কোভিড মোকাবিলায় সব চেয়ে বেশি কাজে আসতে পারে জনসনের ভ্যাকসিন; কিন্তু কেন?
- Published by:Dolon Chattopadhyay
Last Updated:
রবিবার রাতে ইউনাইটেড স্টেটস সরকারের তরফ থেকে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রয়োগের জন্য এই ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিয়েছে।
#নিউ ইয়র্ক: জনসন অ্যান্ড জনসন কোভিড ১৯-এর ভ্যাকসিন আবিষ্কারে কাজ শুরু করেছিল ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস থেকে। সেই মতো ওই বছরের মার্চ মাসে ৪৫৬ মিলিয়ন ডলারের আর্থিক সাহায্যও পেয়েছিল ইউনাইটেড স্টেটস সরকারের তরফে। প্রথম এবং দ্বিতীয় দফার ট্রায়াল শুরু হয়েছিল জুলাই মাসে; তৃতীয় দফার ট্রায়াল শুরু হয় সেপ্টেম্বরে। তার পরেই দেখা দিয়েছিল প্রমাদ- অক্টোবরে আচমকাই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় সংস্থা। কেন না, ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবকেরা ব্যাপক হারে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন! তবে সেই সব অবাঞ্ছিত ঘটনা পেরিয়ে এসে আপাতত করোনার মোকাবিলায় পুরোদস্তুর তৈরি এই ভ্যাকসিন। যার নাম রাখা হয়েছে JNJ-78436735 বা Ad26.COV2.S। রবিবার রাতে ইউনাইটেড স্টেটস সরকারের তরফ থেকে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রয়োগের জন্য এই ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিয়েছে। আর তার সঙ্গে সঙ্গেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এক অভূতপূর্ব তথ্য- ইতিপূর্বে ছাড় পাওয়া Pfizer বা Modena-র তুলনায় এই ভ্যাকসিন হতে চলেছে অনেক বেশি কার্যকর!
কেন, সেই কথাটাও বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। যখন করোনার ভ্যাকসিন আমাদের শরীরে প্রয়োগ করা হয়, তখন তা শরীরে গিয়ে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে সক্ষম প্রোটিনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। এই দিক দিয়ে Pfizer বা Modena-র জনসনের ভ্যাকসিন অনেক বেশি সুবিধা দিতে পারে। কারণ, Pfizer বা Modena-র ভ্যাকসিন সিঙ্গল স্ট্র্যান্ডেড RNA-এর উপরে কাজ করে। কিন্তু জনসনের ভ্যাকসিন কাজ করে ডবল স্ট্র্যান্ডেড DNA-এর উপরে। পাশাপাশি, এতে আছে অ্যাডিনোভাইরাসের মজবুত প্রোটিন কোড, যা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে DNA-কে সুরক্ষিত রাখে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে RNA-এর তুলনায় DNA ততটা ভঙ্গুর নয়, পাশাপাশি এই অ্যাডিনোভাইরাসের উপস্থিতি অতিরিক্ত সুরক্ষা দেবে। যে কারণে Pfizer বা Modena-র ভ্যাকসিনের অন্তত দু'টি শট নিতেই হবে, কিন্তু জনসনের ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে মাত্র একটি শট-ই যথেষ্ট! আবার যদি সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, দেখা যাচ্ছে যে সেই দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছে JNJ-78436735 বা Ad26.COV2.S। মাত্র ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেই প্রায় তিন মাস পর্যন্ত এটি সংরক্ষণ করে রাখা যাবে।
advertisement
এ তো ছিল কার্যকারিতা এবং সংরক্ষণের দিক! কিন্তু জোগানের দিক থেকে কতটা সুবিধা দিতে পারছে ইউনাইটেড স্টেটসে এই ভ্যাকসিন?
advertisement
জানা গিয়েছে যে সেই দিক থেকেও আশার আলো জাগিয়েছে জনসনের ভ্যাকসিন। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে যে আপাতত মার্কিন মুলুকে ২৮.৫৫ মিলিয়ন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা নথিবদ্ধ হয়েছে। ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৫১২,০০০। এ হেন সঙ্কটকালে একেবারে ঠিক সময়ে হাতে আসতে চলেছে জনসনের ভ্যাকসিন। জানা গিয়েছে যে চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে খুব কম করে হলেও অন্তত ১০০ মিলিয়ন ডোজ সরবরাহ করতে পারবে জনসন। অন্য দিকে, জুলাই মাসের মধ্যে Pfizer আর Modena-র সম্মিলিত ৬০০ মিলিয়ন ডোজ পৌঁছে যাবে। তাই যাঁরা মাত্র একবার ভ্যাকসিন নিতে চান, তাঁদের জন্য তো বটেই, পাশাপাশি আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলাতেও সক্ষম হবে জনসনের ভ্যাকসিন।
Location :
First Published :
March 01, 2021 3:22 PM IST