তন্ত্রমতে পূজিত হন বৈকুণ্ঠপুরের জয়দুর্গা, দেবীর বিসর্জন হয় না, হয় অঙ্গরাগ
Last Updated:
শোনা যায়, এক তান্ত্রিক পুজো শুরু করেছিেলন। বর্ধমানের মহারাজা কীর্তিচাঁদ স্বপ্নাদেশ পেয়ে মন্দির তৈরি করে দিয়েছিলেন। তান্ত্রিক যে রীতিতে পুজো করতেন, সেই নিয়মের বদল হয়নি আজও
#বর্ধমান: বর্ধমানের বৈকুণ্ঠপুরের জয়দুর্গার পুজোর বয়স পাঁচশ বছরেরও বেশি। শোনা যায়, এক তান্ত্রিক পুজো শুরু করেছিেলন। বর্ধমানের মহারাজা কীর্তিচাঁদ স্বপ্নাদেশ পেয়ে মন্দির তৈরি করে দিয়েছিলেন। তান্ত্রিক যে রীতিতে পুজো করতেন, সেই নিয়মের বদল হয়নি আজও। জয়দুর্গার প্রতিমা মাটির। কখনও বিসর্জন হয় না।
ঘরের মেয়ে। তাকে কাছছাড়া করতে চায় না পরিবার। ঠিক তেমনই জয়দুর্গা। বর্ধমানের বৈকুণ্ঠপুর জয়দুর্গাকে আগলে রেখেছে পাঁচশ বছরেরও বেশি সময় ধরে। প্রতিষ্ঠার দিন যে মাটির প্রতিমায় পুজো শুরু হয়েছিল, সেই প্রতিমাই চিরন্তন। প্রতিমাকে বিসর্জন দেওয়া হয় না। নির্দিষ্ট সময় পর অঙ্গরাগ হয়। লোককথা বলে, পুজো শুরু হয়েছিল তান্ত্রিকের হাতে। বাঁকা নদী থেকে প্রতিমা তুলে এনে তালপাতার ঘরে দেবীকে প্রতিষ্ঠা করেন। পরে দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে জঙ্গলে গিয়ে বর্ধমানের মহারাজা কীর্তিচাঁদ সেই ঘর খুঁজে পান। তিনিই জয়দুর্গার মন্দির গড়ে দেন। মৃত্যুর আগে তান্ত্রিক বৈকুণ্ঠপুরের বাসিন্দা তিনকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুজোর দায়িত্ব দেন। সেই থেকে এগারো পুরুষ ধরে পুজো করে আসছে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার। জয়দুর্গার মন্দিরে আজও তন্ত্রমতেই পুজোর রীতি।
advertisement
মহারাজা কীর্তিচাঁদ দান করেছিলেন প্রচুর জমি। সেই জমির আয় থেকেই পুজোর যাবতীয় খরচ মেটানো হয়। তাই জয়দুর্গার সন্ধিপুজোয় রাজার নামে সংকল্প হয়। প্রতিদিন ভোগে মাগুর মাছের টক দিতেই হয় জয়দুর্গাকে।
advertisement
বন্দ্যোপাধ্যায়দের অনেকেই দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে। তবে পুজোর দিনগুলোয় শিকড়ের টান কেউ ভোলেন না। আড্ডা, পংক্তি ভোজে মন্দির চত্বরে হুল্লোড় জমে। জয়দুর্গার পুজোয় দশমীতে ঘট বিসর্জনের রীতি। পরদিন থেকে ফের নিত্যপুজো শুরু হয়ে যায়। সারাবছর দিনে অন্নভোগ ,সন্ধেয় শীতল ভোগ নিবেদন করা হয়। আবার কবে ঘরের মেয়েকে নিয়ে একসঙ্গে জড়ো হবে সবাই? একটা একটা করে দিন গোনা শুরু করে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার।
view commentsLocation :
First Published :
September 05, 2019 3:08 PM IST

