Explained || Zinc Deficiency: জিঙ্কের ঘাটতি হলে সহজেই বাসা বাঁধে করোনাভাইরাস, জেনে নিন জিঙ্কের ঘাটতির উপসর্গগুলি

Last Updated:

জিঙ্কের ঘাটতি শরীরের অনাক্রম্যতা কমিয়ে দেয় যা শরীরে করোনাভাইরাসের (Coronavirus) প্রবেশ এবং সংক্রমণ সহজ করে তোলে

দৈনিক সংক্রমণের শীর্ষে অপরিবর্তিতভাবে রয়েছে কেরল। গত ২৪ ঘণ্টায় কেরলে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১,২২৩।
দৈনিক সংক্রমণের শীর্ষে অপরিবর্তিতভাবে রয়েছে কেরল। গত ২৪ ঘণ্টায় কেরলে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১,২২৩।
#নয়াদিল্লি: শরীরের জিঙ্কের কম মাত্রা (Zinc Deficiency) করোনা সংক্রমণের জন্য দায়ী বলে গবেষকরা জানতে পেরেছেন। জিঙ্কের ঘাটতি শরীরের অনাক্রম্যতা কমিয়ে দেয় যা শরীরে করোনাভাইরাসের (Coronavirus) প্রবেশ এবং সংক্রমণ সহজ করে তোলে। জিঙ্ক একটি ট্রেস খনিজ, যার মানে শরীরে অল্প পরিমাণে এর প্রয়োজন হয়। কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট (Micronutrient) যা ইমিউন সিস্টেম (Immune System) এবং বিপাকের (Metabolism) কাজে সহায়তা করে। এটা ক্ষত নিরাময় এবং স্বাদ এবং গন্ধের অনুভূতি পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়। মেডিকেল স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের প্রতিদিন ১১ মিলি গ্রাম জিঙ্ক গ্রহণ করা উচিত। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার ক্ষেত্রে এটির প্রয়োজন ৮ মিলি গ্রাম। জিঙ্ক কোষের বৃদ্ধিতে (Cellular Growth) সাহায্য করে। তাই শৈশব এবং গর্ভাবস্থায় (Pregnancy) শরীরের যথেষ্ট পরিমাণে এটির প্রয়োজন।
জিঙ্কের সঙ্গে কোভিডের কী সম্পর্ক?
গবেষণা অনুযায়ী জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট কোভিড রোগীদের দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করেছে। একটি গবেষণা রিপোর্ট বলছে, "কিছু প্রতিরক্ষামূলক মাইক্রো-মলিকুলার এনজাইম (Micro-Molecular Enzymes) রয়েছে যা নিজেদের সক্রিয় করতে এবং ঢাল হিসাবে কাজ করার জন্য জিঙ্ক ব্যবহার করে। তারা শ্বাসযন্ত্রের প্রবেশদ্বারে ভাইরাসকে প্রতিরোধ করে এবং ম্যাকোকাইলিয়ারি ক্লিয়ারেন্স বা ফুসফুসের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা প্রক্রিয়াটিকে সহায়তা করে, যার মাধ্যমে করোনাভাইরাস আমাদের সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করে।"
advertisement
advertisement
অনেক বিশেষজ্ঞ কোভিড সংক্রমণের পরে স্বাদ (Taste) ও গন্ধের (Smell) অনুভূতি ধরে রাখার জন্য জিঙ্কের কার্যকারিতার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। যেহেতু এই ট্রেস খনিজটি বেশিরভাগ শরীরের অনাক্রম্যতা এবং করোনাভাইরাসের সংক্রমণের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গের সঙ্গে যুক্ত, তাই বিশেষজ্ঞরা সংক্রমণের সংবেদনশীলতার সঙ্গে এটির ঘাটতি যুক্ত করেছেন।
২০২১ সালের হার্ভার্ড মেডিক্যাল রিপোর্টে ( Harvard Medical Report) বলা হয়েছে, "জিঙ্কের অ্যান্টিভাইরাল কার্যকলাপ থাকতে পারে, হয় এটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অনাক্রম্য কোষের কার্যকলাপকে বাড়িয়ে দেয়, অথবা এটি ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধিকে হ্রাস করে।"
advertisement
ঝুঁকিতে কারা রয়েছে?
প্রদাহজনক আন্ত্রিক রোগ (Bowel Disease) বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল (Gastrointestinal) সমস্যাগুলির মতো পাচক ব্যাধি আছে এমন ব্যক্তিরা জিঙ্ক শোষণ করতে অক্ষম। তাই তাদের শরীরে জিঙ্কের অভাব থাকে। দীর্ঘস্থায়ী লিভার বা কিডনির রোগে ভোগা ব্যক্তিদেরও জিঙ্ক শোষণ করা কঠিন। দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়ায় ভোগা লোকজনের শরীরেও জিঙ্কের অভাব হতে পারে। এমন অনেকগুলি শর্ত রয়েছে যেখানে স্বাভাবিক প্রয়োজনীয়তার চেয়ে শরীরে বেশি জিঙ্কের প্রয়োজন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ-পোড়া (Burn) এবং সেপসিস (Sepsis) নিরাময়ে প্রচুর জিঙ্ক প্রয়োজন। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে জিঙ্কের ঘাটতি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ শিশুর বৃদ্ধির জন্য জিঙ্ক প্রয়োজনীয়। এছাড়াও নিরামিষাশীরাও ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ উদ্ভিদ খাবারে জিঙ্ক খুব কম পরিমাণে থাকে।
advertisement
শরীরে জিঙ্কের ঘাটতির উপসর্গ কী কী?
জিঙ্কের ঘাটতির সবচেয়ে বিশিষ্ট উপসর্গগুলির মধ্যে একটি হল স্বাদ বা গন্ধের ক্ষতি। যা ডেল্টা প্রজাতিতে (Delta Variant) ক্রমণের সময় একটি বড় উপসর্গ ছিল। তবে এই উপসর্গটি ওমিক্রন (Omicron) সংক্রমণের সময় দেখা যায়নি। শরীরে জিঙ্কের ঘাটতি হলে কয়েকটি উপসর্গ দেখা যায়। সেগুলি হল- খিদে কমে যাওয়া, বিষণ্ণ মেজাজ, কম অনাক্রম্যতা, ক্ষত নিরাময়ে দেরি, চুল পড়া, ডায়ারিয়া, ঝাপসা দৃষ্টি, ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি। একটি গবেষণা অনুযায়ী, শরীরে জিঙ্কের ঘাটতির কারণে পুরুষদের মধ্যে যৌন উত্তেজনা আসে না, যার কারণে যৌন সম্পর্কে প্রভাব পড়ে।
advertisement
ক্ষত সারতে দেরি: আমাদের শরীরে জিঙ্কের অন্যতম ভূমিকা হল ত্বককে স্বাস্থ্যকর রাখা এবং সঠিকভাবে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয়। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে জিঙ্ক না খেলে ক্ষত সারতে সমস্যা হয়। জিঙ্কের ঘাটতির কারণে ব্রন হতেও দেখা যায়।
ওজন কমে যাওয়া: শরীরে জিঙ্কের পরিমাণ কমে গেলে খিদে কমে যায় যা থেকে ওজন কমে যেতে দেখা যায়। ওজন বেশি থাকলে যদিও বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলা ভাল, কিন্তু বেশি কম ওজন অনেক রোগের লক্ষণ হতে পারে। এমনকী ওজন কমাতে চাইলে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলির কার্যকারিতার জন্য ডায়েটে সমস্ত ধরনের পুষ্টি থাকা জরুরি। কারণ অপুষ্টি থেকে ওজন কমে যাওয়া অস্বাস্থ্যকর বটে।
advertisement
চুল পড়া: দুশ্চিন্তা, খারাপ স্ক্যাল্প হাইজিন, অপর্যাপ্ত পরিমাণ স্বাস্থ্যকর পুষ্টি না থাকলে চুল পড়ে যেতে পারে। জিঙ্কের ঘাটতির কারণে ভঙ্গুর চুল, চুল পড়ে যাওয়া এবং চুল পাতলা হয়ে যেতে পারে। তাই এই পুষ্টির মাত্রা বাড়িয়ে দিলে চুল পড়া প্রতিরোধ হয় এবং চুলের মান উন্নত হয়। তাই চুল পড়ার সমস্যায় ভুগলে প্রথমে জিঙ্ক খাওয়ার দিকে নজর দিতে হবে।
advertisement
ঠান্ডা লাগা: জিঙ্ক একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ক্রনিক রোগের ঝুঁকি কমায়। কম জিঙ্ক খেলে সংক্রমণ এবং অসুস্থতা বেশি হতে দেখা যায়। অন্যদের তুলনায় বেশি ঠান্ডা লাগলে এবং ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পড়লে সেটি জিঙ্কের ঘাটতির লক্ষণ হতে পারে। পাশাপাশি জিঙ্ক খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত ঠান্ডা লাগা থেকে সুস্থ হয়েও ওঠা সম্ভব হয়।
ঝাপসা দৃষ্টি: ভাল দৃষ্টিশক্তির জন্য জিঙ্কের প্রয়োজন রয়েছে। যখন আমাদের শরীর নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ জিঙ্ক পায় না, তখন সেটি আমাদের দৃষ্টিশক্তিতে প্রভাব ফেলে। যার ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায় এবং দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে দেখা যায়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে জিঙ্ক খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে। সুস্থ দৃষ্টিশক্তির ক্ষেত্রে জিঙ্ক এবং ভিটামিন প্রয়োজনীয় দুটি পুষ্টি উপাদান।
মস্তিষ্কের কাজে সমস্যা: প্রায়ই কাজে মন দিতে অসুবিধা হয় কিংবা সবসময়ই দ্বিধাগ্রস্ত লাগে? উত্তর হ্যাঁ হলে জিঙ্কের ঘাটতি রয়েছে কি না দেখে নিতে হবে। কারণ জিঙ্কসমৃদ্ধ খাবার না খেলে মস্তিষ্ক ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এমনকী জিঙ্কের ঘাটতির কারণে স্মৃতির সমস্যাও হয়।
কতটা জিঙ্ক গ্রহণ আদর্শ?
মেডিকেল স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের প্রতিদিন ১১ মিলি গ্রাম জিঙ্ক গ্রহণ করা উচিত। অন্যদিকে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার প্রতিদিন ৮ মিলি গ্রাম জিঙ্ক প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের জন্য জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাদ্যশস্য গ্রহণ করা উচিত।
জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার কী কী?
মাংস, সামুদ্রিক খাবার জিঙ্কের সর্বোত্তম উৎস। অন্যান্য খাবার যেমন কাঁকড়া, ঝিনুক, চিংড়ি, মাংস, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ডিম, বাদাম, শিম, মাশরুম ইত্যাদিকেও জিঙ্ক থাকে। শাক–সবজিতে থাকা জিঙ্ক শরীর সহজে হজম করতে পারে না। সে জন্য নিরামিষভোজীদের অতিরিক্ত জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
রেড মিট (Red Meat): বিফ, পর্ক বা ল্যম্বের মতো মাংসে প্রচুর জিঙ্ক থাকে। যদিও বেশি রেড মিট খাওয়া শরীরের পক্ষে একদমই ভাল নয়।
কাঁকড়া (Crab): কাঁকড়া, অয়েস্টারে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক আছে। তবে অনেকের এগুলি থেকে নানারকম অ্যালার্জি হয়। ভাল করে রান্না না করে খেলে পেটের গণ্ডগোল হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। তাই বুঝে খেতে হবে।
ডাল (Pulses): রাজমা, কাঁচা মুগ, ছোলা, কাবুলি ছোলার মতো শস্যে খেলেও প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক পাওয়া যায়। সেদ্ধ করে, জলে ভিজিয়ে বা ফার্মেন্ট করে খেতে হবে।
বীজ (Seed Grains): কুমড়োর বিজ, সূর্যমুখী ফুলের বিজের মতো কিছু জিনিসে জিঙ্ক আছে। স্যালাডের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। গুঁড়ো করেও খাওয়া যায়।
দুধ-ডিম-দই (Milk-Egg-Yogurt): ডিমের মতো পুষ্টিকর খাবার খুব কম হয়। দিনে একটা করে সেদ্ধ ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। ডিমে জিঙ্ক ছাড়াও নানা রকম পুষ্টির রসদ থাকে। দুগ্ধজাত খাবারেও ডিমের মতোই অন্যান্য পুষ্টি ছাড়াও জিঙ্ক থাকে।
সবজি (Vegetables): আলু, মাশরুম, বিনসের মতো কয়েকটি সবজিতে অল্প পরিমাণে জিঙ্ক থাকে। তাই নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যায়।
বেশি জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খেলে কী হবে?
কোনও কিছুই অতিরিক্ত ভাল না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। জিঙ্কের আধিক্য কপার শোষণে বাধা দেয়। ফলে অ্যানিমিয়া হতে পারে। বেশি পরিমাণে জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খেলে বমি বমি ভাব, খিদে কমে যাওয়া, পেটে ব্যথা, মাথায় ব্যথা এবং ডায়রিয়া হতে পারে। আবার অনেকের ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত জিঙ্ক সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজন পড়ে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে জিঙ্ক ট্যাবলেট, সিরাপ অথবা লজেন্স খাওয়া যেতে পারে। তবে এটা মনে রাখতে হবে যে জিঙ্কের ঘাটতি যেমন ক্ষতিকর, অতিরিক্ত গ্রহণও তেমনই ক্ষতিকর।
বাংলা খবর/ খবর/Explained/
Explained || Zinc Deficiency: জিঙ্কের ঘাটতি হলে সহজেই বাসা বাঁধে করোনাভাইরাস, জেনে নিন জিঙ্কের ঘাটতির উপসর্গগুলি
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: দক্ষিণের জেলাগুলিতে হালকা বৃষ্টি, উত্তরবঙ্গে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস ! রইল আবহাওয়ার আপডেট
দক্ষিণের জেলাগুলিতে হালকা বৃষ্টি, উত্তরবঙ্গে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস ! রইল আবহাওয়ার আপডেট
  • দক্ষিণের জেলাগুলিতে হালকা বৃষ্টি

  • উত্তরবঙ্গে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস !

  • জেনে নিন আবহাওয়ার আপডেট

VIEW MORE
advertisement
advertisement