Kantara: A Legend Chapter 1 Review: নিখুঁত না হয়েও অনবদ্য, এই ছবি দেখার অভিজ্ঞতা গায়ে কাঁটা জাগাবে
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
Kantara: A Legend - Chapter 1 Movie Review: এবার পরিচালক ও অভিনেতা ঋষভ শেঠি আমাদের অরণ্য আর আখ্যানের আরও গভীরে নিয়ে গেলেন, সেই কল্পকাহিনীর উৎস উন্মোচন করলেন পরতে পরতে যা দিয়ে প্রথম ছবিটি শুরু হয়েছিল।
Kantara: Chapter 1 (8/10)
কলকাতা: দক্ষিণ ভারতীয় ছবির দর্শক দিনে দিনে বাড়ছে সন্দেহ নেই। সাবটাইটেল বা ডাবিংয়ের উপরে নির্ভর করে সারা দেশ মজেছে দক্ষিণী কনটেন্টে। সেই ধারাতেই ২০২২ সালে যখন কান্তারা মুক্তি পায়, তখন তা রাতারাতি ইতিহাস তৈরি করে ফেলে। আসলে, এটা ঠিক প্রতি শুক্রবার সিনেমা হলে নিয়ম করে মুক্তি পাওয়া আরেকটি ছবিই ছিল না; এই ছবি দেখাটাই ছিল একটি অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা। কারও কারও কাছে এটি অপরিচিত ঐতিহ্যের জানালা খুলে দিয়েছিল, আবার কারও কারও কাছে এটি তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক শিকড়ের প্রতিফলন ঘটিয়েছিল রুপোলি পর্দায়। এহার মুক্তি পেল কান্তারা: আ লেজেন্ড- চ্যাপ্টার ১। ছবির ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়, কিন্তু আখ্যানের ধারাবাহিকতায় প্রথম, ইংরেজিতে যাকে প্রিক্যুয়েল বলা হয়ে থাকে। এবার পরিচালক ঋষভ শেঠি আমাদের অরণ্য আর আখ্যানের আরও গভীরে নিয়ে গেলেন, সেই কল্পকাহিনির উৎস উন্মোচন করলেন পরতে পরতে যা দিয়ে প্রথম ছবিটি শুরু হয়েছিল।
advertisement
advertisement
কদম্ব রাজবংশের যুগে কান্তার বা অরণ্যের ঐশ্বরিক রক্ষকদের চারপাশে এই ছবির গল্প আবর্তিত হয়েছে। পাঞ্জুরলি দেব, যিনি অরণ্যের প্রতিরক্ষামূলক আত্মা, ভারসাম্যের প্রতীক, তিনি যেমন আছেন; তেমনই আছেন গুলিক দেব, স্বভাবে চণ্ড পাঞ্জুরলির এই সঙ্গী মানুষের ভয় জাগিয়ে তোলেন, আদতে কিন্তু ন্যায়বিচারকে সমর্থন করেন তিনি আদ্যন্ত। এই দুই দৈব অস্তিত্ব প্রথম ছবিতেও ছিল। খুব সূক্ষ্মভাবে ছিল আরেক ঐশ্বরিক প্রসঙ্গ, এই ছবিতে তা প্রকট হল, বিষ্ণুর শূকর রূপ বা বরাহ অবতার এবারের আখ্যানে অদম্য শক্তি প্রবাহিত করেছে, দেবতাদের বনের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এই সব কিছুর মিশেলে কান্তারা: আ লেজেন্ড- চ্যাপ্টার ১ রহস্যবাদে আচ্ছন্ন এক লোককাহিনিতে ভর দিয়ে মানুষের লোভ এবং ঐশ্বরিক প্রতিশোধের মধ্যে সংঘর্ষের মঞ্চ তৈরি করেছে।
advertisement

একজন নির্মম শাসক যখন বনের লুকানো সম্পদ আবিষ্কার করে এবং ঐশ্বরিক শক্তির হাতে তার মৃত্যু হয়, তখন আখ্যানের কেন্দ্রীয় দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়। তার ছেলের বেঁচে থাকার ফলে এমন এক ঘটনার সূচনা হয় যা রাজপরিবার, উপজাতি এবং বহির্বিশ্বকে একটানে চিত্রনাট্যে নিয়ে আসে, যখন বনের আত্মারা নীরবে তাদের পবিত্র ভূমি পাহারা দিচ্ছিল।
advertisement
তবে, ছবির প্রথমার্ধে ঘন ঘন কমেডি রিলিফ এবং পার্শ্ব চরিত্রগুলির দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতি দর্শকের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। তবে, ওই যে বলে সবুরে মেওয়া ফলে! ধৈর্যের ফল পাওয়াও যায় খুব শীঘ্রই কারণ আখ্যানটি ইন্টারভ্যালের আগে রহস্যের প্রকাশ, স্তরে স্তরে দ্বন্দ্ব এবং আধ্যাত্মিকতার এক নিরবচ্ছিন্ন মিশ্রণের সঙ্গে উন্মুক্ত হয় হয়। এই ছবি একই সঙ্গে প্রশান্তি এবং ক্রোধ, শ্রদ্ধা এবং ভয়, সভ্যতা এবং অরণ্যের বৈপরীত্যের উপরে সমৃদ্ধ।
advertisement

ছবিটি কারিগরি দিক থেকে নিখুঁত, ঠিক যেন চোখের জন্য এক আনন্দের উৎস। অসাধারণ সিনেমাটোগ্রাফি, বিশাল সেট এবং মহাকাব্যিক স্কেলে কোরিওগ্রাফ করা অ্যাকশন সিকোয়েন্স দর্শককে এক অন্য জগতে ডুবিয়ে দেয়। ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর এবং গানগুলি ছবির সংশ্লিষ্ট মুহূর্তগুলিকে যথাযথ রোমাঞ্চকর করে তুলেছে, বিশেষ করে ঐশ্বরিক সিকোয়েন্সের সময়ে, যদিও কিছু ট্র্যাক তুলনায় দুর্বল একথাও স্বীকার করতেই হয়। ভিজ্যুয়াল এফেক্ট এবং অন্যান্য কারিগরি বিভাগগুলি বেশ কয়েকটি জায়গায় আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে, তবুও এমন কিছু মুহূর্ত রয়েছে যেখানে ফলাফল উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে পুরোপুরি মেলেনি, যার ফলে ছবিটি নিখুঁত হয়ে উঠতে পারেনি। ঠাই হোকবে, এই ছোটখাটো অসঙ্গতিগুলি চলচ্চিত্রের সামগ্রিক প্রভাবকে খুব একটা হ্রাস করতে পারে না।
advertisement
ঋষভ শেঠি আবারও এই ছবি দিয়ে নিজের গুণ প্রমাণ করে দিলেন, দূরদর্শী পরিচালক এবং একজন দক্ষ অভিনেতা উভয় ভূমিকাতেই তিনি সুদৃঢ়। রুক্মিণী বসন্তও চিত্রনাট্যে একটি শক্তিশালী ছাপ রেখে গিয়েছেন; তাঁর চরিত্রের গভীরতা এবং লাবণ্য আখ্যানকে সমৃদ্ধ করেছে। জয়রাম সুব্রহ্মণ্যম নিজের ভূমিকার সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ অভিনয় করেছেন, গুলশান দেবাইয়া ভাল পারফর্ম করলেও তাঁর চরিত্রে রঙ্গব্যঙ্গের দিক চোখে ঠেকে।
advertisement
শেষ পর্যন্ত কান্তারা: আ লেজেন্ড– চ্যাপ্টার ১ তার ঐশ্বরিক রহস্যবাদের আড়ালে শ্রেণীসংগ্রাম, লোভ এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার বিষয়বস্তুই তুলে ধরে। ছবিটিতে আধ্যাত্মিকতা কীভাবে আর্থ-সামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে মিশে যায় তা দেখানো থেকে বিরত থাকেনি। যদিও কিছু দর্শক ঐশ্বরিক চিত্রকল্পের প্রাচুর্যকে সমালোচনা করতে পারেন, অনেকের কাছে এটিই সিনেমা দেখার মজা বাড়িয়ে তুলবে।
সব মিলিয়ে কান্তারা: আ লেজেন্ড- চ্যাপ্টার ১ তাই উচ্চাকাঙ্ক্ষার আধারে হৃদয় থেকে নির্মিত একটি চলচ্চিত্র, অসম্পূর্ণ, নিখুঁত না হয়েও অবিস্মরণীয়। এটি দর্শকের ধৈর্যের দাবি করে, তাঁদের বিস্ময়, রহস্য এবং সাংস্কৃতিক গভীরতার মুহূর্ত দিয়ে ভরিয়েও তোলে। নিছক এক প্রিক্যুয়েলের বদলে এই ছবি কান্তারার উত্তরাধিকারকে সমৃদ্ধ করে এবং ভবিষ্যতের পর্ব নির্মাণের পথ প্রশস্ত করে দেয়।
অতএব, কান্তারা: আ লেজেন্ড- চ্যাপ্টার ১ দেখতে ভালই লাগবে; এটি এমন একটি জগতে ডুবে যাওয়ার মতো যেখানে মিথ এবং বাস্তবতা ঝাপসা হয়ে যায়। মিথ, সংস্কৃতি এবং মহাকাব্যিক আখ্যান যাঁরা পছন্দ করেন, তাঁদের এই ছবি অবশ্যই দেখা উচিত।
বিনোদন জগতের লেটেস্ট সব খবর ( Entertainment News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ বলিউড, টলিউড থেকে হলিউড সব খবরই পাবেন এখানে ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন ন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
October 07, 2025 10:28 AM IST