Explained: China-র হাইপারসোনিক Missile-র পরই India-র অগ্নি-৫, Missile আর্সেনালের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব ঠিক কোথায়?
- Published by:Debalina Datta
Last Updated:
Explained: অগ্নি-৫ ভারতের স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ডের (Strategic Forces Command) এই ধরনের প্রথম মিসাইলের ট্রায়াল বলে জানা গিয়েছে।
#নয়াদিল্লি: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (LAC) বিবাদ জারি থাকার মধ্যেই ভারত (India) এবং চিন (China) উভয়ই সম্প্রতি উন্নত অস্ত্রের পরীক্ষা করেছে। যা তাদের কৌশলগত ক্ষমতাকে যথেষ্ট শক্তিশালী করবে। চিন অগাস্টে হাইপারসোনিক মিসাইলের (Hypersonic Missile) পরীক্ষা করে কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিল। অক্টোবরে ভারত দূরপাল্লার অগ্নি-৫ ব্যালিস্টিক মিসাইলের (Agni-V Ballistic Missile) পরীক্ষা করে। একটা বিষয় এখানে উল্লেখ অবশ্যই করতে হবে যে উভয় দেশেরই নীতি হল মারণ অস্ত্রের প্রথম ব্যবহার না করা।
অগ্নি-৫ কী ধরনের মিসাইল?
অগ্নি-৫ ভারতের স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ডের (Strategic Forces Command) এই ধরনের প্রথম মিসাইলের ট্রায়াল বলে জানা গিয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে যে এই মিসাইল টেস্ট ভারতের 'বিশ্বাসযোগ্য ন্যূনতম প্রতিরোধের' নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। 'প্রথম ব্যবহার নয়' এই প্রতিশ্রুতি ভারত পালন করবে। মন্ত্রক আরও যোগ করেছে যে, মিসাইলটি একটি তিন-পর্যায়ের কঠিন জ্বালানি ইঞ্জিন (Solid Fuelled Engine) ব্যবহার করেছে। এটি ৫ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। অগ্নি ৫-এর বিকাশে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ চলছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে পঞ্চমবার পরীক্ষা চালানোর পরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছিল যে দূরপাল্লার সার্ফেস-টু-সার্ফেস ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষার সমস্ত উদ্দেশ্য সফল ভাবে পূরণ করা হয়েছে। যাই হোক, যদিও রিপোর্টে বলা হয়েছে যে এই বছরই আরও দু'টি পরীক্ষার পর মিসাইলটিকে সশস্ত্র বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ছিল। কিন্তু, কোভিডের কারণে একটি পরীক্ষা এখনও চালানো যায়নি। ৫ হাজার কিলোমিটারের পরিসরের কারণে বেশিরভাগ চিনা মূল ভূখণ্ড অগ্নি ৫-এর নাগালের মধ্যে চলে আসছে।
advertisement
আরও পড়ুন - Online Shopping: Amazon কেনাকাটা বন্ধ করতেই এই মহিলা ১১ মাসে চুকিয়ে ফেললেন ১৭ লক্ষ টাকার ধার
advertisement
ব্যালিস্টিক মিসাইল কী?
নিউক্লিয়ার থ্রেট ইনিশিয়েটিভ (Nuclear Threat Initiative) অনুসারে, ভারতের স্বল্প, মাঝারি এবং দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল (Ballistic Missiles) মোতায়েন করার ক্ষমতা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে কৌশলগত স্থিতিশীলতা বজায় রাখতেই ভারত পারমাণবিক অস্ত্র ও দূরপাল্লার মিসাইলে নিজেকে সজ্জিত করছে। ভারতের হাতে রয়েছে পৃথ্বী-২ (Prithvi-II), অগ্নি-১ (Agni-I), অগ্নি-২ (Agni-II), অগ্নি-৩ (Agni-III), এবং অগ্নি-৪ (Agni-IV) ল্যান্ড-ভিত্তিক ব্যালিস্টিক মিসাইল। যেগুলি সম্পূর্ণ অপারেশনাল। এছাড়াও সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপিত ব্যালিস্টিক মিসাইলও (SLBMs) ভারতের হাতে রয়েছে।
advertisement
মার্কিন ভিত্তিক সংস্থা আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশন (Arms Control Association) বলছে যে ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রথম দিকে রকেট দ্বারা চালিত হয়। কিন্তু তার পরে তারা তাদের লক্ষ্যবস্তুর দিকে একটি শক্তিহীন, অবাধ-পতনের গতিপথ অনুসরণ করে। এরা উল্লেখ করেছে যে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩১টি দেশের হাতে ছিল ব্যালিস্টিক মিসাইল। এই ৩১টি দেশের মধ্যে মাত্র ৯টি দেশ পরমাণু শক্তিধর। সেই দেশগুলি হল- চিন, ফ্রান্স, ভারত, ইজরায়েল, উত্তর কোরিয়া, পাকিস্তান, রাশিয়া, ইংল্যান্ড, আমেরিকা।
advertisement
একটি হাইপারসোনিক মিসাইল কী?
চিন অগাস্টে একটি হাইপারসোনিক মিসাইল পরীক্ষা করেছে বলে জানা গিয়েছে। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবাক করে দিয়েছিল। হাইপারসোনিক মিসাইলগুলিকে মিসাইল প্রযুক্তির অত্যাধুনিক প্রান্ত হিসাবে দেখা হয়। কারণ, এই মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলি এড়াতে পারে। হাইপারসোনিক মিসাইল শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ গতিতে ছোটে। অর্থাৎ, যে কোনও কিছু যা ম্যাক ৫ (Mach 5) বা তার বেশি গতিতে চলতে পারে, যার অর্থ প্রতি সেকেন্ডে কমপক্ষে ১.৬ কিমি। একটি হাইপারসোনিক মিসাইল ক্রুজ মিসাইলের চেয়ে দ্রুত এবং ব্যালিস্টিক মিসাইলের মতো একই প্রাথমিক গতিতে লক্ষ্যে আঘাত করতে পারে।
advertisement
হাইপারসোনিক মিসাইল দুই ধরনের। হাইপারসোনিক ক্রুজ মিসাইল হল সেইগুলি যেগুলি তাদের ফ্লাইটের মাধ্যমে রকেট বা জেট প্রপেলান্ট ব্যবহার করে এবং বিদ্যমান ক্রুজ মিসাইলের দ্রুত সংস্করণ হিসাবে বিবেচিত হয়। তার পরে রয়েছে হাইপারসোনিক গ্লাইড ভেহিকল (Hypersonic Glide Vehicle)। যে ধরনের মিসাইল চিন অগাস্ট মাসে পরীক্ষা করেছিল। এই মিসাইল তাদের লক্ষ্যের দিকে যাওয়ার আগে প্রচলিত রকেট বা ব্যালিস্টিক মিসাইলের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে যায়৷
advertisement
হাইপারসোনিক মিসাইলের সুবিধাগুলি কী কী?
ক্রুজ এবং ব্যালিস্টিক মিসাইল দীর্ঘ দিন ধরেই বিভিন্ন দেশের কাছে রয়েছে। যদিও শীর্ষ সামরিক শক্তিগুলির হাতে এই মিসাইলকে সনাক্ত করা এবং বাধা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ক্ষমতাও রয়েছে। কিন্তু, হাইপারসোনিক মিসাইলের মধ্যে ব্যালিস্টিক মিসাইলের গতি এবং ক্রুজ মিসাইলের স্টেলথ একত্রে রয়েছে। তাই এটা মিসাইল বিরোধী প্রতিরক্ষা এড়ানোর ক্ষমতা রাখে।
advertisement
হাইপারসোনিক মিসাইল ক্রুজ মিসাইলের মতো কম উচ্চতায় উড়তে পারে আর ব্যালিস্টিক মিসাইলের গতিতে আঘাত করতে পারে। হাইপারসোনিক মিসাইলের ফ্লাইটের সময় গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাইপারসোনিক মিসাইল যতটা কম উচ্চতায় উড়তে সক্ষম, তা র্যাডারে ধরা পড়বে। কিন্তু কয়েকজন বিশেষজ্ঞ উল্লেখ করেছেন যে এই মিসাইল র্যাডারে (Radar) ধরা পড়বে না। মজার বিষয় হল, বিশেষজ্ঞরা আরও উল্লেখ করেছেন যে একটি হাইপারসোনিক মিসাইল তার লক্ষ্যের দিকে বিধ্বংসী গতিশক্তি অর্জন করতে পারে। একটি ছোট ওয়ারহেড বিশাল ক্ষতি করতে পারে।
চিন কী করেছে?
হাইপারসোনিক মিসাইলের বিকাশ যদিও নতুন নয়। তবে, সুপার পাওয়ারগুলির এই বিষয়ে নতুন করে আগ্রহ দেখা গিয়েছে। কারণ, প্রধান শক্তিগুলি সামরিক ক্ষেত্রে একে অপরের থেকে এগিয়ে যেতে চাইছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (USA) সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির কারণে চিন আক্রমণাত্মক ভাবে হাইপারসোনিক মিসাইল প্রযুক্তি বিকাশ করছে। ফিনান্সিয়াল টাইমস তাদের প্রতিবেদন বলেছে, বেজিং গত অগাস্ট মাসে একটি পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম হাইপারসোনিক মিসাইল উৎক্ষেপণ করে। গোটা বিশ্বে একপাক খেয়ে চিনের মিসাইলটি লক্ষ্যবস্তু ভেদ করতে ব্যর্থ হয়। পৃথিবীকে নিম্ন কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করে মিসাইলটি লক্ষ্য থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে গিয়ে পড়ে।
কোন কোন দেশ হাইপারসোনিক মিসাইল তৈরি করেছে?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মতো দেশ এক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি দেশ হাইপারসোনিক মিসাইল নিয়ে কাজ করছে। এমনকি উত্তর কোরিয়াও এই মিসাইল তৈরি করেছে বলে দাবি করছে। চিনা হাইপারসোনিক মিসাইলের পরীক্ষা মার্কিন কর্মকর্তাদের অবাক করে দিয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে, ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) একটি হাইপারসোনিক প্রযুক্তি প্রদর্শনকারী যানের (Hypersonic Technology Demonstrator Vehicle) সফলভাবে পরীক্ষা করেছিল। যা হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল সিস্টেমের বিকাশের ভিত্তি। ডিআরডিও প্রধান জি সতীশ রেড্ডি (G Satheesh Reddy) বলেছিলেন যে ভারতের হাতে সম্পূর্ণ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম আসতে এখনও ৪-৫ বছর লাগবে।
অপারেশনাল হাইপারসোনিক মিসাইল ডিফেন্স শিল্ডের অভাব এই ধরনের সিস্টেমকে সমস্যাবহুল করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই ধরনের অস্ত্র তৈরির পথে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে এর প্রপালশন সিস্টেম এবং বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় এই মিসাইল চরম তাপ উৎপন্ন করে।
view commentsLocation :
First Published :
November 05, 2021 5:29 PM IST