'পড়াশোনায় তুখোড় হবে, এই দাবি নেই, ভাল মানুষ হোক' মেয়ে শাহিদার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে অকপট অভিষেক

Last Updated:

স্ত্রী অভিনেত্রী। নিজেও তিনি পরিচালক। তবে সবচেয়ে পছন্দের পরিচয়, তিনি শাহিদা নীরার বাবা। অভিষেক সাহা। ফাদার্স ডে-র আগে বাবা-মেয়ের সমীকরণ নিয়ে নিউজ 18 বাংলার সঙ্গে আড্ডা জমালেন তিনি। সুদীপ্তার সঙ্গে বিয়ে, বাবা হওয়া, সম্পর্কের নানা ভাঁজের কথা বললেন অভিষেক।

ARUNIMA DEY
প্র: প্রথমেই জানতে চাইব, মেয়ে শাহিদার সঙ্গে সম্পর্কের বুননটা কেমন?
উ: ও কিন্তু একেবারেই আমাকে ভয় পায় না। শাহিদা সব সময় বলে, ‘তুমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড’। আমিও ওর বন্ধু হওয়ার চেষ্টাই করি।
advertisement
প্র: হ্যাঁ মেয়ে-বাবার সম্পর্ক সবসময়ই স্পেশ্যাল।
উ: আমি এক মত। শাহিদার একটা দাবি রয়েছে আমার ওপর। ও পারবে, কিন্তু অন্য কেউ আমাকে কিছু বলতে পারবে না। আমাকে আগলে রাখাই যেন শাহিদার কাজ। লকডাউনের পর, কয়েকদিন হল, আমি বাড়ি থেকে বেরচ্ছি। ওর মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ‘বাবা কেন বেরচ্ছে’? এই নিয়ে খুব অসন্তোষ।
advertisement
প্র:  বাবা হওয়ার পর, কোনও বদল এসেছে আপনার মধ্যে?
উ: কোনও কী বলছেন? পুরোটাই বদলে গিয়েছি। সৃজনশীল ভাবেও অনেক বদল এসেছে। আগে যেমন করে ভাবতাম, কোনও জিনিস দেখতাম, গোটাটাই পাল্টে গিয়েছে। জীবনের ২১ বছর একা কাটিয়েছি। একটা বাউন্ডুলে ভাব ছিল আমার মধ্যে। পরোয়া করি না গোছের। এখনও যে খুব করি, তা নয়। তবে মনে হয়, অনেক স্পর্শকাতর হয়েছি।
advertisement
প্র: নিশ্চয়ই হয়েছেন।
উ: আসলে কী জানেন, ১৭ বছর আমি মুম্বইয়ে কাটিয়েছি। একা থাকার অভ্যেস হয়ে গিয়েছিল। কলকাতায় ফেরার আগেই, মাকে বলে দিয়েছিলাম, যে একা থাকব। বিয়ের আগে পর্যন্ত একাই ছিলাম। ছন্নছাড়া জীবন কাটাতাম।
প্র:  বদলটা তাহলে কী করে এল?
advertisement
উ: সত্যি জানি না। মনে হয় দায়িত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটু সাবধানী হয়েছি। ২০১২ সালের একটা ঘটনা বললে জানি বিশ্বাস করবেন না।একদিন গড়িয়াহাট গিয়েছি, এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা। ওঁর একটা ট্র্যাভেল এজেন্সি আছে। তার পরদিন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ও কাশ্মির যাচ্ছিল। জিজ্ঞেস করলো, 'যাবি না কি?' আমি ওর সঙ্গে কাশ্মীর চলে গেলাম। বাড়িতে গিয়ে প্যাক করে, পরদিন বেরিয়ে পড়লাম। এরকমই, একবার,  এক দাদার সঙ্গে কাজে শিলিগুড়ি গিয়েছিলাম। কাজ শেষ হওয়ার পর আমার ফিরতে ইচ্ছে করল না। আমি ওখান থেকে, একাই ভুটান চলে গেলাম। গিয়ে বেশ কিছু দিন থাকলাম। সেই আমি এতো সাবধানী বাবা হব, কখনওই ভাবিনি।
advertisement
প্র:  আমার তো কৌতূহল হচ্ছে, আপনার মতো মানুষের বিয়ে কেমন ভাবে হল তা নিয়ে।
উ: দেখুন এই প্রশ্নেরও যুক্তি দিয়ে উত্তর দিতে পারব না। কপালে ছিল, এটাই বলবো। দু’ঘণ্টার আলোচনায় ঠিক করি বিয়ে করবো। সুদিপ্তাকে আমি চিনতাম না। আমি ওঁর দিদির বন্ধু। আমি জানি ও সোমার (বিদিপ্তা) বোন। তারপর কেমন করে যে সব হলো। ওই হয়ে গেল।
advertisement
প্র: সুদীপ্তাদি যদিও এখন বেছে কাজ করেন। তবু একটু হলেও কাজে বেরতে হয়। অনেক সময় হয়তো আপনাকে একাই মেয়েকে সামলাতে হয়। সেই কাজে আপনি কি বেশ পটু?
উ: আমার জানেন তো বাড়ির কাজে কোনও সমস্যা হয় না। লকডাউনে রান্না-বান্না, সে ভাবে বললে রান্নাঘরটা আমার দফতর। বাকিটা সুদীপ্তার। বাচ্চাকে দেখা মানে, ওকে খাওয়ানো, স্নান করানো, ওসব পারি। বললাম যে, গৃহকর্মে আমার সমস্যা নেই। তাছাড়াও মুম্বইয়ে প্রায় বেবি সিটার হয়ে গিয়েছিলাম। ওই শহরে দম্পতিরা, একা কাটানোর মতো সময় তো পান না। তাই একা সময় কাটাবেন বলে, আশপাশের বাড়ির বাচ্চাগুলোকে প্রায়ই আমার কাছে পাঠিয়ে দিত। তখন থেকে অভ্যেস হয়ে গিয়েছে।
advertisement
প্র: আপনার তাহলে আগে থেকেই প্র্যাক্টিস রয়েছে।
উ: হ্যাঁ বলতে পারেন। তাই ওই সময় আমাকে যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা বলতেন, বাবা হলে খারাপ বাবা হব না। কিন্তু বাবা হব, এটাই কখনও ভাবিনি।
প্র:  কেন?
উ: জানেন বিয়ের আগে যখন সুদিপ্তার সঙ্গে কথা হয়, তখন ওঁকে বলেছি। শেষ বয়সের জন্য টাকা জমাচ্ছি। বৃদ্ধাশ্রমে থাকব। এইসব বললাম, তার ১৫ দিন বাদে বিয়ে করে ফেললাম। তবে বাবা না হলে, অনেক কিছু না পাওয়া থেকে যেত।
প্র: আচ্ছা আপনার বাবা, আপনার সঙ্গে যেমন ছিলেন, শাহিদার সঙ্গেও কি আপনি তেমন? না একেবারেই আলাদা?
উ: আমি এতটা ভাবি না। তবে একটা জিনিস, আমি বাড়ির সকলের ছোট। বাবা আমাকে ভীষণ আদর দিয়েছেন। চেষ্টা করি এতটা আদর মেয়েকে না দিতে। তবে সুদীপ্তা সবসময়ই অভিযোগ করে থাকে, আমি নাকি মেয়েকে প্রচণ্ড আদর দিই।
প্র: আচ্ছা আদর আপনি বেশি দেন, তবে শাহিদা কাকে বেশি মিস করে? বাবা না মা, বাড়িতে কে না থাকলে ও বেশি দুঃখ পায়?
উ: আমি না থাকলে শাহিদা আমাকে খুব মিস করে। মাকেও করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে মাকে দেখতে না পেলে, একটু মা মা করে। তবে ভুলে যায়। আমি না থাকলে হয়তো এমনই হয়। শাহিদা মায়ের মতোই একটু আত্মভোলা। মায়ের মতোই স্পষ্টবাদী, মাথা গরম হবে, বলে মনে হয়। তবে ও খুব সৎ। কিছু ভুল করলে স্বীকার করে নেয়। সঙ্গে যদিও বলে, ‘বকবে না কিন্তু।’
প্র: মেয়েকে নিয়ে কী স্বপ্ন দেখেন?
উ:  আমি একেবারেই চাই না শাহিদার পেশা বেছে দিতে। ওর যা ইচ্ছে ও তাই হবে। পড়াশোনায় তুখোড় হতে হবে, এই দাবি আমাদের নেই।  শাহিদাকে পড়ার চাপ দিতে চাই না। আমরা চাই, পড়ার বাইরে নাচ, গান, কবিতা করারও যেন সময় পায়। সারাদিন বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে থাকুক, সেটা আমাদের ইচ্ছে নয়। আমি নিজে স্টেট লেভেল ফুটবল খেলেছি। রোজ ছাদে গিয়ে একটু দৌড়াদৌড়ি করি শাহিদার সঙ্গে। খেলাধুলোটাও জরুরি। বাকিটা ও বড় হবে যখন নিজেই করে নেবে। আজকালকার বাচ্চারা আপনার-আমার চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট। শুধু মানুষটা ভাল হোক, এইটুকুই চাওয়া।
(ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে)
Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
বিনোদন জগতের লেটেস্ট সব খবর ( Entertainment News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ বলিউড, টলিউড থেকে হলিউড সব খবরই পাবেন এখানে ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন ন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
'পড়াশোনায় তুখোড় হবে, এই দাবি নেই, ভাল মানুষ হোক' মেয়ে শাহিদার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে অকপট অভিষেক
Next Article
advertisement
MGNREGA: মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! কোটি কোটি কৃষক শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত, কেন্দ্রের নয়া ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
  • মনরেগা প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব সোনিয়া গান্ধি

  • কংগ্রেসে নেত্রীর দাবি, মনরেগা প্রকল্পকে কার্যত ধ্বংস করে দিল বিজেপি

  • প্রকল্পকে বদলের আইনকে ‘কালো আইন (ব্ল্যাক ল)’ বলে উল্লেখ্য সোনিয়ার৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement