Youtuber Dead Baby Controversy: ইনফ্লুয়েন্সার সোহিনীর পুত্রশোক, অভিযোগের তির ডাক্তারের দিকে! অবশেষে বাখ্যা দিলেন চিকিৎসক
- Published by:Salmali Das
- news18 bangla
Last Updated:
Youtuber Dead Baby Controversy: সোহিনী বা তাঁর স্বামী অনির্বাণের অ্যাকাউন্ট থেকে এই সংক্রান্ত কিছু পোস্ট না এলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে এক মহিলা নিজেকে সোহিনীর ননদ পরিচয় দিয়ে জানিয়েছেন চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে অকালে চলে গিয়েছে সোহিনী ও তাঁর ভাইয়ের সদ্যোজাত পুত্র।
কলকাতাঃ সোহিনী গঙ্গোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে তাঁকে সবাই প্রায় চেনেন। অন্তঃসত্ত্বাকালীন অবস্থায় প্রেগন্যান্সির প্রতিটি মুহূর্ত আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করেছেন সোহিনী। অনাগত ভবিষ্যতকে ভেবে, কল্পনা করে তাঁর আনন্দ ছিল সীমাহীন। স্বপ্নের বোনা সেই জাল ছিঁড়ে যাবে, কে জানত! মাতৃত্বের সাধ আস্বাদন করলেন বটে, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই কোল শূন্য হয়ে গেল।
তাঁর ঘটনার কথা চাউর হতেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে নানা কথা ভেসে উঠেছে। সোহিনী বা তাঁর স্বামী অনির্বাণের অ্যাকাউন্ট থেকে এই সংক্রান্ত কিছু পোস্ট না এলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে এক মহিলা নিজেকে সোহিনীর ননদ পরিচয় দিয়ে জানিয়েছেন চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে অকালে চলে গিয়েছে সোহিনী ও তাঁর ভাইয়ের সদ্যোজাত পুত্র। শুরু হয় চিকিৎসকে উপর দোষারোপ করা, ও এই মৃত্যুর জন্য তাঁকেই দায়ি করা। সেই নিয়েই এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুললেন সোহিনীর চিকিৎসকর শিবেন্দ্রনাথ দাস বা এসএন দাস।
advertisement
advertisement
তিনি বলেন, ‘বিষয়টা ওয়ান সাইডেড হয়ে যাচ্ছে তাই ভাবলাম একটু বিশ্লেষণ করি। আমি ২২ তারিখ খুব সকালে একটা ফোন পাই যে আমার আন্ডারে চিকিৎসাধীন এক মহিলার রাত থেকে বাচ্চা নড়ছে না। প্রথমবার মা হচ্ছেন তিনি। আমি রোগীকে চিনি, ব্লাড প্রেসার বেশি ওঁর, বাচ্চার মাপ খুব ছোট ওঁর বয়স খানিকটা বেশি। তাই আমি তাঁকে বলি, দেরি না করে আমার বাড়িতে আসতে। সকাল ৮টা নাগাদ বাড়িতে আসেন তাঁরা, পরীক্ষা করে দেখা যায় বাচ্চার হার্ট সাউন্ড পাওয়া যাচ্ছে না ঠিক মতো। মায়ের প্রেসারও বেশি অনেক। সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন-সহ হাসপাতালে ভর্তি হতে বলি এবং পরীক্ষা করে দেখতে বলি কী হয়েছে।’
advertisement
চিকিৎসক জানান, ‘সোহিনী প্রেসারের ওষুধ আগে থেকেই খান। প্রেসার বেশি থাকায় বিশ্রামে থাকতে বলা হয়েছিল। শুক্রবার সোহিনীর বাড়ির লোক সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ ফোন করে জানান, বাইরে কোথাও একটা আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়েছে এবং দেখা গেছে সব ঠিক আছে। তিনি তাও বলেন হাসপাতালে ভর্তি করতে। কিন্তু ওঁরা প্রত্যেকেই নাকি চিকিৎসকের কাছে একবার যেতে চেয়েছিলেন।’
advertisement
ডাঃ দাস বলেন, ‘আমি তখন মিলেনিয়াম হাসপাতালে ছিলাম, সেখানেই আসতে বলি, দাঁড়িয়ে থাকি, রোগীকে দেখি। উনি বলেন, বাচ্চা নড়ছে, আমি ভাল আছি। আমি তাও বলি, পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন আছে তাই ভর্তি হয়ে যান। আমি সঙ্গে সঙ্গে ফিরে যাই। আমার আরএমও এবং অভিজ্ঞ নার্সরা তিনবার পরীক্ষা করে দেখেন, বাচ্চার কোনও হার্ট সাউন্ড পাওয়া যাচ্ছে না। আমি জানিয়ে দি আসছি, ততক্ষণে একটা পোর্টেবল আল্ট্রা সাউন্ডের ব্যবস্থা করতে। এসে দেখি, বাচ্চার কোনও হার্ট সাউন্ড নেই। রোগীর স্বামীকে ডেকে বুঝিয়ে দি বিষয়টা এবং জানিয়ে দি, ভর্তি হওয়া থেকে তখনও পর্যন্ত কোনও হার্টবিট ভ্রুণের নেই। সোনোলজিস্টের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিই যেহেতু আমি সোনোলজিস্ট আমি নই। ওঁরা নিয়ে যান এবং বিকেল ৫টায় ওদেরও রিপোর্ট আসে বাচ্চা আর নেই।’
advertisement
চিকিৎসকের দাবি, ওই রিপোর্ট নিয়ে ওঁরা হাসপাতালে ফিরে ভাঙচুর করার চেষ্টা করেন, গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করেন এবং রোগীকে ছাড়িয়ে ওখান থেকে নিয়ে চলে যান। এরপর তাঁর কাঁছড়াপাড়ার বাড়িতে কিছু দুষ্কৃতী গিয়ে হেনস্থা করার চেষ্টা করেন। মুখে গালিগালাজ করতে থাকেন এবং যা তা করেন। ওদের বক্তব্য তখনই সিজার করা হল না কেন।
advertisement
চিকিৎসকের বক্তব্য, ‘বাচ্চাটি অত্যন্ত ছোট ছিল, ওজন কম ছিল। এই অবস্থায় বললেই তো সিজার করা যায় না। এই অবস্থায় বাচ্চার বাইরে এসেও অনেক কিছু বিষয় ও সমস্যা থাকে। ভর্তির পর থেকে যেহেতু আমি কোনও হার্ট সাউন্ড পাইনি তাই মৃত বাচ্চার সিজার করার কোনও ইন্ডিকেশন সেই সময় ছিল না। সন্ধেবেলা আমাকে এসে আক্রমণ করে পরিবারের লোকজন। আমি তখনও বলি, আশপাশের কোনও হাসপাতালে ভর্তি করতে, যদি নরম্যাল ডেলিভারি হয়, তাহলে দেখব। আমি প্রতিনিয়ত খাকব। এবার ভর্তি করার পর আমি যাই ওই হাসপাতালে। সেখানে রাত ৮টা নাগাদ আমাকে আবার মারধরের চেষ্টা করা হয়, মুখে তো বাজে কথা চলছিলই। এত কিছু সত্ত্বেও আমি রোগীর কাছে পৌঁছই। পরীক্ষা করি, কী হয়েছে আমি বোঝার চেষ্টা করি। কিন্তু রোগী এত উত্তেজিত ছিলেন আমি রাত ৯টার পর সিদ্ধান্ত নিই কিছু একটা সমস্যা আছে, এটাকে সিজার করা উচিত। মাকে বাঁচানো দরকার। সিজারের ব্যবস্থা করি।’
advertisement
সিজার করতে গিয়েই বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। তিনি দেখেন, সোহিনীর ‘কনসিল্ড অ্যাক্সিডেন্টাল হেমারেজ’ হয়েছে। যার অর্থ, পেটের ভিতরে রক্তপাত। জানা যায়, এটি সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ যাঁদের, তাঁদেরই বেশি হয় এবং যাঁরা তুলনামূলক বয়সে বড় বা বেশি কাজকর্ম করেন, লাফালাফি করেন, তাঁদের হয়। এই সমস্ত কেসে মায়ের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রচন্ড বেশি থাকে বলে জানান তিনি, তাই সমস্ত ঝুঁকি নিয়েও তিনি অস্ত্রোপচার করেন মাকে বাঁচাতে এবং তা সাকসেসফুল হয়।
এসএন দাস বলেন, ‘পরে আমি রোগীর পরিবারকে জানাই, এই কেসের চিকিৎসা করতে গিয়ে যে পরিকাঠামো দরকার হয়, সেটা এখানে নেই। প্লাজমা বা প্লেটলেট দিতে হলে এখানে পাওয়া যাবে না। তাই স্থানান্তরিত করা হয়। ব্লাড দেওয়া হয়। এখন সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়। ভর্তি হওয়ার পর থেকেই কিন্তু আমরা কোনও হার্টবিট পাইনি বাচ্চার। প্রথম আল্ট্রাসাউন্ডের রিপোর্ট নিয়ে তাই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। পরেরটাতে তো পরিষ্কার বাচ্চা মারা গেছে। মা হওয়ার আগে তার বাচ্চাকে না পাওয়া খুবই কষ্টের। আমার কাছেও দুঃখজনক। কিন্তু আমি তো বাচ্চাটাকে ভিতরে ঢুকে মেরে ফেলিনি। ১০০জন মা অন্তঃসত্ত্বা হলে ৫ শতাংশ কারণ ছাড়াই মারা যায়। এক্ষেত্রে তো কারণ ছিল।’
সব শেষে চিকিৎসকের যুক্তি, ‘ক্লিনিক্যালি সবসময় বোঝা যায় না, আল্ট্রা সাউন্ড লাগে। আমি বুঝে ডায়াগনসিস করেছি। আমি যা বলছি, সেটা কিন্তু মন থেকে বলছি না। সবকিছুর রিপোর্ট আছে, ব্লাড ক্লট ছিল, ওভেলিয়ার ইউট্রাস বলে একটা কথা আছে, সেটার রিপোর্টও আছে।’
নেটিজেনদের উদ্দেশে তাঁর মত, ‘এভাবে না জেনে কথা বলা কি ঠিক? কয়েকজন লোক আবার বলছেন, আমি তাঁদের বাবাকে মেরেছি, কিন্তু আমি তো স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। জীবনে কোনওদিন পুরুষ রোগীর চিকিৎসাও করিনি। আমি মায়ের কথা ভেবে চুপ করে ছিলাম। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় যা চলছে, আমাকে যা যা শুনতে হচ্ছে আমার মনে হল সোশ্যাল মিডিয়াতেই বিষয়টা জানাই। আমি এমনকি অস্ত্রোপচারের বা চিকিৎসার কোনও টাকা নিইনি, চার্জ করিনি।’
বিনোদন জগতের লেটেস্ট সব খবর ( Entertainment News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ বলিউড, টলিউড থেকে হলিউড সব খবরই পাবেন এখানে ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন ন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
August 26, 2025 8:53 PM IST