#কলকাতা: অভিনব কায়দাতে ই - সিমের মাধ্যমে সিম swap করে sms ব্লাস্ট এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীর ৮৪ লক্ষ টাকা গায়েবের অভিযোগ সাইবার জালিয়াতদের বিরুদ্ধে | সল্টলেকের ওই ব্যাবসায়ীর অনলাইন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে রহস্যজনক ভাবে ৮৪ লক্ষ টাকা উধাও | হেয়ারস্ট্রিটে বেসরকারি অনলাইন কারেন্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৮৪ লক্ষ টাকা উধাও | হেয়ারস্ট্রিট এ অভিযোগ দায়ের করেন ব্যবসায়ী শিবরাম আরোরা |
ওই ব্যাবসায়ী জানান, "তিন দিন ধরে লাগাতার ফোনে সিম কনভার্ট করতে চান কিনা এধরণের এসএমএস আসে | এমনকি 500 sms আসে বলেও অভিযোগ | তারপরই মোবাইলের টাওয়ার গায়েব হঠাৎ | মঙ্গলবার ব্যবসার কাজে অনলাইন ট্রানজাকশন করার সময় দেখেন অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব ৮৪ লক্ষ টাকা|" এরপর হেয়ারস্ট্রিট এলাকায় ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের কাছে ওই ব্যবসায়ী খোঁজ নেন | জানতে পারেন ৮৪ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক জালিয়াতরা ওই টাকা হাতিয়েছে | এরপরই তিনি হেয়ারস্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেন | এবার সেই ঘটনায় হেয়ার স্ট্রিট থানা থেকে তদন্তভার হাতে নিল কলকাতা পুলিশের অ্যান্ট ব্যাঙ্ক ফ্রড সেকশনের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা |
কীভাবে জালিয়াতরা অভিনব কায়দাতে টাকা গায়েব করছে?
জালিয়াতরা ই - সিমের ( ভার্চুয়াল সিম ) মাধ্যমে সিম swap এর মাধ্যমে টাকা উধাও করছে | তদন্তকারীদের অনুমান, জালিয়াতরা ডার্ক ওয়েব, বা সোশ্যাল সাইটের মাধ্যমে ইমেল আইডি, ফোন নম্বর ডেটা জোগাড় করে | এরপর প্রতারক নির্দিষ্ট সার্ভিস প্রোভাইডারকে বলে সে ই-সিম e কনভার্ট করতে চায় | এই রিকোয়েস্ট email / sms মাধ্যম e সার্ভিস প্রোভাইডারকে পাঠায় প্রতারক ৷ ফিজিক্যাল সিম থেকে ই-সিম ই-কনভার্ট জন্য রিকোয়েস্ট পাঠানো হয় | সার্ভিস প্রোভাইডার এরপর মোবাইলে sms পাঠাবে যে ই সিম কনভার্ট করতে চায় কিনা | এরপর নো করলে কিছু হবে না | কিন্তু জালিয়াতরা বারবার ই সিম কনভার্ট জন্য রিকোয়েস্ট পাঠাতেই থাকে সার্ভিস প্রোভাইডারকে |তখন সার্ভিস প্রোভাইডারও বারবার ফোনে sms পাঠায় ই সিম কনভার্ট করতে চায় কিনা | একসঙ্গে প্রায় 500 sms ঢুকতে থাকে যাকে বলে " sms blasting" ৷
এরপর ভুল বসত পাঠানো sms এ yes করলে তার মানে ই সিম কনভার্ট করতে রাজি ৷ তখন সার্ভিস প্রোভাইডার victim এর থেকে বার্তা পাওয়া মাত্র প্রতারকদের ( হ্যাক কড়া email e ) Qr কোড পাঠায় ৷ এরপর প্রতারকরা QR কোড স্ক্যান করে নিলেই প্রতারকদের ফোনে ই -সিম active হয়ে যাবে ৷ এবং ফোনের টাওয়ার চলে যাবে ৷ ফলে প্রতারকদের ফোনে তখন sms, otp বাকি সব কিছু আসতে থাকবে ৷ প্রতারকরা অনলাইন ব্যাঙ্কিং সিস্টেম e গিয়ে forgot পাসওয়ার্ড দিলে ব্যাঙ্ক থেকে registered নম্বরে ( যা কিনা প্রতারকদের হাতে e-sim ওই রেজিস্টারের নম্বর ) OTP পাঠাবে, যা কিনা তখন জালিয়াতদের হাতে রয়েছে ৷ এরপর জালিয়াতরা অনলাইন ব্যাঙ্কিং থেকে আনুমানিক ১৩ টা ট্রানজাকশন করে প্রায় ৮৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় | অথচ গুনাক্ষরে তা টের পাবে না কাস্টমার ৷
মঙ্গলবার ওই ব্যাবসায়ী যখন অনলাইন ট্রানজাকশান করতে যায় তখন দেখে টাকা উধাও | এরপর হেয়ারস্ট্রিট বেসরকারি ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে প্রতারক ৮৪ লক্ষ টাকা গায়েব করেছে অনলাইন ব্যাঙ্কিং থেকে | এরপর হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ করে ওই ব্যাবসায়ী | পুলিশের অনুমান, এর পিছনে বড় র্যাকেট কাজ করছে | কলকাতার বাইরে বসে এই গ্যাং অপারেট করছে |
পুলিশ সুত্রে খবর, গত ৩১ জুলাই থেকে ২ অগাস্ট পর্যন্ত টানা 500 টি sms আসে| তখনই এই ঘটনা ঘটে বলে অনুমান | এধরণের ক্ষেত্রে জালিয়াতরা টার্গেট করে এমন দিনে যার পরের দিন ব্যাঙ্ক যেদিন বন্ধ থাকবে তার আগে রাত থেকে এই অপারেশন চালানো হয় | তদন্তকারীরা ইতিমধ্যেই কলকাতার বাইরে কয়েকটি অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছে | যেখানে ওই টাকা একাধিক অ্যাকাউন্টে গিয়ে ঢুকেছে | গোয়েন্দারা তাদের খোঁজ করছে | যে sms গুলো এসেছে ওই ব্যাবসায়ীর ফোনে সেক্ষেত্রে সার্ভিস প্রোভাইডার সঙ্গেও তদন্তকারীরা কথা বলবেন | ই সিম চক্রে কারা জড়িত? এই গ্যাংয়ের জাল কতদূর বিস্তার? এরকম কি আরো অনেকে প্রতারিত হয়েছেন? গোয়েন্দারা সব দিক খতিয়ে দেখছেন |
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: E Sim, Online Fraud