Lightning: বজ্রপাত কত রকমের হয়? বাজ পড়লে কিভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন ? জানুন
- Published by:Ananya Chakraborty
Last Updated:
Different Types of Lightning: কিছু প্রকার বজ্রপাত মেঘের মধ্যেই থাকে। সেগুলি মেঘের বিভিন্ন অঞ্চলে বিরাজ করে
আমরা শুধু দেখি আলোর ঝলক আর কানে আসে আওয়াজ! কিন্তু বজ্রপাত নানা রকমে হয়ে থাকে।
শিট লাইটনিং (Sheet lightning)- এই ধরনের বজ্রপাত অনেকটা বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে হতে পারে। এই ধরণের বজ্রপাত অনেক তাপ সঞ্চারিত করতে পারে, যা সূর্যের তাপের বহু গুণ হতে পারে। এর ফলে বাতাসে ভীষণ পরিমাণে কম্পনের সৃষ্টি হয়। মেঘ থেকে ভূমিতে আসা এই বজ্রপাত সাধারণ ঘটনা। যা প্রতি সেকেন্ডে ১০০টি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটাতে পারে। যেগুলির প্রতিটির শক্তি ভয়ঙ্কর হতে পারে। প্রতিটি আঘাত ১ বিলিয়ন ভোল্ট বিদ্যুৎ শক্তি বহন করার ক্ষমতা রাখে।
advertisement
কিছু প্রকার বজ্রপাত মেঘের মধ্যেই থাকে। সেগুলি মেঘের বিভিন্ন অঞ্চলে বিরাজ করে। আর কিছু ভাগ রয়েছে যেগুলির ফলে দাবানল সৃষ্টি, অগ্ন্যুৎপাত তৈরি ও তুষার ঝড়ের কারণ হতে পারে।
advertisement
বল লাইটনিং (Ball Lightning)- বজ্রপাতের মধ্যে আরেকপ্রকার হল বল লাইটনিং। যা নিয়ে এখনও বি়জ্ঞানীরা গবেষণা করছেন। যার সঠিক কারণ এখনও বিজ্ঞানীদের কাছে অধরা।
advertisement
পজিটিভ লাইটনিং (Positive Lightning)- বজ্রপাতের আরও একটি প্রকারভেদ। যা প্রচণ্ড শক্তিশালী বৈদ্যুতিক চার্জ যুক্ত হয়। মেঘের অনেকটা বড় এলাকা নিয়ে এর প্রভাব দেখা যায়। সাধারণত, নীল রঙের ঝলকানি এর লক্ষণ বলে ধরা হয়। এই বজ্র নিজের উৎপত্তিস্থল থেকে যে কোনও দিকে ১০ মাইল এলাকা পর্যন্ত প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
বজ্রপাত অতি বিপজ্জনক। প্রতি বছর বজ্রপাতে বিশ্বব্যাপী প্রায় ২০০০ মানুষ নিহত হন। এছাড়াও এর কারণে, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মাথা ব্যথার সমস্যা, দুর্বলতা ইত্যাদি শারীরিক সমস্যা মানবদেহে দেখা দেয়। সমীক্ষা বলে এখনও পর্যন্ত, প্রতি ১০ জন বজ্রাঘাতে আহত হয়ে হার্ট অ্যাটাক বা পুড়ে যাওয়ার ঘটনা চোখে পড়ে। তবে তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু জন বেঁচে গিয়েছে।
advertisement
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউনের (Cape Town) টেবিল মাউন্টেন (Table Mountain) এবং লায়ন হেড (Lion's Head ) বজ্র প্রবণ এলাকা বলে ধরা হয়। এছাড়াও মধ্য আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে ঘন ঘন বজ্রপাত হতে দেখা যায়।
গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে (Grand Canyon) মেঘ ফাটিয়ে বজ্রপাত হয়েছিল, যা ভীষণ ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।
বিদ্যুতের বড় দুই ঝলকানি আঘাত হেনেছিল নিউ মেক্সিকোর, লা ক্রুশেষে (New Mexico, Las Cruces)।
advertisement
কথিত আছে, প্রাচীন গ্রিক দেবতা জিউসের (Zeus) হাতে ছিল বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণের শক্তি। কিন্তু, স্যাটেলাইটের যুগে তা প্রমাণিত নয়। মেঘ এবং স্থলভাগের বৈদ্যুতিক চার্জের ফলে বিদ্যুতের সৃষ্টি হয় যা বজ্রপাত হয়ে নেমে আসে। এরকমই একটা বড় ঘটনা ঘটেছিল গ্রিসের কাভালাতে (Kavala, Greece)। সেবার সেই এলাকা সম্পূর্ণ তড়িতাহিত হয়ে ওঠে। একই সঙ্গে সেই এলাকার জলও তড়িতাহিত হয়ে উঠেছিল।
advertisement
চিনের সাংহাইয়ে (Sanghai) ওরিয়েন্টাল পার্ল টিভি টাওয়ারে বিশালাকার বাজ পড়ার প্রমাণ মিলেছিল। ২০১০ সালের এপ্রিল মাসের এই ঘটনা, বজ্রপাতের শক্তিকে সূর্যের চারগুণ বেশি তাপমাত্রায় পৌঁছে দিয়েছিল।
আরিজোনার (Arizona) দক্ষিণ পূর্ব ভাগ সবথেকে শুষ্ক অঞ্চল। তবুও বছরে গড়ে ৩০-৪০ বার বড় বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
মালয়েশিয়ার (Malaysia) শহরের দিগন্তে অনেক বজ্রপাত হতে দেখা যায়।
advertisement
বজ্রপাত সবচেয়ে বেশি হয় লম্বা টাওয়ারগুলিতে। এক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের (Johannesburg) হিলব্রাউ টেলিকম টাওয়ার (Hillbrow Telecom Tower) সব থেকে বজ্রপাতপ্রবণ।
সাগুয়ারো ক্যাকটি (Saguaro Cacti) মরুভূমি শুষ্ক অঞ্চল হলেও বজ্রপাত হলে সেখানে আগুনের ঝলকানি দেখা যায়।
বাহামাসের উপকূলের দিগন্তে বজ্রপাতের ঘনঘটা অতি মাত্রায় দেখা যায়। এগুলি ভীষণ শক্তিশালী হয় যা উৎপত্তিস্থল থেকে নিজের এলাকার ১০ মাইল পর্যন্ত দূরত্বে আঘাত হানতে পারে।
চিনের ফোশান (Foshan) এলাকায় একবার দু'টো বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। যা বড় আঘাত হেনেছিল।
বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায় -
ঘরের বাইরের সুরক্ষিত থাকার ক্ষেত্রে প্রথমে যা করতে হবে -
ঘরের বাইরে যাওয়ার আগে আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নিতে হবে। ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলে বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
বজ্রপাতের সময় কোনও ঘর, শপিং মল, অফিসের মধ্যে থাকা ভালো।
মাঠে খেলবার সময় ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে তাড়াতাড়ি নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসতে হবে। কোনও উঁচু এলাকায় না থাকায় ভালো। এতে ঝুঁকি বাড়ে।
মাঠে চাষবাস করবার সময় ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে আশেপাশে যদি নিরাপদ স্থান না থাকে হাঁটু ভাঁজ করে মাথা নিচু করে বসে থাকতে হবে। তা বলে, উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লে হবে না।
বজ্রপাতের সময় বিদ্যুত সুপরিবাহী ধাতু না রাখায় ভালো। এছাড়াও কাঁটা তার, হাইটেনশেন লাইনের নিচে চলাচল না করায় ভালো।
বজ্রপাতের সময় একসঙ্গে মিলে রাস্তা দিয়ে না হাঁটা ভালো। পৃথক পৃথকভাবে হাঁটায় ঝুঁকি কমাবে।
বজ্রপাতের সময় সাইকেল বা মোটর সাইকেল ব্যবহার করলে তা প্রাণহানির ঝুঁকি বাড়ায়।
ঘরের ভিতরে সুরক্ষিত থাকার ক্ষেত্রে প্রথমে যা করতে হবে -
বজ্রপাতের সময় স্নান, শাওয়ার, বাসন ধোয়ার কাজ না করায় ভালো। কারণ, জল তড়িৎ সুপরিবাহী।
বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা থেকে এড়িয়ে চলতে হবে। যেমন কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ইত্যাদি।
বজ্রপাতের সময় ঘরের মেঝেতে শোয়া নিরাপদ নয়। কারণ কংক্রিটের মেঝেতে লোহার রড থাকায় প্রাণের ঝুঁকি বাড়ায়।
জানালা-দরজার সামনে দাঁড়ানো উচিত নয়। অনেক সময় জানালা বা দরজা দিয়ে বাজ ঢুকে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে।
Location :
First Published :
July 12, 2021 6:21 PM IST