Sandhya Mukhopadhyay: এই বসন্তে সকাল এসেছিল, সন্ধ্য়া গড়াল না আর

Last Updated:

Sandhya Mukhopadhyay: এই ক্ষতের মুখে প্রলেপ পড়বে না কোনওদিন৷ স্বর্ণযুগের মৃত্যু দেখা বাঙালির কালশৌচ কাটবে না কোনওদিন৷ এ সত্য অম্লান হয়ে মৃত্যরে করিবে অস্বীকার৷ আর ভাববে, মৃত্যু কেবল মিথ্যে হোক!

চলে যেতে যেতে...
চলে যেতে যেতে...
কিছুক্ষণ আরও না হয় রহিতে কাছে,
আরও কিছু কথা না হয় বলিতে মোরে...
আজ কথা শেষ৷ আজ আকাশ অংশত মেঘলা৷ আজ বন্ধ পাখির ডাক৷ আজ বাঙালির মুখভার৷ আজ শেষ স্বর্ণযুগের৷ আজ শেষ এই পথ৷ আজ ডাকবে না মধুমালতী৷ আজ ঘুমঘুম চাঁদ নেই৷ আজ ঝিকিমিকি করছে না তারা৷ আর গানের ইন্দ্রধনু? ছড়াচ্ছে সে আবেগ? না! আজ যে বাঙালির অগ্নিপরীক্ষা কষ্ট সহ্য করার৷ আজ সুরের মৃত্যু৷ সুরের সুরভীতেই শেষ হল বেলা৷ মৌমাছিদের গীতালি আজ চুপ৷ আজ স্বজনহারার দুঃখ বাঙালির৷ চলে গেলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়৷ বাঙালির গানের তুলসীতলায় সন্ধ্যাপ্রদীপ নিভল চিরতরে৷
advertisement
advertisement
সুচিত্রা সেন৷ যার মুখের সঙ্গে অবিকল মিলে যেত এই কিংবদন্তির গলা৷ বিরহে- অবসাদে- আনন্দ- হাসি- গানে বাঙালি চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পেত যাঁকে, তিনি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়৷ এই পৃথিবীতে আর নেই তিনি৷ লুকিয়ে পড়লেন অলোকে, যেখানে সত্যিই তাঁকে দেখা যাবে না আর৷
advertisement
কোনও এক পাহাড়ি বাগান৷ গান শোনাচ্ছেন সুচিত্রা, উল্টোদিকে উত্তম৷ এ তিথি শুধুই তখন দখিন হাওয়ার৷ এ লগনে দুটি পাখি মুখোমুখি নীড়ে জেগে রয়, কানে কানে রূপকথা কয়...উত্তমের মতো মুগ্ধ আরও কত বাঙালি প্রেমিক৷
মায়াবতী মেঘে এল তন্দ্রা... নচিকেতা ঘোষের কম্পোজিশন৷ সত্যিই যেন চোখ জুড়ে নেমে আসে ঘুমের আবেশ৷ চোখে আঁকা হয়ে যায় কত শত রঙিন স্বপ্ন৷ চাঁদের তিথিকে বরণ করতে চায় মন৷ সেই মাধবীরাত আজ বুঝি শেষ৷ এ গানের প্রজাপতি পাখায় পাখায় রং ঝরায়... তিনি পারতেন দুঃখের মলম হতে৷ তিনি পারতেন বারবার নস্টালজিয়াকে ফিরিয়ে আনতে৷
advertisement
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রশিক্ষিত, তবুও আধুনিক গানেই বাঙালি চেনে তাঁকে। ১৯৫০ সালে তারানা চলচ্চিত্রে একটি গান দিয়ে তিনি মুম্বইতে হিন্দি গান গাওয়া শুরু করেন। ১৯৫২ সালে কলকাতার বাড়িতে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৬৬ সালে শ্যামল গুপ্তকে বিয়ে করেন। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় তো বটেই রবীন চট্টোপাধ্যায় ও নচিকেতা ঘোষের সঙ্গে একের পর এক কাজ করতে থাকেন সন্ধ্যা।
advertisement
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে, যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে আগত লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তুদের জন্য তিনি ভারতীয় বাঙালি শিল্পীদের সঙ্গে গণ আন্দোলনে যোগ দেন৷ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর, প্রথম ২১ ফেব্রুয়ারির উদ্‌যাপন উপলক্ষে ঢাকায় অনুষ্ঠান করা অন্যতম প্রথম বিদেশি শিল্পী তিনি। ঝুলি ভরে ওঠে পুরস্কার আর সম্মানে৷
১৯৭১ সালে 'জয় জয়ন্তী' এবং 'নিশিপদ্ম' ছবিতে গান গেয়ে শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পান সন্ধ্যা৷ ২০১১ সালে রাজ্য সরকার তাঁকে 'বঙ্গবিভূষণ' উপাধিতে সম্মানিত করে। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয় তবে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। পুরস্কার ঘোষণার দু দিন পরেই শ্বাসকষ্ট, হালকা জ্বর, ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের ১০৩ কেবিনে ভর্তি হন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়৷ চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালের বক্ষরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সোমনাথ কুন্ডু। আচ্ছন্নভাব ছিল। বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থতায় ভুগছিলেন৷ ৭ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডও জ্বালিয়ে রাখতে পারলেন না সন্ধ্যাদীপ৷
advertisement
১৯৬৬ সালে বিয়ে করেন কবি শ্যামল গুপ্তকে৷ তাঁর অনেক গানের গীতিকার ছিলেন কবি শ্যামল৷ এর পর বাংলা ছবির দর্শক তথা শ্রোতা নবরূপে পান সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠকে৷ ১৯৭০সালে মুক্তি পায় ‘জয়জয়ন্তী’৷ উত্তম-অপর্ণা জুটির ছবির পাশাপাশি সুপারডুপার হিট এর গানও৷ সোনাঝরা খুশি ভরা সেই আন্দঝর্নার সিঞ্চন প্রজন্মজয়ী৷
advertisement
মনে পড়ে গেল জয়জয়ন্তীর কথা৷ আমাদের ছুটি ছুটি চল নেব লুটি ওই আনন্দঝর্না... সামনে অপর্ণা, পিছনে কুঁচোকাঁচা তাদের আন্টির সঙ্গে৷ চোখ চোখ দুঃখের আকাশে কী অবিকল ভাবে উঠত সাতরঙা রামধনু৷ তিনি পারতেন ফুলে ফুলে স্বরলিপি লিখতে৷ আমাদের গানের জলসাঘরে তিনিই ছিলেন ঝাড়বাতি৷ কিন্তু আজকের নিশি ফুরলেও সবাই তাঁকে একইভাবে চাইবেন? হয়তো বলবেন, তুঁহু মম মণপ্রাণ হে...চোখ ভিজবে প্রথম হওয়া মা আর উলু দেওয়া ঠানদিদের৷ তারা জানে, ফিরে পাওয়া যাবে
না৷ কিন্তু সন্ধ্যাই যে শিখিয়েছেন,দূর হতে ভাল বেসে যেতে৷ তিনি বলেছেন, আর ডেকো না!
সমস্যাবিধ্বস্ত সেই দশকগুলিতে তাঁর গানেই আশ্রয় খুঁজত বঙ্গসমাজ৷ উত্তম সুচিত্রার প্রেমের সুরেলা সফরের কাণ্ডারি সেই কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ হল বসন্তের সূত্রপাতেই, প্রেম দিবসের ঠিক পরের দিন৷ গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের জাদুকণ্ঠে সুরের সাম্পানে ভেসে গিয়েছে শ্রোতাদের অজস্র সকাল, সন্ধ্যা ও রাত৷ (Sandhya Mukhopadhyay Demise)
লেখো আয়ু....
চুপ করো, শব্দহীন হও
এই ক্ষতের মুখে প্রলেপ পড়বে না কোনওদিন৷ তবু কোনও এক মধ্য়বিত্ত বাড়ির ছাদে মাদুর পেতে শোনা হবে 'এ শুধু গানের দিন'। ঘুম না এলে চোখের পাতা ভিজবে 'কে তুমি আমারে ডাকো' শুনে। তুমি প্রশ্ন করেছিলে, 'দূরে গেলে হায় আমারে কী মনে রবে!' মনে রবে। আমরা প্রশ্ন করেছিলাম, কবে ফুরাবে এই পথ চাওয়া? জানতাম না, সুস্থ হওয়ার প্রতীক্ষায় দাঁড়ি টানবে মৃত্য়ু। স্বর্ণযুগের মৃত্যু দেখা বাঙালির কালাশৌচ কাটবে না কোনওদিন৷ 'এ সত্য অম্লান হয়ে মৃত্যরে করিবে অস্বীকার'৷ আর ভাববে, মৃত্যু কেবল মিথ্যে হোক!
ওগো মোর গীতিময়...
Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
বিনোদন জগতের লেটেস্ট সব খবর ( Entertainment News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ বলিউড, টলিউড থেকে হলিউড সব খবরই পাবেন এখানে ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন ন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
Sandhya Mukhopadhyay: এই বসন্তে সকাল এসেছিল, সন্ধ্য়া গড়াল না আর
Next Article
advertisement
MGNREGA: মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! কোটি কোটি কৃষক শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত, কেন্দ্রের নয়া ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
  • মনরেগা প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব সোনিয়া গান্ধি

  • কংগ্রেসে নেত্রীর দাবি, মনরেগা প্রকল্পকে কার্যত ধ্বংস করে দিল বিজেপি

  • প্রকল্পকে বদলের আইনকে ‘কালো আইন (ব্ল্যাক ল)’ বলে উল্লেখ্য সোনিয়ার৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement