#কলকাতা: গুজরাতের একটি ছোট শহরে একটি চায়ের দোকান চালানো থেকে দেশ শাসন এবং শেষ পর্যন্ত দেশের সব চেয়ে শক্তিশালী প্রধান হওয়ার যাত্রা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ব্যক্তিত্বের আভা এমনই নিখুঁত দৃঢ় এবং তাঁর দৃঢ়সংকল্প খোদাই করা থাকবে দেশের মানচিত্রে। যখন তিনি বলেন, "একবার আমরা কিছু করার সিদ্ধান্ত নিলে সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কয়েক মাইল এগিয়ে যেতে পারি", তখন তাঁর এই বক্তব্য সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তোলে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর প্রথমবারের মতো দেশ এখন একজন কর্মক্ষম নেতাকে দেখছে, যাঁর ইউএসপি হল নতুন নতুন পরিকল্পনা নেওয়া এবং তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। তিনি অন্যদের মতো নন, যাঁরা জনসাধারণকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিনিয়ত প্রলুব্ধ করেছেন।
আজ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৭১তম জন্মদিন (Narendra Modi Birthday)। আজই তাঁর সেই অনন্য উপাদানগুলির বিশ্লেষণের উপযুক্ত মুহূর্ত, যা বহু বছর ধরে ভারতীয়দের উপর 'মোদি জাদু' টিকিয়ে রেখেছে। কী এমন আকর্ষণ ছিল, যা অতিমারী চলাকালীন মোদির শাসনের প্রতি মানুষের আস্থা ধরে রেখেছিল? মানুষ তাঁর উপর বিশ্বাস কখনও হারায় না। যদি এই দেশের যে কোনও প্রান্তে সার্ভে করা হয়, তাহলে মোদি ফ্যাক্টর হল সেটাই, যেটা দেশের রাজনীতিতে সব৭ চেয়ে বড় পার্থক্য তৈরি করবে। এটা বলার কারণ হল যে কোভিডের (Covid-19) ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে সাধারণ জনতার মনোভাব ছিল যে যত দিন নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) আছেন, তত দিন চিন্তা নেই, খারাপ দিনের শেষ হবে। কারণ তিনি অবশ্যই কোনও না কোনও সমাধান নিয়ে হাজির হবেন। এই আত্মবিশ্বাসের কারণ হল গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী এবং পরে গত ৭ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকাকালীন মোদির রেকর্ড। মানুষের এটা বিশ্বাস ছিল যে বিপদের সময় ওই লোকটি ঠিকই পাশে দাঁড়ানোর ক্ষমতা রাখেন।
শুধু এই বছরের এপ্রিল এবং মে মাসের সেই ভয়াবহ দিনগুলির কথা মনে করা যাক এবং এখন পরিস্থিতি দেখা যাক! কেন্দ্রীয় সরকারের টিকাকরণ কর্মসূচি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছে। যদিও ওরা আমাদের আগে টিকা দিতে শুরু করেছিল। আজ, কেউ খুব ভালো ভাবে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে পারে। চার মাসের ব্যবধানে ৭৫ কোটি ডোজ ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে।
কেন মানুষ মোদীর উপর আস্থা রাখেন?
কারণ এমন কোনও নেতাকে নেই যাঁর উপর সব দিক থেকে মানুষের পূর্ণ আস্থা আছে। তিনি এই বিশ্বাস ও আস্থা টিকিয়ে রাখতে পেরেছেন। মোদি যে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করেছেন, এটা সেদিকেই ইঙ্গিত করে।
মোদীর বিশেষত্ব তাঁর অনন্য পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে
নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রধানমন্ত্রী, কারণ তিনি অপ্রয়োজনীয় ঐতিহ্যগত প্রটোকলের দ্বারা আবদ্ধ নন। তাঁর উদ্দেশ্য জনগণের কাছে দুয়ারে শাসন পৌঁছে দেওয়া। তার জন্য তিনি সরকারের মধ্যে থাকা বাধাগুলি দূর করেছিলেন, যা সিস্টেমকে কুঁড়ে করে তুলেছিল। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে অপ্রয়োজনীয় আইন বিলুপ্ত করা, সাধারণ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ভর্তুকির টাকা দেওয়া, প্রযুক্তি ব্যবহারে মধ্যস্থতাকারীদের অপসারণ ইত্যাদি। প্রকৃতপক্ষে, তিনি দেশ শাসনের অনেক পরিকল্পনার জন্ম দিয়েছিলেন, যা তাঁকে অন্য রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে আলাদা করে দিয়েছে। বাস্তবায়নের কথা তো অনেক দূর, আজকাল বেশিরভাগ নেতাদের এই ধরনের পরিকল্পনা সম্পর্কে কথা বলার-ই সাহস নেই, যা তাঁকে বাকিদের থেকে আলাদা করবে।
আরও পড়ুন- ময়ূরের পালক থেকে জমকালো মুকুট! মোদির মাথায় রাজকীয় সাজ দেখুন এক ঝলকে
১) স্বচ্ছ ভারত (Swachh Bharat): পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা যে জীবনযাপনের অঙ্গ হতে পারে, এই পরিকল্পনা মোদির আগে আর কোনও রাজনৈতিক নেতা নিয়ে আসেননি। মোদির আত্মবিশ্বাস ছিল 'খোলা জায়গায় মলত্যাগ মুক্ত' ভারত গড়ার, যা তিনি লালকেল্লা থেকে ঘোষণা করেছিলেন। প্রচারের এমন একটি গর্জনকারী সাফল্য ছিল যে আজ মানুষের মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে উঠেছে, তাঁরা আরও স্বাস্থ্যকর অবস্থায় বাস করছেন। তিনি তাঁর পূর্বসূরিদের মতো নন, যাঁরা নিজেদের বক্তৃতা এবং স্লোগান দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। মোদি সর্বদা তাঁর পরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়নে বিশ্বাস করেন। তিনি এটিকে একটি মিশন বানিয়েছিলেন এবং এটি সফল করার জন্য নিজেই ঝাঁটা হাতে মাঠে নামেন। পরিচ্ছন্নতা অভিযানকে প্রয়োজনীয় অনুদানের মাধ্যমে শক্তিশালী করা হয়েছিল। স্বচ্ছ ভারত মিশনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য পরিচ্ছন্নতার স্কেলে শহরগুলির জন্য র্যাঙ্কিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। ফলাফল কী হল? ২০১৪ সালের আগে ভারতে যতগুলি পরিচ্ছন্ন শহর ছিল এখন তার থেকে বেশি আছে। আজ আমরা এমন কোনও শহর পাব না যেখানে টয়লেট খুঁজে পেতে আমাদের কালঘাম ছোটাতে হবে।
২) টয়লেটের জন্য প্রচার: মোদির জনপ্রিয়তা এবং জনসাধারণের মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা এই সত্য থেকে স্পষ্ট যে দেশের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে আজ একটি করে শৌচাগার রয়েছে। এর আগে, দেশের ৬০ শতাংশ গ্রামের বাড়িতে প্রজন্ম ধরে শৌচাগার ছিল না। এটা ঠিক যে অধিকাংশ বাড়িতেই টাকা-পয়সার অভাবে শৌচাগারের ছিল না। কিন্তু, আবার এটাও ঠিক যে অনেকেরই সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও প্রচলিত কুসংস্কারের কারণে বাড়িতে শৌচাগার ছিল না। আর এর জন্য প্রধান ভুক্তভোগী হতেন বাড়ির মহিলারা। বাড়িতে শৌচাগারের অভাবে মহিলাদের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হত।। মোদি দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি বদলেছেন, দু'টি ফ্রন্টে কাজ করে। প্রথমত, সরকার এমন দরিদ্র মানুষদের জন্য অনুদান মঞ্জুর করেছিল যারা টাকা ও জলের অভাবে শৌচাগার তৈরি করতে পারেনি। দ্বিতীয়ত, তিনি নিজেই কুসংস্কারে আচ্ছন্ন মানুষদের বোঝানোর দায়িত্ব নেন, যাতে তারা বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করার পক্ষে মত দেয়। মোদি মহিলাদের উৎসাহ দিতেন যাতে তাঁরা বাড়ির পুরুষদের শৌচালয় তৈরির জন্য জোর করতে পারেন। আজকে স্বচ্ছ ভারত মিশনের অধীনে ৯৫ শতাংশেরও বেশি পরিবারে শৌচাগার রয়েছে। ২০১৪ সালে এই হার ছিল ৪০ শতাংশ।
৩) মন কি বাত (Mann ki Baat): মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের জন্য তিনি রেডিওতে মন কি বাত অনুষ্ঠান শুরু করেন। অনুষ্ঠানটির এমন সাফল্য যে যারা রেডিওকে অপ্রয়োজনীয় প্রযুক্তি হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছিল তারাও এখন এর সাফল্য স্বীকার করে। প্রতি মাসের শেষ রবিবার বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী মন কি বাত-এর মাধ্যমে ভাষণ দিতে শুরু করেন। গত লোকসভা নির্বাচনের সময়ে কিছুদিন বাদ দিয়ে গত ৭ বছর ধরে টানা এই অনুষ্ঠানটি চলছে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী সাধারণ মানুষকে পরামর্শ দিতে বলেন এবং রেডিওর মাধ্যমে অনেকের পরিচয় করিয়ে দেন। সব চেয়ে বড় কথা, মোদি কখনই রাজনৈতিক মাইলেজ পেতে এই অনুষ্ঠানের ব্যবহার করেননি।
আরও পড়ুন- জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কিছু না দেখা ছবি, দেখে নিন এক ঝলকে
৪) পড়ুয়াদের সঙ্গে কথাবার্তা: প্রধানমন্ত্রী মোদির এটি একটি অনন্য উদ্যোগ। কারণ অন্য কোনও প্রধানমন্ত্রী কখনও এটি করেননি। তিনি তরুণদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছেন, তাঁদের জীবনে সাফল্য অর্জন এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য চাপ এড়াতে উৎসাহিত করেছেন। পরীক্ষাকে অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। পড়ুয়াদের সঙ্গে এই ধরনের সম্পর্ক আর কোনও রাজনৈতিক নেতার নেই, বিশেষ করে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের সঙ্গে। ছাত্র জীবনের এই ধাপগুলিতে সঠিক কেরিয়ারের পথ বেছে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য কোনও ধরনের চাপ না থাকা বাঞ্ছনীয়। মোদি তাদের কোন ভয় ছাড়াই পরীক্ষার মুখোমুখি হতে বলেছিলেন, কারণ সৎ প্রচেষ্টা সব সময়ে ভবিষ্যতে ফল দেয়।
৫) ফিটনেস: মোদির আগে কোনও নেতা দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অঙ্গ হিসেবে শরীরচর্চাকে চালু করার চেষ্টা করেননি। তিনিই প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি মানুষকে উপযুক্ত ও সুস্থ জীবনযাপনে উৎসাহিত করেন। যোগাসনের বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা থেকেই এটা বোঝা যায়। কারণ, আজ বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত ব্যক্তি, নেতৃবৃন্দ, চলচ্চিত্র তারকা এবং চিকিৎসকদের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ব্যাপক ধুমধাম করে পালিত হয়। মোদির নিরলস প্রাণশক্তি এবং ক্লান্ত না হয়ে কাজ করা অন্য রাজনৈতিক নেতাদের এতটাই উৎসাহিত করেছে যে তিনি এখন দেশের ফিটনেসের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হয়ে গিয়েছেন।
৬) ক্রীড়া সংস্কৃতি: ভারতীয় ক্রীড়াবিদরা যাতে আন্তর্জাতিক প্রশংসা অর্জন করতে পারেন, সেটাই চান মোদি। তিনি বছরের পর বছর ধরে বলছেন যে অলিম্পিক্স গেমসের মতো প্রতিযোগিতায় ভারতের ক্রীড়াবিদদের পদক জিততে হবে। তার জন্য ২০১৪ সাল থেকে খেলাধুলোয় জোর দেওয়া হয়। টোকিও অলিম্পিক্স এবং প্যারালিম্পিক্সে ভারতের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স থেকে স্পষ্ট যে প্রচেষ্টাগুলি ফল দিচ্ছে। ২০২১ সালে এই ইভেন্টগুলিতে ভারতের ঝুলিতে সব চেয়ে বেশি পদক এসেছে। ভারতের নীরজ চোপড়া (Neeraj Chopra) জ্যাভেলিন থ্রো-তে সোনা জিতেছেন। একইভাবে মহিলা ও পুরুষ হকি দল কঠোর পরিশ্রম এবং পরিকল্পনার মাধ্যমে সম্মান অর্জন করেছে। পদক জিততে পারুক বা না পারুক, সে সবে গুরুত্ব না দিয়ে সকল ক্রীড়াবিদের পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন মোদী।
৭) পদ্ম পুরস্কার (Padma Awards): প্রধানমন্ত্রী মোদি এই আকাঙ্ক্ষিত পুরস্কারগুলিকে সত্যিকারের অর্থে ‘আসল ভারতীয় পুরস্কার’ বানিয়েছেন। এর আগে, পদ্ম পুরস্কার তাঁরা পেতেন যাঁরা ক্ষমতাসীন সরকারের আশপাশে থাকতেন অথবা ক্ষমতার অলিন্দে থাকতেন। আগের সরকারের পক্ষপাতমূলক মনোভাবের কারণে এই পুরস্কারগুলির বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে যায়। মোদি আবারও সেই বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে এনেছেন। তার জন্য, কেন্দ্রীয় সরকার একেবারে গ্রাউন্ড লেভেল থেকে বাছাই নীতি শুরু করে এবং সেই সব লোকদের সন্ধান করে যাঁরা সত্যিই জনসাধারণের জন্য কাজ করেন। গত ৭ বছরে পদ্ম পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে অনকে আছেন যাঁরা কখনও খবরের চ্যানেল বা সংবাদপত্রের শিরোনামে আসেননি।
৮) আত্মনির্ভর ভারত (Atmanirbhar Bharat): একজন নেতার জন্য দেশের স্পন্দন বোঝা এবং জনগণের মধ্যে আস্থা জাগানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘আত্মনির্ভর ভারত’ কর্মসূচি দীর্ঘমেয়াদে ভারতকে স্বনির্ভর ও অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী করে তুলবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মনমোহন সিংয়ের (Manmohan Singh) শাসনকালে তুলনায় এখন দেশে বিদেশি বিনিয়োগ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।
৯) নিরাপদ এবং শক্তিশালী ভারত: বালাকোট বিমান হামলার পর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছে ভারতীয় সেনা। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদীদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়েছে। ভারতের ইতিহাসে সেটাই প্রথমবার যখন সন্ত্রাসবাদী হামলার পর দেশ এমন আক্রমণাত্মক মেজাজ নিয়েছিল। বিদেশের মাটিতে দু'বার সন্ত্রাসবাদী লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করে মোদি পাকিস্তানের কাছে ভারতের অভিপ্রায় স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। তিনি এটা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে যদি এই ধরনের হামলা আবারও হয় তবে রেহাই দেওয়া হবে না। শুধু পাকিস্তান নয়, চিনের মতো শক্তিশালী প্রতিবেশীও এই সত্য বুঝতে পেরেছে যে নতুন ভারত নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসবে না।
১০) এমন পরিকল্পনা, যা দরিদ্রদের সমৃদ্ধি এনেছে
মোদির দৃষ্টিভঙ্গি হল সমৃদ্ধি এনে মানুষের জীবনের মান উন্নত করা। বিনামূল্যে এলপিজি সংযোগ প্রকল্প, যা উজ্জ্বলা নামে পরিচিত, মহিলাদের ক্ষমতায়ন করেছে। উনুনের ধুলো এবং ধোঁয়া থেকে মুক্তি দিয়েছে। শুধুমাত্র তাঁর কারণেই কোটি কোটি মানুষ স্বেচ্ছায় তাদের এলপিজি সংযোগের ভর্তুকি ছেড়ে দিয়েছেন। 'বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও' প্রচারের মাধ্যমে তিনি ভারতীয় সমাজে মেয়েদের সম্মান, ভালবাসা পাওয়ার ও শিক্ষার অধিকার দিয়েছেন। এখন ছেলে-মেয়ে সবাই সমান। মোদির শাসনকালেই মহাকাশ গবেষণা এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে নতুন মাইলফলক অর্জন করেছে ভারত। বারাণসীর কাশী করিডর, দিল্লির আম্বেদকর সেন্টার, কেভাদিয়ায় সর্দার প্যাটেলের সর্বোচ্চ মূর্তি-মোদীর ঝুলিতে আরও সাফল্য রয়েছে। তিনিই সম্ভবত একমাত্র নেতা যাঁর প্রতি দেশের বিশ্বাস আছে এবং তাঁর কাছ থেকে প্রত্যাশা রয়েছে। সাত বছরের মেয়াদে অনেক জল গড়িয়েছে, অনেক সমালোচনা হয়েছে, কিন্তু মোদির প্রতি মানুষের বিশ্বাস একই আছে। ভারতের রাজনীতিতে মোদি এমন একজন নেতা, যিনি জানেন কী ভাবে নিজের ভুল শুধরে নিতে হয়। পরিস্থিতি অনুযায়ী দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া তাঁর বৈশিষ্ট্য এবং তিনি কখনই রাজনৈতিক লাভ এবং ক্ষতির উপর নির্ভর করেন না। মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগেও মোদী দেশের ৪৫০টি জেলার প্রায় প্রতিটিতে কমপক্ষে একটি রাত কাটিয়েছিলেন।
বিরোধী দলের অনেক নেতাও মোদীর বক্তৃতার ভক্ত। তিনি জানেন যে কী ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। যাই হোক, অন্যান্য রাজনীতিকদের থেকে যেটা তাঁকে আলাদা করে রেখেছে তা হল তিনি যা বলেন তা বাস্তবায়নের ট্র্যাক রেকর্ড। এভাবে, সমগ্র দেশ তাঁকে বিশ্বাস করে যখন তিনি বলেন, "ম্যায় দেশ নেহি ঝুকনে দুঙ্গা। ম্যায় দেশ না মিটনে দুঙ্গা। ” প্রধানমন্ত্রী মোদীর সব চেয়ে বড় গুণ হল তিনি জনগণের কাছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয় বরং বন্ধু, দার্শনিক এবং পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করেন। তিনি তাঁদের সাফল্যের প্রত্যাশা এবং আত্মবিশ্বাস জোগান। ৭১ বছর বয়সেও তিনি চটপটে, উদ্যমী এবং সর্বদা নতুন পরিকল্পনার জন্য প্রস্তুত। আমরা সকলেই তাঁর সুস্বাস্থ্য কামনা করি। কারণ, দেশের তাঁকে আজ আরও বেশি করে প্রয়োজন আগের থেকে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।