মুক্তো, মোহনপুরে মণিকাই মুক্তো। মণিকা পাল। দু’দশক ধরে একার হাতেই ঠাকুর বানিয়ে চলেছেন। কথা ছিল সাত পাকে বাঁধা মানুষটির সঙ্গে জীবনভর সংসার করার। কিন্তু, স্বামী প্রফুল্ল পাল কথা রাখেননি। রাখতে পারেননি। ক্যানসার বাসা বেঁধেছিল শরীরে। সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন স্ত্রী মণিকা। কিন্তু, স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি। স্বামী ছিলেন একমাত্র রোজগেরে। প্রতিমা তৈরি করতেন। ১৯৯৫ সালে পুজোর আগে মারা যান। চোখের জল মুছে স্বামীর সেই অসমাপ্ত কাজ সেদিন সম্পূর্ণ করেছিলেন মণিকা। সেই থেকে ঠাকুর তৈরি শুরু। পুজো এলে তেইশ বছর আগের সে সব কথা মনে পড়ে যায়।
১৯৯৫ সাল থেকে শুরু করেছি। স্বামী অসুস্থ ছিলেন। পুজোর সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। মারা যান। লোক পাওয়া যায়নি। ঠাকুর সব আমিই কমপ্লিট করি ৷ স্বামীর মৃত্যুর পর হাল ধরেছিলেন। সেটা ৯৫ সাল। তারপর থেকে বছর বছর। পশ্চিম মেদিনীপুরের মোহনপুরে মা আসে মায়ের হাত ধরে। মণিকা পাল একার হাতেই প্রতিমা গড়েন।
advertisement
পেশা আছে, নেশা আছে...পেটের দায় আছে...করতেই হবে...একাই করি...কিছু আগে থেকে করে রাখি। কিছু অর্ডার পেলে। কিছু অর্ডার ছেড়ে দিতে হয়। একা করি, লোক নেই,তাই ছেড়ে দিতে হয় অর্ডার ৷ পুজোর মরশুমে তিন মাসে যা আয়, তা দিয়েই সারা বছর পেট চালাতে হয়। লড়াইটা একাই লড়ে যাচ্ছেন মোহনপুরের মৃৎশিল্পী মণিকা।
advertisement
বয়স হচ্ছে, কষ্ট হয়, অসুবিধা হয়...প্রতিবছরই জিনিসের দাম বাড়ছে। সেই হিসেবে প্রতিমার দাম পাচ্ছি না। আগে যে মাটি ১৫০ টাকা গাড়ি, তা এখন হাজার টাকা ৷ স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর পেশাকেই আঁকড়ে ধরেন মণিকা। এতটা পথ পেরিয়ে, এই বয়সে এসে, কখনও কখনও ক্লান্তি চেপে ধরে। কিন্তু, মণিকা জানে, তাঁকে প্রতিমা গড়তেই হবে। না হলে সারা বছর ভাত জুটবে না। মা এসে মায়ের মুখে ভাত তুলে দেয়।
view commentsLocation :
First Published :
October 04, 2018 12:12 PM IST