#লন্ডন : যেকোনও বিষয়ে ঝড় উঠলে নীরবতার গাম্ভীর্য বজায় রাখা বাকিংহ্যাম প্যালেসের পুরনো অভ্যাস। রাজকীয় আভিজাত্যের মোড়কে বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকাটাই রাজপরিবারের রেওয়াজ। কিন্তু এবার আর সেটি হওয়ার জো নেই। পরিবারের কনিষ্ঠ পুত্রবধূ রীতিমতো বর্ণ বৈষম্যের অভিযোগ এনেছেন রয়্যাল ফ্যামিলির বিরুদ্ধে। 'ডিউক এন্ড ডাচেস অফ সাসেক্স', হ্যারি ও মেগান মার্কেল-এর সেই অভিযোগগুলিই গোটাবিশ্বে আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। আর তাতেই পরিবারের সম্মান বাঁচাতে কার্যত মুখ খুলতে বাধ্য হল রাজপরিবারও।
৯ মার্চ রাজপরিবারের তরফে জানানো হয়, মার্কিন সঞ্চালক অপরাহ উইনফ্রেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ পরিবারের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষের যে অভিযোগ মার্কেল এনেছেন তা অত্যন্ত 'উদ্বেগজনক'। একইসঙ্গে জানানো হয়, রাজপরিবারের সদস্যরাই ব্যক্তিগতভাবে, পরিবারের মধ্যেই এই বিষয়টিকে সমাধান করবেন।
রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের পক্ষে জারি করা এক বিবৃতিতে মেগান এবং হ্যারির ঘন্টা দুয়েকের টেলিভিশন সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে বলা হয়, "গত কয়েক বছর হ্যারি এবং মেগানের জন্য কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল তা জানতে পেরে গোটা পরিবার অত্যন্ত দুঃখিত।" সাক্ষাৎকারে উঠে আসা বিষয়গুলি, বিশেষত বর্ণবৈষম্য সংক্রান্ত বিষয়গুলি পরিবার গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে এবং পরিবারের মধ্যেও এই নিয়ে আলোচনা হবে।" যদিও এই বিবৃতিতে এটাও বলা হয়, কিছু কিছু ঘটনার স্মৃতি পরস্পরবিরোধীও হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ রাজপরিবারের পুত্রবধূ হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে এই সাক্ষাৎকারে মেগান বলেন পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে এমনকি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও আত্মহননের কথা ভেবেছিলেন তিনি। মেগান জানান, বাকিংহাম প্যালেসে পা রাখার কিছুদিন পর থেকেই অসহায়তাবোধ এবং হতাশা গ্রাস করেছিল তাঁকে। বারবার সাহায্য চেয়েও সে সময় কাউকে পাশে পাননি তিনি। মেডিক্যাল হেল্প এর আর্জি জানালেও পরিবারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল এটি সম্ভব নয়। কারণ এতে রাজ পরিবারের সম্মান ক্ষুন্ন হতে পারে।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ রাজ পরিবারের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নেওয়ার পর প্রথমবার একসঙ্গে কোনও টেলিভিশন শো-তে হাজির হয়েছিলেন প্রিন্স হ্যারি ও মেগ্যান। ঘন্টা দুয়েকের সেই সাক্ষাৎকারেই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে হইচই ফেলে দিয়েছেন ব্রিটিশ রাজ পরিবারের এই দুই সদস্য, যাঁরা রাজ পরিবারের জাঁকজমক ছেড়ে সাধারণ জীবনযাপন করছেন মার্কিন মুলুকে।