Tollywood-Rakta Palash: পা কেটে ফালা ফালা! রক্তে লাল হচ্ছে পলাশ ! ছুটছে মায়া ওরফে মৌমিতা! ভরসা রেখেছিলেন কমলেশ্বর! শুনুন সাহসী মেয়ের লড়াই

Last Updated:

Tollywood-Rakta Palash: জীবনের সবটা দিয়ে 'মায়া'কে জীবন্ত করেছেন মৌমিতা পণ্ডিত! তারপরেও প্রচারের আলো থেকে অনেকটাই দূরে! সাহসী মেয়ের ওপর ভরসা রেখেছিলেন একমাত্র কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়!

#কলকাতা: বেল পাহাড়ির জঙ্গলে কোলে বাচ্চা নিয়ে ছুটছে মায়া! রক্তে ভাসছে শরীর। কে জানে কখন কোথা থেকে এসে পড়বে মৃত্যু। কিন্তু বাঁচতে হবেই মায়াকে! পলাশ ফুলের লাল রঙ শরীরে রক্ত হয়ে জমাট বাঁধছে। কী করবে মায়া? কোথায় যাবে? শেষ পরিণতি সকলেই জানে এতক্ষণে! কিন্তু মায়া? তাঁর কি হল?
কাট টু! ২২শে ডিসেম্বর ২০২১। অন্যদিনের মতোই সূর্য উঠেছে আকাশে। সকাল ন'টায় হঠাৎ বেজে উঠল ফোন। ঘুম চোখে মেয়েটা দেখল, 'কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়!' ফোনের ওপার থেকে ভেসে এলো, " মৌমিতা আমরা একটা ছবি বানাচ্ছি , গতকাল ই আমি রেকি থেকে ফিরলাম .. তুমি দুপুর ১২ টা ১২.৩o এর মধ্যে আমার বাড়িতে চলে এসো আমার টিম ও থাকবে , গল্পটা শুনে নেবে , তারপর বাকি কথা বলে নিচ্ছি , তুমি আমার ছবির প্রধান চরিত্র। ঠিকানা পাঠিয়ে দিয়েছি , স্ক্রিপ্ট পড়তে হবে, চলে এসো।"
advertisement
ঠান্ডায় হাত পা কাঁপছে তখন মেয়েটার। সেই সঙ্গে মনে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচল। একি সত্যি ঘটছে? সেদিন থেকেই মৌমিতার জীবনে শুরু 'মায়া' হয়ে ওঠার লড়াই!
advertisement
'রক্ত পলাশ'-এর প্রধান চরিত্র? কেমন মনে হয়েছিল?
"প্রথমে বিশ্বাস হচ্ছিল না নিজের কানকেই! আমি সত্যি শুনছি তো! সেই কবে কমলদাকে বলেছিলাম, কাজ থাকলে বলবেন! কিন্তু সেটা যে এভাবে সত্যি হবে ভাবিনি। আমার জীবনে 'মায়া' চরিত্রটা যে কত বড় পাওয়া আমি বলে বোঝাতে পারবো না।"
advertisement
তারপর ঠিক কি হল?
"কমলদার ফোন পাওয়ার পর থেকে আমার কানের ভেতরটা ভন ভন করছিল , এবং আমি ভাবছি কমল দা protagonist বলে থেমে গেলো কেনো ?? নাকি বাকিটা আমি শুনতে পাচ্ছিনা এত অবেগ, হতেই পারে ..প্রাণপণে শোনার চেষ্টা করছি protagonist এর বোন , বান্ধবী, কাজের লোক, পরিচিত ... ইত্যাদি ... কিন্তু কমল দা আর কিছু বললেন না । আমি খানিকটা স্তম্ভিত আবার check করলাম সত্যিই তো ? বুঝলাম হ্যাঁ সত্যি।এক মুহূর্ত দেরি না করে সব কাজ মিটিয়ে সোজা কমলদার বাড়ি!"
advertisement
কখন বুঝলেন আপনিই প্রধান চরিত্র?
"কমলদার অফিস পৌঁছে দেখি অফিসের ব্ল্যাকবোর্ডটায় লেখা 'মায়া'! তার পাশে লেখা মৌমিতা পণ্ডিত । আমি কিন্তু তখন আরও ঘোরে! বসে আছি হয়ত এক জায়গায় কিন্তু মন এবং মনন চিন্তন সব বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে ছোটাছুটি করে বেড়াচ্ছে । কমলদা এলেন । ভীষন শান্ত একটা মানুষ একগাল সাবলীল হাসি নিয়ে এসে আমাকে বললেন" বসো "। তারপর শুরু হল গল্প শোনা... রক্ত পলাশ এর গল্প শোনা তাও আবার কমলদার মুখে ... গল্প চলতে থাকলো! এই শুরু হল মায়ার যাত্রা!"
advertisement
নিজে কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?
"রক্তপলাশ" এর আগে নাম ছিল "জঙ্গল" । স্ক্রিপ্ট পড়ছি সন্ধে থেকে মাঝরাত হল, ভোর হল , আজান শুনতে পেলাম । গল্পটা পুঙ্খানপুঙ্খভাবে পড়ে শেষ করে বুঝলাম চোখটা ফুলে গেছে , কেঁদেছি অনেক কেঁদেছি আমি সেই রাতে। মায়া আর মৌমিতা একসাথে কেঁদেছিল সেই রাতে । দু'জনের আবেগ একসাথে মিশে যাচ্ছিল যত রাত বাড়ছিল সেটার তাপমাত্রাও বাড়ছিল । তারপর একসময় PDF স্ক্রিপ্ট শেষ করে ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম অঘোরে। পরদিন সকালে যখন ঘুম ভাঙলো চমকে উঠেই প্রথমে মোবাইলটা চেক করেছিলাম ভয়ে ... যদি এই পুরোটা স্বপ্ন হয়! যেটা আমি প্রায়ই দেখি। এবারে দেখলাম না ফোনে নম্বর গুলো আর আমার স্ক্রিপ্ট দুটোই আছে । "
advertisement
শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
সে এক অধ্যায়। বস্তির দৃশ্যটা আগে শ্যুট হয়েছিল ভাগ্যিস। আর ঠিক এই দৃশ্য থেকেই আমি বুঝেছিলাম মায়ার ভিতটা। চরিত্র হয়ে উঠতে গেলে ভিতটা জানা খুব জরুরি। তারপর বেল পাহাড়ির জঙ্গলে শ্যুটিং। যেদিন শ্যুট ছিল সেদিন এক কাণ্ড ঘটে। আমাকে যে জুতোটা দেওয়া হয়েছিল সেটা একটু ওভার সাইজ ছিল। বেল পাহাড়িতে আমার পা কেটে ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায়। এদিকে শ্যুটিং শেষ করতে হবে। পায়ে গজ, বা ভালো করে ব্যান্ডেজ কিছুই করা যাবে না। কারণ তাহলে কন্টিনিউটি জার্ক হবে। সামান্য একটা ব্যান্ডেট লাগিয়ে দেওয়া হল।"
advertisement
সেকি ! তারপর?
এবার আমার কোলে তিতির। বছর পাঁচেকের বাচ্চা মেয়েটাকে কোলে নিয়ে সারাদিন আমাকে পাহাড়ে ছুটতে হবে! তিতিরকে আমিই কাস্ট করে দিয়েছিলাম কমলদাকে। দারুণ অভিনয় করে ওইটুকু মেয়ে! আমি যত পাহাড়ি রাস্তায় দৌড়াচ্ছি তিতির ওরফে তামান্নাকে নিয়ে তত আমার পা দিয়ে রক্ত গড়াচ্ছে। অথচ মুখে এক্সপ্রেশন ধরে রাখতেই হবে। আলো পড়ে যাওয়ার আগেই কাজ শেষ করতে হবে। শ্যুটিং শেষে কমলদার মুখে যে তৃপ্তির হাসি দেখেছিলাম তা আমি ভুলতে পারবো না।"
পরিচালকের সঙ্গে কাজের কেমন অভিজ্ঞতা?
"কমলদার মতো পরিচালক খুব কম হয়। কমলদা বুঝেছিলেন আমি মায়াকে ধারণ করে নিয়েছি। আমার উপর পুরো ভরসা রেখেছিলেন। এমন কিছু শট আছে, যেখানে আমি নিজে সম্পূর্ণ স্বাধীনতায় কাজ করেছি। কমলদা আনন্দে লাফিয়ে উঠেছেন। আমার জীবনের সেরা কাজ 'রক্ত পলাশ"।"
এর আগেও তো অনেক কাজ করেছেন! তবে এটাই কেন সেরা?
"কাজ তো করেছি। কিন্তু নিজেকে প্রমাণ করার জায়গাই পাইনি। আমি সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে কেকে মেননের সঙ্গেও অভিনয় করেছি। কিন্তু সেখানে চরিত্র কোথায়? যখন আমাকে কেউ কাজ পাঠাতে বলতেন, আমাকে ভাবতে হত এত কাজ করেছি, কিন্তু পাঠানোর মতো তো একটাও নেই! চরিত্র পেয়েছি, কিন্তু মৌমিতা যে অভিনয় জানে সেটা দেখানোর সুযোগ হয়নি।"
নিশ্চয় খুব খারাপ অভিজ্ঞতা আছে আপনার?
সে তো আছেই। কিছুদিন আগে একটা হিন্দি ছবিতে কাজ করলাম। সেখানে আমাকে বলা হচ্ছে এখানে 'টিকটিক' ওখানে 'টিকটিক" এটাতেই স্ক্রিপ্ট বোঝানো শেষ। কি বুঝবেন বলুন? তারপর বলা হচ্ছে, 'তোমার চোখ এত বড় কেন?" আমার চোখ আমি বদলাবো কি করে! কোথাও গিয়ে নিজের উপর থেকে বিশ্বাস চলে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, 'আমি সত্যিই অভিনয়টা জানি তো? এত দিন ধরে থিয়েটার করছি! কিন্তু কই কেউ তো নজর করছে না! আত্মবিশ্বাস তলানিতে চলে এসেছিল। আর ঠিক সেই সময় কমলদা আমার ওপর ভরসা করেছেন।"
এর পর কী কাজ আছে?
সবার আগে আমি চাইবো 'মায়া'কে সবাই দেখুক। 'মায়া'তে আমি যে কতখানি নিজেকে ঢেলে দিয়েছি সেটা আগে দেখা দরকার। তবেই তো সকলে বুঝবেন, মৌমিতা এক মিনিটের দৃশ্য নয় একটা কাজ যত্নের সঙ্গে টেনে নিয়ে যেতে পারে! আর এই জন্য কমলদা 'রক্ত পলাশ'-এর একটা স্পেশাল স্ক্রিনিং করছেন। যেখানে টলিউডের সব পরিচালকরা থাকবেন। এভাবে কেউ পাশে দাঁড়াতে পারে, কমলদাকে না দেখলে ভাবতে পারতাম না।"
মৌমিতা 'রক্ত পলাশ'-এর পরেও কি একটু আড়ালে থেকে যাচ্ছে?
"আসলে আমি যে ভালো পিআর করতে পারি না। তাই প্রধান চরিত্র হয়েও আড়ালে থাকতেই হচ্ছে! অনেক কিছুই দেখি, কষ্টও হয়! তবে আমি আমার কাজ করছি। জানি ফল আসবেই!"
আর অন্য কাজ?
আমি একটা নতুন ছবিতে কাজ করছি। পরিচালক নীলাক্ষি সেনগুপ্তর ছবিতে। মুর্শিদাবাদের ওপর কাজটা হবে। তাই রেকি থেকে, কাস্টিং সবটাই আমি করছি। সেই সঙ্গে অভিনয়। এই কাজটা ফের একটা ভালো কাজ হতে চলেছে!
কী ভাবে জীবনটা কাটাতে চান?
" কাজ করে যেতে চাই। জীবন অনেক কিছু আমাকে দেখিয়েছে। আমার বাচ্চাদের (আদরের ডগি, বগাই-টুকাই) নিয়ে গোটা জীবনটা কাটাতে চাই। কাজ আর আমার বাচ্চারাই আমার কাছে সব কিছু! বাকিটা সময়ের হাতে! ক্যারেক্টর আর্টিস্টরাও যে ছবির প্রধান হতে পারে, আশা করি তা এখন সকলেই বুঝেছেন! এবার দেখা যাক বাকিটা!"
Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
বিনোদন জগতের লেটেস্ট সব খবর ( Entertainment News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ বলিউড, টলিউড থেকে হলিউড সব খবরই পাবেন এখানে ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন ন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
Tollywood-Rakta Palash: পা কেটে ফালা ফালা! রক্তে লাল হচ্ছে পলাশ ! ছুটছে মায়া ওরফে মৌমিতা! ভরসা রেখেছিলেন কমলেশ্বর! শুনুন সাহসী মেয়ের লড়াই
Next Article
advertisement
MGNREGA: মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! কোটি কোটি কৃষক শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত, কেন্দ্রের নয়া ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
  • মনরেগা প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব সোনিয়া গান্ধি

  • কংগ্রেসে নেত্রীর দাবি, মনরেগা প্রকল্পকে কার্যত ধ্বংস করে দিল বিজেপি

  • প্রকল্পকে বদলের আইনকে ‘কালো আইন (ব্ল্যাক ল)’ বলে উল্লেখ্য সোনিয়ার৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement