#নয়াদিল্লি: করোনাবিধ্বস্ত পরিবেশে দেশের অর্থনীতি যে বেশ টালমাটাল, সে বিষয়ে সন্দেহ করার কোনও কারণ নেই। কিন্তু মানুষ দুর্যোগের কাছে হেরে যেতে ভালোবাসে না। তাই সব সময়েই চেষ্টা চলে বিপর্যয় পেরিয়ে এসে স্বাভাবিক জীবনে আগের মতো থিতু হওয়ার। করোনার প্রকোপে, বিশেষ করে লকডাউনের সময়ে অনেক প্রতিষ্ঠানের দরজাতেই তালা পড়ে গিয়েছে, হয় বরাবরের জন্য, নয় তো সাময়িক ভাবে। কিন্তু সরকারি চাকরি এই দিক থেকে কর্মীদের ঘিরে রেখেছে নিরাপত্তার বেষ্টনীতে। করোনাকালে সরকারি কর্মীরা যেমন চাকরি হারাননি, তেমনই প্রতি বছরে নিযুক্তির নিয়ম মেনে নতুন নতুন শূন্যপদে নিয়োগও চলেছে নানা সরকারি দফতরে। এই লক্ষ্যে কিন্তু পিছিয়ে নেই IT ক্ষেত্রও; Naukri JobSpeak-এর সাম্প্রতিক রিপোর্ট অন্তত সে রকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
প্রতি মাসে তাদের সংস্থায় পোস্ট হওয়া চাকরির বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে Naukri.com এই Naukri JobSpeak রিপোর্ট পেশ করে থাকে। তাদের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে যে করোনার দ্বিতীয় ঝাপটার মধ্যেও দেশে IT প্রফেশনালদের চাহিদা তুঙ্গে। Adobe, IBM, Accenture, Oracle, Udaan, Flipkart, Meesho, Motorola, SAP এবং Nike India-র মতো কর্পোরেট সংস্থাগুলোয় বিপুল পরিমাণে নিয়োগ চলেছে। যার জেরে ২০১৯ সালে মে মাসের তুলনায় ২০২১ সালের মে মাসে নিয়োগ বেড়েছে ৩৯ শতাংশ। আবার যদি মাসিক ভিত্তিতে হিসেব করা হয়, তাহলে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের তুলনায় মে মাসে IT ক্ষেত্রে নিয়োগ ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে পরিসংখ্যান হিসেব দিচ্ছে।
তবে এই প্রসঙ্গে একটা কথা মনে রাখা দরকার। Naukri JobSpeak-এর এই পরিসংখ্যান কিন্তু দেশের হোয়াইট কলার কর্মীদের ঘিরেই গড়ে উঠেছে। এই বিষয়ে সংস্থার চিফ বিজনেস অফিসার পবন গয়াল (Pawan Goyal) জানিয়েছেন যে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কাতেও এই বিপুল পরিমাণ নিয়োগের হার তাঁদের অবাক করে দিয়েছে। তবে শুধুই IT ক্ষেত্র নয়, গয়াল জানিয়েছেন যে অনলাইন নির্ভর শিক্ষাসংস্থা, যেমন Byjus, Vedantu, Toppr এবং Unacademy-র মতো সংস্থাতেও অন্য বছরের তুলনায় ২০২১ সালের মে মাসে নিয়োগের হার ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে; যদিও IT ক্ষেত্রেই বিশালহারে নিয়োগ মূলত চলেছে।
এবার যদি দেশের IT শহরগুলোর দিকে চোখ রাখতে হয়, তাহলে দেখা যাচ্ছে যে পুণেতে নিয়োগ বেড়েছে ১২ শতাংশ, বেঙ্গালুরুতে ৯ শতাংশ এবং হায়দরাবাদে ৪ শতাংশ। উল্লেখযোগ্য ব্যাপার- এই দিক থেতে রাজধানী এবং মুম্বই কিন্তু পিছিয়ে রয়েছে। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বলে যতই প্রসিদ্ধি থাক না কেন, করোনার দাপটে মুম্বইয়ে নিয়োগ ৫ শতাংশ হয়েছে মেরে-কেটে। অন্য দিকে, এই এক কারণে দিল্লিতে নিয়োগের হার পড়ে গিয়েছে ১১ শতাংশ!
এই জায়গায় এসে স্বাভাবিক ভাবেই দেশের বেকারত্বের পরিসংখ্যানের কথাও উল্লেখ করতে হয়। Naukri JobSpeak-এর রিপোর্ট বলছে যে দেশে বেকারত্বের হার কিন্তু ধাপে ধাপে বেড়েছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে এর পরিসংখ্যান ছিল ৬.৫০ শতাংশ, এপ্রিলে সেটা হয়েছে ৭.৯৭ শতাংশ এবং মে মাসে এক ধাক্কায় বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১১.৯০ শতাংশে। দেশে IT ক্ষেত্রে যদি নিয়োগের হার বেড়ে থাকে, তাহলে বেকারত্বের হার কী করে এই জায়গায় এসে ঠেকে?
গয়াল জানিয়েছেন যে IT ক্ষেত্রে ফ্রেশারদের চেয়ে এক্সপেরিয়েন্সড কর্মীদের নিয়োগেই প্রাধান্য বেশি। তিনি বলতে দ্বিধা করেননি যে অন্য বছরের তুলনায় এবারে ফ্রেশারদের চাকরির হার ৭ শতাংশ পড়েছে। একই ভাবে নিয়োগের হার হসপিটালিটি সেক্টরে -৪১ শতাংশ, রিটেল ইন্ডাস্ট্রিতে -২০ শতাংশ, ব্যাঙ্কিং/ফিনান্সে -১৫ শতাংশ, FMCG -১৩ শতাংশ, BPO/ITES সেক্টরে -১০ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে যা বাড়িয়ে তুলেছে বেকারত্বের হার।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, Recruitment, Unemployment