EXPLAINED | Omicron Vs Delta: ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে ডেল্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়, জানুন বিশদে
- Published by:Raima Chakraborty
Last Updated:
যারা ওমিক্রন প্রজাতি দ্বারা সংক্রামিত, তাদের শরীরে ডেল্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। (EXPLAINED | Omicron Vs Delta)
#নয়াদিল্লি: এখনও পর্যন্ত আমরা জানি যে ওমিক্রন (Omicron)একটি অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য প্রজাতি, যা প্রাকৃতিক সংক্রমণ এবং টিকা নেওয়ার ফলে তৈরি হওয়া প্রতিরোধকে এড়াতে পারে। ওমিক্রনের কারণে বিশ্ব জুড়ে করোনার তৃতীয় ঢেউ সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রজাতি আগেরগুলির চেয়ে যথেষ্ট শক্তিশালী, আগের চেয়ে বেশি লোককে সংক্রমিত করছে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় জানানো হয়েছে যে দক্ষিণ আফ্রিকায় (South Africa) প্রথম হদিশ মেলা এই প্রজাতিতে সংক্রামিত হওয়ার পরে শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলি (Antibody) ডেল্টা প্রজাতির (Delta Variant) বিরুদ্ধে অনাক্রম্যতা (Immunity) প্রদান করতে পারে। ডেল্টা প্রজাতি ভারত-সহ বিশ্বে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য দায়ী ছিল।
ওমিক্রন অ্যান্টিবডি ডেল্টা থেকে রক্ষা করতে পারে: দক্ষিণ আফ্রিকার গবেষণার ফলাফলগুলি থেকে জানা গিয়েছে যে যারা ওমিক্রন প্রজাতি দ্বারা সংক্রামিত, তাদের শরীরে ডেল্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ফলস্বরূপ, ওমিক্রন প্রজাতি ডেল্টাকে স্থানচ্যুত করতে পারে। এই সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীদের দ্বারা প্রকাশিত গবেষণাটি ১৫ জনের উপর করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ওমিক্রনের উপসর্গ প্রকাশ ত্বকেও? জেনে নিন কী কী লক্ষণ থাকলে হতে পারে ওমিক্রন! জানুন ও সতর্ক থাকুন...
গবেষণায় কী পাওয়া গিয়েছে:
advertisement
advertisement
গবেষণায় জানা গিয়েছে যে ওমিক্রন দ্বারা সংক্রামিত মানুষের অ্যান্টিবডি প্রতিক্রিয়া ডেল্টা প্রজাতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা চারগুণ বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যায়। অন্য প্রজাতি দ্বারা সংক্রামিত হওয়ার দুই সপ্তাহ পরে এটি ঘটে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ওমিক্রন দ্বারা পুনরায় সংক্রমণের ঝুঁকি চোদ্দগুণ বেড়েছে। যেহেতু এটি একটি ছোট গবেষণা ছিল, যা এখনও পুরোপুরি পর্যালোচনা করা হয়নি, তাই এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায় না যে ওমিক্রন সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট অ্যান্টিবডির কারণে বা টিকা (Vaccination) নেওয়ার কারণে বা পূর্ববর্তী সংক্রমণ থেকে প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে সুরক্ষা বৃদ্ধি পেয়েছে কি না।
advertisement
এটার মানে কী?
গবেষণার সঙ্গে যুক্ত একজন গবেষক জানিয়েছেন যে গবেষণার সময় সংক্রমণ ছড়ানোর নিরিখে ওমিক্রন প্রজাতি ডেল্টা প্রজাতিকে স্থানচ্যুত করার বিষয়টি দেখা গিয়েছে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ওমিক্রন প্রজাতি ইলিসিট ইমিউনিটি (Elicit Immunity) তৈরি করে। যা ডেল্টা প্রজাতি থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। বিশেষজ্ঞ আরও উল্লেখ করেছেন যে ওমিক্রন যদি ডেল্টাকে স্থানচ্যুত করে এবং অতীতের তুলনায় হালকা সংক্রমণ হয়, তবে গুরুতর কোভিড রোগের প্রকোপ হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: কেন আধার নম্বরের সঙ্গে ভোটার কার্ডের সংযুক্তিকরণ চায় নির্বাচন কমিশন?
ডেলমিক্রনের (Delmicron) ক্রমবর্ধমান হুমকি: এই গবেষণায় উঠে আসা তথ্য ডেলমিক্রন মামলার বৃদ্ধি বুঝতেও সাহায্য করতে পারে। এটি ডেল্টা এবং ওমিক্রন ভাইরাসের সংমিশ্রণ দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। ইউরোপের বহু দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ার পিছনে এটাই দায়ী। গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে ওমিক্রন এবং ডেল্টার সংমিশ্রণ হওয়ায় ডেলমিক্রন আরও সংক্রামক এবং সংক্রমণযোগ্য হতে পারে। এটি আলফা, বিটা এবং অন্য প্রজাতির মতো করোনাভাইরাসের একটি নতুন রূপ নয়। এটি দু'টি বিদ্যমান স্ট্রেন- ডেল্টা এবং ওমিক্রনের সংমিশ্রণ। মহারাষ্ট্রের কোভিড-১৯-এর (COVID-19) টাস্ক ফোর্সের সদস্য শশাঙ্ক জোশী জানিয়ছেন, এটি ভাইরাসের নতুন কোনও প্রজাতি নয়। আসলে ব্রিটেন ও আমেরিকার একাধিক জায়গায় একই সঙ্গে করোনার ডেল্টা এবং ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট চোখ রাঙাচ্ছে। সুনামির মতো ছড়িয়ে পড়া দু'টি ভাইরাসের দাপট একসঙ্গে বোঝাতেই ডেল্টা ও ওমিক্রনকে জুড়ে ডেলমিক্রন শব্দ জন্ম নিয়েছে। কোভিডের এই দ্বিগুণ রূপ পশ্চিমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ডেল্টা প্রজাতি চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করেছিল এবং প্রাথমিকভাবে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য দায়ী ছিল। বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ নিয়েছে এই প্রজাতি। ডেলমিক্রনে গুরুতর সংক্রমণ এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এছাড়াও, সংক্রমণ-পরবর্তী দীর্ঘমেয়াদী জটিলতাও থাকতে পারে। সেই জটিলতাগুলি হল-মাথা ঘোরা, পেশিতে ব্যথা এবং চুল পড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
advertisement
ডেলমিক্রনের উপসর্গগুলি কী কী?
ডেলমিক্রন করোনাভাইরাসের ডেল্টা এবং ওমিক্রন সংস্করণ একত্রিত হয়ে তৈরি হয়েছে। তাই এটি অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য। গুরুতর জটিলতার জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। এর প্রকৃতি সম্পর্কে বিশদে জানার জন্য আরও অনেক গবেষণা প্রয়োজন। যতদূর জানা গিয়েছে, তাতে ডেল্টা এবং ওমিক্রনের মতো ডেলমিক্রনের সংক্রমণে কমবেশি একই উপসর্গ দেখা যায়। সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে-জ্বর, একটানা কাশি, গন্ধ বা স্বাদের অনুভূতিতে ক্ষতি বা পরিবর্তন, মাথাব্যথা, সর্দি, গলা ব্যথা ইত্যাদি।
advertisement
ভারতে ডেলমিক্রন:
প্রশ্ন হল ডেলমিক্রন কি ভারতেও জাঁকিয়ে বসতে পারে? বিশেষজ্ঞদের দাবি, বর্তমানে এ দেশে ডেল্টার দাপট বেশি। সেই স্থান ধীরে ধীরে দখলের চেষ্টা করছে নয়া 'ওমিক্রন'। আমাদের দেশে দেশে ওমিক্রন প্রজাতিতে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত দেশে এই প্রজাতিতে দেড় হাজারের বেশি আক্রান্ত। ক্রিসমাস ও নববর্ষের সমাবেশের কারণে আগামী দিনে এই সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতে এখনও ডেলমিক্রন কেস রিপোর্ট করা হয়নি। তবে দু'টি ভাইরাস একইসঙ্গে দাপিয়ে ব্যাটিং করবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে উৎসবের মরসুমে প্রত্যেককে সতর্ক থাকারই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ভারতে ওমিক্রন প্রজাতি কীভাবে আচরণ করবে, তা এখনও দেখা যায়নি। কেউ কেউ এমনও বিশ্বাস করেন যে ওমিক্রন ডেল্টার মতো ভারতকে প্রভাবিত করতে পারবে না। ঠিক কী হবে? তা সময়ই বলতে পারবে।
advertisement
মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি:
ওমিক্রন একটি নতুন প্রজাতি, যা মাত্র এক মাস আগে সনাক্ত করা হয়েছিল। সুতরাং, এর প্রকৃতি সম্পর্কে এখনও অনেক কিছু জানা যায়নি। বিশ্বজুড়ে বিশেষজ্ঞরা এটি বোঝার চেষ্টা করছেন এবং এর উপর টিকার কার্যকারিতা খতিয়ে দেখছেন। সেই সময় পর্যন্ত, বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তাকালে নিজেকে রক্ষা করার জন্য টিকা নেওয়া এবং সমস্ত কোভিড বিধি মেনে চলা ভালো। টিকা নেওয়া হোক বা না হোক, বর্তমানে সবাই ওমিক্রন সংক্রমণ প্রবণ। নতুন প্রজাতিটি অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য এবং টিকা প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়াতে পারে। এটা বিবেচনা করে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে, মাস্ক (Mask) পরতে হবে। অন্য লোকেদের থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, এমন এলাকা এড়িয়ে চলতে হবে। ভিড়ের মধ্যে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। সম্পূর্ণ টিকা নেয়নি, এমন লোকজনের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে। এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে ওমিক্রন প্রজাতি লুকিয়ে আছে এবং দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে।
Location :
First Published :
January 03, 2022 5:07 PM IST