Sohini Ganguly: 'USG-তে হার্টবিট...' প্রসবের ঠিক আগেই সন্তানের মৃত্যু, নেটদুনিয়ায় তুমুল তর্ক-বিতর্ক! অবশেষে মুখ খুললেন সোহিনী, ভয়ঙ্কর কঠিন সত্যি সামনে...
- Published by:Shubhagata Dey
- news18 bangla
Last Updated:
Sohini Ganguly Miscarriage: সন্তানের মৃত্যুর দিন থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। পাঁচদিনে নানা তর্ক-বিতর্ক সামনে এসেছে। পরিবার কাঠগড়ায় তুলছে চিকিৎসককে, অন্যদিকে অনেকেই সোহিনীর জীবনযাপন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও করার বিষয়টি বিরক্তির চোখে দেখছেন। ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে চিকিৎসকের বক্তব্যও। শেষমেশ মুখ খুললেন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার সোহিনী গঙ্গোপাধ্যায়।
কলকাতাঃ সন্তানের মৃত্যুর দিন থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। পাঁচদিনে নানা তর্ক-বিতর্ক সামনে এসেছে। পরিবার কাঠগড়ায় তুলছে চিকিৎসককে, অন্যদিকে অনেকেই সোহিনীর জীবনযাপন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও করার বিষয়টি বিরক্তির চোখে দেখছেন। ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে চিকিৎসকের বক্তব্যও। শেষমেশ মুখ খুললেন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার সোহিনী গঙ্গোপাধ্যায়।
ফেসবুকে সোহিনী লিখেছেন, “২২ অগাস্ট আমাদের জীবনে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, তাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে যা চলছে, তা আমাদের কল্পনার অতীত। আমরা বিভিন্ন মানুষের জল্পনার এবং সেই সংক্রান্ত আলোচনায় বিধ্বস্ত। এ বিষয়ে নানা ভিডিও, পোস্ট, ডাক্তারবাবুর ভিডিওটি ও তার কমেন্ট সেকশন আমাদের দু’জনকে এই শোকের সময়ে দুর্বলতর করে তুলছে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে কোনো অফিসিয়াল বা আনঅফিসিয়াল বক্তব্য রাখিনি। এই পাঁচ দিনে আমাদের পক্ষে তা ভাবার পরিসরই ছিল না। আমরা চাইনি এখনই এই বিষয়কে কেন্দ্র করে কোনও কথা হোক যা আমাদের মানসিক অবস্থাকে আরো বিঘ্নিত করে। আমরা নিশ্চয়ই আমাদের সঙ্গে হওয়া সমস্ত ঘটনার বিবরণ আপনাদের সামনে রাখব, সাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়েই দাঁড়াব আপনাদের সামনে। কিন্তু এই মুহুর্তে আমরা মানসিক ও শারীরিক ভাবে অসমর্থ আপনাদের প্রশ্ন, ট্রোল, লড়াই এগুলোর উত্তর দিতে। আপনারা অনুগ্রহ করে আমাদের সময় দিন; সন্তান হারানোর যন্ত্রণাটুকু আমাদের পরিবারকে সামলে উঠবার সুযোগ দিন। এই শোকের সময়ে এইটুকু সহমর্মীতা ও সাহায্যের আশা করছি আপনাদের থেকে। আশা রাখি, এই শোকবার্তা আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া অকল্পনীয় , আকস্মিক বিপদের সময়টুকুতে আপনাদের বিরত রাখবে এই সংক্রান্ত পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিতে। Kindly STOP Spreading post regarding our acute loss।”
advertisement
আরও পড়ুনঃ নদী তীরে সুইমিং পুল! সঙ্গী, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটুক একান্তে, কলকাতার একেবারে কাছেই ‘এই’ জায়গা, ঘুরে আসুন
উল্লেখ্য, সোহিনী প্রেগন্যান্সির প্রতিটি মুহূর্ত আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করেছেন। সন্তান কবে আসবে তা ঘিরে আনন্দ ছিল সীমাহীন। কিন্তু মাতৃত্বের সাধ আস্বাদন করার আগেই কোল শূন্য হয়ে গিয়েছে। সেই ঘটনার কথা চাউর হতেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে নানা কথা সামনে চলে আসে, সোহিনী বা তাঁর স্বামী অনির্বাণের অ্যাকাউন্ট থেকে এই সংক্রান্ত কিছু পোস্ট না এলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে এক মহিলা নিজেকে সোহিনীর ননদ পরিচয় দিয়ে জানিয়েছেন চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে অকালে চলে গিয়েছে সোহিনী ও তাঁর ভাইয়ের সদ্যোজাত পুত্রসন্তান। শুরু হয় চিকিৎসকের উপর দোষারোপ করা, সেই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছেন সোহিনীর চিকিৎসকর শিবেন্দ্রনাথ দাস বা এসএন দাস।
advertisement
advertisement
চিকিৎসক বলেন, ‘বিষয়টা ওয়ান সাইডেড হয়ে যাচ্ছে তাই ভাবলাম একটু বিশ্লেষণ করি। আমি ২২ তারিখ খুব সকালে একটা ফোন পাই। আমার আন্ডারে চিকিৎসাধীন এক মহিলার রাত থেকে বাচ্চা নড়ছে না। প্রথমবার মা হচ্ছেন তিনি। আমি রোগীকে চিনি, ব্লাড প্রেসার বেশি ওঁর, বাচ্চার মাপ খুব ছোট, ওঁর বয়সও খানিকটা বেশি। তাই আমি বলি, দেরি না করে আমার বাড়িতে আসতে। সকাল আট’টা নাগাদ বাড়িতে আসেন সকলে, পরীক্ষা করে দেখা যায় বাচ্চার হার্ট সাউন্ড পাওয়া যাচ্ছে না। মায়ের প্রেসারও বেশি অনেক ছিল। সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলি এবং পরীক্ষা করে দেখতে বলি কী হয়েছে।’
advertisement
চিকিৎসক জানান, ‘সোহিনী প্রেসারের ওষুধ আগে থেকেই খান। প্রেসার বেশি থাকায় বিশ্রামে থাকতে বলা হয়েছিল। শুক্রবার সোহিনীর বাড়ির লোক সকাল পৌনে ১১’টা নাগাদ ফোন করে জানান, বাইরে কোথাও একটা আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়েছে এবং দেখা গিয়েছে সব ঠিক আছে। তিনি তাও বলেন হাসপাতালে ভর্তি করতে। কিন্তু ওঁরা প্রত্যেকেই নাকি চিকিৎসকের কাছে একবার যেতে চেয়েছিলেন।’ চিকিৎসকের দাবি, ওই রিপোর্ট নিয়ে ওঁরা হাসপাতালে ফিরে ভাঙচুর করার চেষ্টা করেন, গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করেন এবং রোগীকে ছাড়িয়ে ওখান থেকে নিয়ে চলে যান। এরপর তাঁর কাঁচড়াপাড়ার বাড়িতে কিছু দুষ্কৃতী গিয়ে তাঁকে হেনস্থা করার চেষ্টা করেন, চলে অশ্রাব্য গালিগালাজ। ওদের বক্তব্য তখনই সিজার করা হল না কেন।’
advertisement
চিকিৎসক বলেন, ‘বাচ্চাটি অত্যন্ত ছোট ছিল, ওজন কম ছিল। এই অবস্থায় বললেই তো সিজার করা যায় না। এই অবস্থায় বাচ্চার বাইরে এসেও অনেক কিছু বিষয় ও সমস্যা থাকে। ভর্তির পর থেকে যেহেতু আমি কোনও হার্ট সাউন্ড পাইনি তাই মৃত বাচ্চার সিজার করার কোনও ইন্ডিকেশন সেই সময় ছিল না। সন্ধেবেলা আমাকে এসে আক্রমণ করে পরিবারের লোকজন। আমি তখনও বলি, আশপাশের কোনও হাসপাতালে ভর্তি করতে, যদি নরম্যাল ডেলিভারি হয়, তাহলে দেখব। আমি প্রতিনিয়ত থাকব। পেশেন্টকে ভর্তি করার পর আমি যাই ওই হাসপাতালে। সেখানে রাত আট’টা নাগাদ আমাকে আবার মারধরের চেষ্টা করা হয়, মুখে তো বাজে কথা চলছিলই। এত কিছু সত্ত্বেও আমি রোগীর কাছে পৌঁছই। পরীক্ষা করি, কী হয়েছে আমি বোঝার চেষ্টা করি। কিন্তু রোগী এত উত্তেজিত ছিলেন আমি রাত ন’টার পর সিদ্ধান্ত নিই কিছু একটা সমস্যা আছে, এটাকে সিজার করা উচিত। মাকে বাঁচান দরকার। সিজারের ব্যবস্থা করি।’
advertisement
সিজার করতে গিয়েই বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। তিনি দেখেন, সোহিনীর ‘কনসিল্ড অ্যাক্সিডেন্টাল হেমারেজ’ হয়েছে। যার অর্থ, পেটের ভিতরে রক্তপাত। জানা যায়, এটি সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ যাঁদের, তাঁদেরই বেশি হয় এবং যাঁরা তুলনামূলক বয়সে বড় বা বেশি কাজকর্ম করেন, লাফালাফি করেন, তাঁদের হয়। এই সমস্ত কেসে মায়ের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রচন্ড বেশি থাকে বলে জানান তিনি, তাই সমস্ত ঝুঁকি নিয়েও তিনি অস্ত্রপচার করেন মাকে বাঁচাতে এবং তা সাকসেসফুল হয়। এসএন দাস বলেন, ‘পরে আমি রোগীর পরিবারকে জানাই, এই কেসের চিকিৎসা করতে গিয়ে যে পরিকাঠামো দরকার হয়, সেটা এখানে নেই। প্লাজমা বা প্লেটলেট দিতে হলে এখানে পাওয়া যাবে না। তাই স্থানান্তরিত করা হয়। ব্লাড দেওয়া হয়। এখন সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়। ভর্তি হওয়ার পর থেকেই কিন্তু আমরা কোনও হার্টবিট পাইনি বাচ্চার। প্রথম আল্ট্রাসাউন্ডের রিপোর্ট নিয়ে তাই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। মা হওয়ার আগে তার বাচ্চাকে না পাওয়া খুবই কষ্টের। আমার কাছেও দুঃখজনক। কিন্তু আমি তো বাচ্চাটাকে ভিতরে ঢুকে মেরে ফেলিনি। ১০০ জন মা অন্তঃসত্ত্বা হলে ৫ শতাংশ কারণ ছাড়াই মারা যায়। এক্ষেত্রে তো কারণ ছিল।’
advertisement
আরও পড়ুনঃ শিয়ালদহ থেকে এসি লোকালে সোজা মায়াপুর ISKCON মন্দির…! কোথা থেকে, কোন ট্রেনে যাবে? জানুন
সব শেষে চিকিৎসকের যুক্তি, ‘ক্লিনিক্যালি সবসময় বোঝা যায় না, আল্ট্রা সাউন্ড লাগে। আমি বুঝে ডায়াগনসিস করেছি। আমি যা বলছি, সেটা কিন্তু মন থেকে বলছি না। সবকিছুর রিপোর্ট আছে, ব্লাড ক্লট ছিল, ওভেলিয়ার ইউট্রাস বলে একটা কথা আছে, সেটার রিপোর্টও আছে।’ নেটিজেনদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এভাবে না জেনে কথা বলা কি ঠিক? কয়েকজন লোক আবার বলছেন, আমি তাঁদের বাবাকে মেরেছি, কিন্তু আমি তো স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। জীবনে কোনওদিন পুরুষ রোগীর চিকিৎসাও করিনি। আমি মায়ের কথা ভেবে চুপ করে ছিলাম। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় যা চলছে, আমাকে যা যা শুনতে হচ্ছে আমার মনে হল সোশ্যাল মিডিয়াতেই বিষয়টা জানাই। আমি এমনকি অস্ত্রোপচারের বা চিকিৎসার কোনও টাকা নিইনি, চার্জ করিনি।’
বিনোদন জগতের লেটেস্ট সব খবর ( Entertainment News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ বলিউড, টলিউড থেকে হলিউড সব খবরই পাবেন এখানে ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন ন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
August 27, 2025 2:33 PM IST