Success Story: চরম আর্থিক-অনটন! অদম্য মনের জোরে IIT-তে পড়ার সুযোগ দিনমজুরের ছেলের, কৃতি ছাত্রের জার্নি চমকে দেবে আপনাকেও
- Published by:Riya Das
- news18 bangla
- Reported by:Ranjan Chanda
Last Updated:
Success Story: অভাবের সংসারে বড় হয়ে, গ্রাম থেকে আইআইটি ভুবনেশ্বরে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ মিলেছে সবং ব্লকের দশগ্রাম সতীশচন্দ্র সর্বার্থসাধক শিক্ষাসদনের ছাত্র অভিজিৎ মাঝির। দিনমজুর পরিবারের ছেলে অভিজিৎ।
পশ্চিম মেদিনীপুর: অভাবের সংসারে তিন ছেলে। তিনজনই বরাবর মেধাবী। বাবা পোল্ট্রি ফার্মে কাজ করেন। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারে, কখনও কখনও মাকেও যেতে হয়েছে কাজে। চোখের সামনে দেখেছে বাবা মায়ের কষ্ট, নিরন্তর পড়াশোনা করে প্রথম চান্সেই আইআইটি-তে পড়ার সুযোগ মিলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক কৃতি ছাত্রের। উচ্চ-মাধ্যমিকের পর সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে আইআইটি ভুবনেশ্বরে পড়ার সুযোগ মিলেছে অভাবী সংসারের এই ছেলের। তার এই সাফল্যে খুশির হাওয়া পরিবারে। খুশি বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। ছোট থেকেই বরাবর মেধাবী এই ছাত্র। স্কুল জীবনে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছে গ্রামের বিদ্যালয়ে। তবে অষ্টম শ্রেণীর পর চলে আসা সবং-এ। সেখানেই হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা চালিয়ে গেছে সে। মাধ্যমিকে দুর্দান্ত ফলের পর উচ্চমাধ্যমিকেও নজরকাড়া সাফল্য মিলেছে।
অভাবের সংসারে বড় হয়ে, গ্রাম থেকে আইআইটি ভুবনেশ্বরে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ মিলেছে সবং ব্লকের দশগ্রাম সতীশচন্দ্র সর্বার্থসাধক শিক্ষাসদনের ছাত্র অভিজিৎ মাঝির। দিনমজুর পরিবারের ছেলে অভিজিৎ।পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জঙ্গলমহল এলাকার গুড়গুড়িপাল থানার অন্তর্গত কঙ্কাবতী এলাকার বাসিন্দা। বাড়ির কাছে একটি পোল্ট্রি ফার্মে সামান্য বেতনে কাজ করেন তার বাবা। অভিজিৎ এর বাবা সুকুমার মাঝি এবং মা কাঞ্চনি মাঝি। বাড়িতে তিন ভাই অভিজিৎ এর। অভিজিৎ সবথেকে ছোট। তবে তিনজন ভাই পড়াশোনায় মেধাবী। সম্প্রতি তার বড় দাদা ভারতীয় ডাক বিভাগে চুক্তিভিত্তিক কর্মী। মেজো দাদা পড়াশোনা করছে। তবে অভিজিতের অধ্যবসায় এবং নিজের জেদে মিলেছে সফলতা। সবরকম ভাবে সাহায্য পেয়েছে বিদ্যালয়ের। উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়ার পর জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে আইআইটি ভুবনেশ্বরে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে বিটেক পড়ার জন্য ভর্তি হয়েছে অভিজিৎ। অভিজিৎ জানিয়েছেন, “বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-সহ অন্যরা পড়াশোনায় অনেক উপকার করেছেন। উচ্চমাধ্যমিকের পর শিক্ষকদের কোচিং এর পাশাপাশি বিদ্যালয় থেকে ঠিক করে দেওয়া শিক্ষকদের থেকে অনলাইনে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এই সাফল্যে খুশি। আগামী থেকে অধ্যাপক হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে। এছাড়াও যারা কষ্ট করে আমাকে এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে, বাবা, মা এবং আমার বিদ্যালয়ের জন্য কিছু করতে চাই।”
advertisement
advertisement
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ব্লকের দশগ্রাম সতীশচন্দ্র সর্বার্থসাধক শিক্ষসদন হাইস্কুলে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক-এর ছাত্র অভিজিৎ মাঝি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জঙ্গলমহল এলাকার গুড়গুড়ি পাল থানার অন্তর্গত কঙ্কাবতী এলাকার বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই ফুটবল খেলায় দক্ষ ছিল। স্কুলে পড়াশোনা চলাকালীন ফুটবল খেলায় একাধিক জায়গায় সাফল্য পেয়েছে। তা দেখেই সবংয়ের দশগ্রাম সতীশচন্দ্র সর্বার্থসাধক শিক্ষাসদন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক যুগল প্রধান পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাকে ভর্তি করান নিজের বিদ্যালয়ে। সেখানে হোস্টেলে থেকে পড়াশুনোর পাশাপাশি খেলাধুলাও করত সে। একাধিকবার জেলার বিভিন্ন ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। মিলেছে সফলতা। খেলাধুলার পাশাপাশি অত্যন্ত পড়াশোনায় মেধাবী। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যুগল প্রধান জানিয়েছেন, “খেলাধুলার জন্য তাকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো। শুধু খেলাধুলায় ভাল এইভাবে তাকে চিনেছিলাম আমরা। কিন্তু অত্যন্ত মেধাবী অভিজিৎ। এরপর বিদ্যালয়ে চার বছর পড়াশোনা করেছে সে। বিদ্যালয়ে প্রাক্তনীদের থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষার জন্য সাহায্য পেয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করেছেন। আমাদের বিদ্যালয়ের কাছে আইকন অভিজিৎ। শুধু খেলাধুলা নয়, খেলাধুলার পাশাপাশি তার জয়েন এন্ট্রান্স পরীক্ষার ভাল ফল অন্যান্য ছাত্রদের কাছে অনুপ্রেরণা। কোনও প্রথাগত নামি দামী কোচিং ছাড়াও কে নিজের মনের জোরে এমন সফলতা পাওয়া যায়, তা সমাজের কাছে অনুপ্রেরণার।”
advertisement
প্রথম থেকে চাষবাস করে চলত সংসার। এরপর তিন ছেলের পড়াশুনা চালাতে পরবর্তীতে একটি পোল্ট্রি ফার্মে কাজ শুরু করেন। কিন্তু তিনজনের পড়াশুনো চালানো মোটেও সহজসাধ্য হয়ে ওঠেনি সুকুমার বাবুর।সুকুমার বাবু বলেন, “তিন ছেলেই পড়াশুনায় বেশ মেধাবী। ছোট ছেলে নিজের ইচ্ছেতেই এই সফলতা পেয়েছে। আমরা বেশ খুশি। তবে একটা ভয় রয়েছে, আগামীতে তার পড়াশুনার খরচ চালানো বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কীভাবে চলবে বুঝে উঠতে পারছি না।”জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে এসে সফলতা উচ্চমাধ্যমিক পাস এই ছাত্রের। আগামীতে এম.টেক করে অধ্যাপনা করা স্বপ্ন তার। তবে গোটা জেলাবাসীর কাছে গর্বের অভিজিৎ, তার অধ্যবসায় ও পড়াশুনার প্রতি ভালোবাসা, মনের জেদ গোটা ছাত্রসমাজের কাছে অনুপ্রেরণার।
advertisement
রঞ্জন চন্দ
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
August 01, 2024 8:00 PM IST