Covaxin For Kids: শিশুরাও পেতে চলেছে কোভ্যাক্সিন টিকা, কেমন হবে এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া?
- Published by:Piya Banerjee
Last Updated:
Covaxin Side-Effects: তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে সব থেকে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শিশুরাই। তাই শিশুদের জন্য আসছে কোভ্যাক্সিন টিকা। এটা অনেকটাই স্বস্তি দেবে মা-বাবাদের।
#নয়াদিল্লি: দুই থেকে আঠারো বছর বয়সিদের জন্য ভারত বায়োটেকের (Bharat Biotech) করোনা ভ্যাকসিন কোভ্যাক্সিনের (Covaxin) আপৎকালীন ব্যবহারে সুপারিশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের সাবজেক্ট এক্সপার্ট কমিটি (Subject Expert Committee)। এই প্রথম ভারতে শিশু ও কিশোরদের জন্য কোনও কোভিড টিকার জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটি।
ইতিমধ্যেই এই টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সম্পূর্ণ হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতেই ট্রায়াল সংক্রান্ত তথ্য ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (Drugs Controller General of India)-র কাছে জমা দিয়েছে ভারত বায়োটেক। ডিসিজিআই-এর অনুমোদন পেলেই এই টিকার জরুরি ব্যবহার শুরু করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, পর্যায়ক্রমে এই টিকা দেওয়া হবে।
advertisement
যে সমস্ত শিশুদের কো-মর্বিডিটি রয়েছে, তাদেরকেই সবার আগে টিকার ডোজ দেওয়া দেওয়া হবে। জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত মতামত গ্রহণের কাজ শেষ হলে খুব শীঘ্রই শিশুদের জন্য কোভ্যাক্সিনের ছাড়পত্র দিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে পাল (V K Pal) জানিয়েছেন, শিশুদের কবে থেকে সেই টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে, তা এখনও স্থির করেনি সরকার। জোগানের উপর নির্ভর করবে শিশুদের টিকাকরণ প্রক্রিয়া।
advertisement
advertisement
ইতিমধ্যেই টিকাকরণে ১০০ কোটি ডোজের মাইলস্টোন অতিক্রম করেছে ভারত। টিকাকরণ শুরু হওয়ার ৯ মাসের মধ্যেই এই সাফল্য এসেছে। দেশে এখনও পর্যন্ত ১০১ কোটি ৩০ লক্ষেরও বেশি কোভিড টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির সহযোগিতায় কোভ্যাক্সিন তৈরি করেছে হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কোভ্যাক্সিনের জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছিল ভারত সরকার। তবে এই টিকাকে এখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুমোদন দেয়নি। তবে ভারত বায়োটেকের তরফে জানানো হয়েছে যে, প্রাপ্তবয়স্কদের টিকার মতো একই ভাবে কাজ করবে ২ বছর থেকে ১৮ বছর বয়সিদের কোভ্যাক্সিন টিকা।
advertisement
বাচ্চাদের কি টিকার কম ডোজ লাগবে?
করোনাভাইরাসের (Coronavirus) বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রয়োজনীয় অনাক্রমতা অর্জনের জন্য ২৮ দিনের ব্যবধানে কোভ্যাক্সিনের দু'টি ডোজ নিতে হয়। যদিও কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় বাচ্চাদের একটিই ডোজ অথবা পরিমাণে কম ডোজের প্রয়োজন হতে পারে। ফলে ভারতে শিশুদের এই মুহূর্তে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তা সত্ত্বেও কোভ্যাক্সিন টিকা শিশুদের ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে ব্যবহারের পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। প্রাপ্তবয়স্কদের মতো বাচ্চাদেরও কোভিডের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করতে দুই ডোজ টিকার প্রয়োজন হবে।
advertisement
টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কী কী?
কোভ্যাক্সিন অন্যান্য টিকার তুলনায় কম পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া (Side-Effects) সৃষ্টি করে। বাচ্চাদের উপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রেকর্ড করা সব চেয়ে সাধারণ পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে ফ্লু-র মতো উপসর্গ, যা প্রত্যাশিত এবং প্রতিক্রিয়াজনিত হিসেবে বিবেচিত হয়।
advertisement
যে হেতু পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াগুলি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়, তাই কিছু পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া (যা প্রত্যাশিত) হতেই পারে। তার মধ্যে রয়েছে জ্বর, ইনজেকশন দেওয়ার জায়গায় ব্যথা ও লাল হয়ে যাওয়া, ঘুম-ঘুম ভাব, শরীরে ব্যথা এবং ক্লান্তি ইত্যাদি।
advertisement
এখনও পর্যন্ত, কোভ্যাক্সিনের বিরূপ পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কিছু রেকর্ড মেলেনি। তবে একটি পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা হবে। যে বাচ্চাদের শারীরিক অসুস্থতা আছে, তাদের ক্ষেত্রে আরও যত্নের প্রয়োজন হতে পারে।
যে সব বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের কি টিকা নেওয়া নিরাপদ?
যে সব বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই কম, টিকা নেওয়ার পর কোভিডের বিরুদ্ধে সঠিক প্রতিক্রিয়া না-ও পাওয়া যেতে পারে। বাচ্চারা আরও দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। তাই বাবা-মায়েরা টিকা নেওয়ার ব্যাপারে দ্বিধায় পড়তে পারেন। তবুও এটা মনে রাখা উচিত, যে সমস্ত বাচ্চারা ঝুঁকিতে রয়েছে, তাদের তাড়াতাড়ি টিকা দেওয়ানো উচিত।
শিশুদের জন্য কোভ্যাক্সিন কি ন্যাজ়াল টিকা?
কোভাক্সিন ত্বকের মধ্যে দিয়েই দেওয়া হবে। ভারত বায়োটেক ন্যাজ়াল টিকা (Nasal Vaccine) তৈরির জন্যও কাজ করছে, যেখানে ইনজেকশন ডোজ নাসিকা গহ্বরের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে।
যে হেতু নাকের মাধ্যমে টিকা দেওয়া হবে, তাই এই ধরনের টিকা প্রথম সারির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে সক্ষম। তাই ন্যাজ়াল টিকা বাচ্চাদের জন্য একটি ভাল বিকল্প। এই ন্যাজ়াল টিকা আগামী বছরের শেষের আগেই ব্যবহারের জন্য পাওয়া যাবে। এই টিকার এখনও ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়নি।
কোভ্যাক্সিনের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের জন্য কি অপেক্ষা করা উচিত?
যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোভাক্সিনকে জরুরি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে এটি এখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পায়নি। বর্তমানে, বিশ্বব্যাপী শুধুমাত্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দ্বারা অনুমোদিত টিকা দেওয়া হয়। যদিও কোভ্যাক্সিন তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এবং কার্যকারিতার প্রয়োজনীয় মানগুলি পূরণ করে বলেই জানা গিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়া গেলে শুধু অনেক আশ্বাসই মিলবে না, বরং ব্যাপক ভাবে গ্রহণযোগ্যতার পথও তৈরি করবে
আর কোন কোন সংস্থা শিশু ও কিশোরদের জন্য টিকা তৈরি করেছে বা করছে?
জনসন অ্যান্ড জনসন (Johnson & Johnson ):
১২ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের উপর তাদের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য অনুমতি চেয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন। গত ১৭ অগাস্ট সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের কাছে ওই অনুমতি চাওয়া হয়। ইতিমধ্যেই প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য জনসন অ্যান্ড জনসনের সিঙ্গল ডোজ টিকায় ছাড়পত্র দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া।
সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (SII):
সেরাম ইনস্টিটিউট ২ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের জন্য টিকা তৈরি করেছে। এর নাম নাম কোভোভ্যাক্স (Covovax)। ইতিমধ্যেই এই টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী বছরই এই টিকা ছাড়পত্র পাবে। সেরাম ইনস্টিটিউটের কর্ণধার আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই কোভোভ্যাক্স অনুমোদন পেয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
জাইডাস ক্যাডিলা (Zydus Cadila):
গুজরাতের সংস্থা জাইডাস ক্যাডিলার টিকা জাইকভ ডি (ZyCoV-D) ১২-১৭ বছর বয়সিদের উপর প্রয়োগের ছাড়পত্র পেয়েছে। তারা এখন শিশুদের টিকা নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
বায়োলজিক্যাল ই (Biological E):
এই সংস্থাটিও তাদের কোর্বেভ্যাক্স (Corbevax) টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চালাচ্ছে। ৫-১৮ বছর বয়সিদের এই টিকা দেওয়া যাবে। বায়োটেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্স কাউন্সিল (BIRC)-এর সঙ্গে যৌথ ভাবে এই টিকা তৈরি করেছে বায়োলজিক্যাল ই।
Location :
First Published :
October 23, 2021 10:31 PM IST