শ্যামশ্রী সাহা, কলকাতা: অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিপাড়া। এককালে বাংলা সিনেমায় চুটিয়ে কাজ করা অভিষেক চট্টোপাধ্যায় বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলা সিরিয়ালের জনপ্রিয় মুখ হয়ে উঠেছিলেন। বুধবার রাতে একটি চ্যানেলের রিয়েলিটি শো-এর শুটিং সেরে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। বারবার বমি হওয়ায় স্যালাইন দেওয়া হয় তাঁকে। তবে স্যালাইন জল খেয়েও শরীর ঠিক হয়নি। এরপর গভীর রাত ১টা ৪০ মিনিট নাগাদ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় (Actor Abhishek Chatterjee Passes Away)।
আরও পড়ুন- ‘‘অভিষেক ছিলেন অত্যন্ত গুণী শিল্পী, আমরা তাঁকে মিস করব...’’ট্যুইট মুখ্যমন্ত্রীর
একসঙ্গে বহু বাংলা ছবিতে কাজ করা অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের কথায় ওর চলে যাওয়াটা বাংলা সিনেমায় শূন্যতা সৃষ্টি করবে। অভিষেকের মতো অভিনেতারা বাংলা সিনেমার খরার সময় এসে ধরে রেখেছিল এই ইন্ডাস্ট্রিকে (Rituparna Sengupta's reaction on Abhishek Chatterjee's demise)।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর কথায়, ‘‘ জীবন অত্যন্ত আনপ্রেডিক্টেবল ৷ কখন কার কী হয়, কেউ বলতে পারবে না ৷ কিন্তু যাঁর যখন যাওয়ার সময় হয়নি, তিনি চলে গেলে তার থেকে দুঃখের আর কী হতে পারে ৷ আমার সঙ্গে অভিষেকের এত বড় বড় হিট ছবি হয়েছে ৷ একসময় আমরা অত্যন্ত হিট জুটি ছিলাম বাংলার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ৷ বেশ অনেক ছবি একসঙ্গে আমরা করেছি ৷ অভিষেক আর আমার সবচেয়ে বড় হিট অবশ্যই ‘সুজনসুখী’ ছবিটি ৷ সেই ছবির প্রযোজক অসীম সরকারও এখন আর বেঁচে নেই ৷ উনি এসে আমায় বলেছিলেন, ‘তুমি আমার লক্ষ্মী...’ ৷ অভিষেকেরও অনেক প্রশংসা করেছিলেন ৷ এ ছাড়া স্বপন সাহার বিভিন্ন ছবিতে আমরা কাজ করেছি ৷ উনিই আমাদের জুটিকে এনেছিলেন ৷ মনে পড়ে সেই উত্তরবঙ্গের ফালাকাটায় শ্যুটিংয়ের কথা ৷ সেখানে ছোট্ট একটা ঘরে আমরা শ্যুটিংয়ের পর থেকেছিলাম ৷ এ ছাড়া অভিষেকের সঙ্গে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ ছবি ‘দহন’, যার জন্য জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছিলাম ৷’’
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত এবং অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের জুটি অভিনয়ের পাশাপাশি ভাল ডান্সার হিসেবেও যথেষ্ট বিখ্যাত ছিলেন ৷ অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘ লম্বা, ফর্সা, সুুপুরুষ চেহারার অভিষেকের অনেক অবদান রয়েছে এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ৷ যখন বাংলা সিনেমার ইন্ডাস্ট্রি অত্যন্ত খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল, তখন আমি, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের মতো কিছু মুখই ইন্ডাস্ট্রিকে ধরে রেখেছিল ৷ বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তখন একেবারেই ভাল সময় যাচ্ছিল না ৷ প্রডিউসাররা সেভাবে ছবি বানাতে চাইতেন না ৷ এই সব খারাপ দিনেরও সাক্ষী ছিলাম আমরা ৷ অনেক কাজ করেছি অভিষেকের সঙ্গে ৷ ও যেখানেই থাকুক ভাল থাকুক ৷ ওঁর আত্মা শান্তি পাক ৷ এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রতি যদি ওর কোনও ক্ষোভ থেকে থাকে, পরবর্তী জীবনে যেন তা পরিপূর্ণ হয় ৷ ’’
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।