#নয়াদিল্লি: বৈশাখ মাস এসেছে সবে তিন কী চার দিন হল! অথচ এরই মধ্যে গরম যা পড়েছে, সে আর বলার নয়। ওদিকে দেশ জুড়ে কোভিড বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার হাত থেকে রেহাই নেই- খর তাপ মাথায় করেই সবাই আমরা ছুটছি যে যার কাজে! ফলে, যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে- রোদ লেগে সর্দি-গরমি তো আছেই, যাঁরা শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের হাঁপানিও বাড়ছে! লক্ষণগুলো চেনা-চেনা, অনেকটা কোভিডের মতোই নয় কি? এই গ্রীষ্মে তাই অহেতুক দুশ্চিন্তা না করে কোভিডের মতো লক্ষণ আর কোন কোন অসুখে দেখা দিতে পারে, জেনে নেওয়া যাক!
কোভিড বনাম ফ্লু বনাম তাপপ্রবাহ: কেন আলোচনা জরুরি?
SARS-CoV-2 ভাইরাস ছাড়াও, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস সহ অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ঠান্ডা লাগার মতো লক্ষণ থাকে। যা অনেক সময় কোভিড বলে ভুল হয়ে যায়। এছাড়াও, ভারতের একাধিক অঞ্চলে এই সময়ে তাপপ্রবাহ জনতার দুর্ভোগ বাড়িয়েছে, যা থেকে বিভিন্ন অসুখ হতে পারে। রিপোর্ট অনুসারে, অতিমারীতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা অতিক্রম করলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায়। তাই এই পরিস্থিতিতে যদি শরীরে কোভিডের মতো লক্ষণ থাকে, তাহলে তা শুধুই করোনাভাইরাস নয়- ফ্লু কিংবা গরমের কারণেও হতে পারে।
কোভিড হয়েছে কি না কী ভাবে বোঝা যাবে?
আলফা কিংবা ডেল্টার মতো আগের ভ্যারিয়েন্টগুলিকে ফুসফুসের উপর প্রভাব ফেলতে দেখা গিয়েছে। যার ফলে জ্বর, ক্রমাগত কাশি, গন্ধ এবং স্বাদ কমে যাওয়া, ক্লান্তি এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনালের মতো আরও গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়। আরও জটিল পরিস্থিতিতে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, এবং রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার মতো উপসর্গ থাকে। তবে কোভিডের ওমিক্রন প্রজাতিতে গলা ব্যথা, কাশি, সর্দি এবং হাঁচির মতো হালকা লক্ষণ দেখা যায় যা ফ্লু বা সাধারণ সর্দিতেও হয়ে থাকে। তীব্রতা এবং কত দ্রুত ছড়ায় সেটিই আদতে কোভিড-১৯ এবং সাধারণ ফ্লু-এর মধ্যে বড় পার্থক্য তৈরি করে। পাশাপাশি SARS-CoV-2 ভাইরাসটি বেশি ছড়িয়ে পড়ে এবং নির্দিষ্ট কিছু মানুষ গুরুতর অসুস্থতার শিকার হন যেখানে ফ্লুতে সংক্রামিত হলে মৃদু অসুস্থতার সঙ্গে রোগী কয়েক দিনের মধ্যে সেরে ওঠেন। আবার শ্বাসকষ্ট, গন্ধ বা স্বাদ হারানোর মতো লক্ষণগুলি কোভিড-১৯-এর সাধারণ লক্ষণ, যা ফ্লু-এর নয়। একই ভাবে, করোনা রোগীদের মধ্যে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব কম দেখা গেলেও ফ্লু-এর ক্ষেত্রে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ।
শরীরে কোভিড না তাপপ্রবাহের উপসর্গ রয়েছে? কী ভাবে বোঝা যাবে?
হিট র্যাশ, ক্র্যাম্প থেকে শুরু করে তাপপ্রবাহে ক্লান্তি এবং হিট স্ট্রোক সহ বিভিন্ন অসুস্থতা হতে পারে। অসুস্থতার উপর নির্ভর করে, শরীরে উপসর্গ দেখা যায়। যেমন-১. হিট র্যাশে ত্বক লাল হয়ে ওঠে, চুলকানি হয়, শরীরের ঘর্মাক্ত এলাকায় ছোট ফুসকুড়ি বা ফোসকা হতে পারে যা থেকে সংক্রমণও হতে পারে।২. হিট ক্র্যাম্প বেদনাদায়ক এবং এতে পা, হাত এবং পেটে অস্বস্তি, পেশিতে খিঁচুনি হতে পারে।৩. তাপপ্রবাহে দ্রুত ক্লান্তি দেখা দেয়, শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে পেশি ব্যথা, মাথাব্যথা, বিরক্তি, নাড়ির গতি ক্ষীণ এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা এবং জ্ঞান হারানোও অন্যান্য সাধারণ লক্ষণ।৪. হিট স্ট্রোকে হালকা থেকে গুরুতর উপসর্গ পর্যন্ত দেখা যেতে পারে। মাথা ঘোরা, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া কিংবা ফুলে যাওয়া, বমি বমি ভাব, শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে খিঁচুনি দেখা দেয়, হাইপারভেন্টিলেট বা হ্যালুসিনেশনের সমস্যাও হতে পারে।অন্য দিকে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের ক্ষেত্রে তাপপ্রবাহের উপসর্গ যেমন উচ্চ তাপমাত্রা, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথাব্যথা, মানসিক বিভ্রান্তি ইত্যাদির সঙ্গে কিছু মিল থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট উপসর্গগুলি খেয়াল রাখতে হবে। তবে যদি শরীরের তাপমাত্রা নিজে থেকেই কমে যায় এবং চিকিৎসার পরে লক্ষণগুলিও দ্রুত মিলিয়ে যায়, তবে এটি সম্ভবত কোভিড নাও হতে পারে।
তাপপ্রবাহ না কোভিড- সবচেয়ে ভালো জানার উপায় কী?
যদি শরীরে কোভিডের মতো উপসর্গ থাকে তাহলে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করে নেওয়াই ভালো। আমরা দ্রুত ফল পেতে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করাতে পারি, এক্ষেত্রে রিপোর্ট পেতে সময় লাগবে না কিংবা আরটি পিসিআর টেস্টও করাতে পারি, যার রিপোর্ট একদিনের মধ্যেই এসে যাবে। তবে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের সঙ্গে তুলনা করলে, মলিকিউলার টেস্ট অনেক বেশি নিঁখুত এবং বিশ্বাসযোগ্য- বিশেষজ্ঞরা তাই সেটাই করাতে বলছেন৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, Cough and cold