#নয়াদিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি ভ্যাকসিনের প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালে আশাব্যঞ্জক সাফল্য মিলেছে৷ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (SII) জানাচ্ছে, তারা খুব শীঘ্রই ওই ভ্যাকসিনের ৭ থেকে ৮ কোটি ডোজ তৈরি করা শুরু করবে৷ বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা SII-কে জনসাধারণের জন্য বিপুল ভ্যাকসিন তৈরির জন্য বেছেছে অক্সফোর্ড ও তার পার্টনার AstraZeneca৷
কবে নাগাদ করোনার ভ্যাকসিন জনগণের জন্য তৈরি হয়ে যাবে? ভ্যাকসিন বিতরণে সংস্থার পরিকল্পনা কী? এসআইআই-এর সিইও আদর পুনাওয়ালা CNN-News18-এর এগজিকিউটিভ এডিটর জাক্কা জ্যাকবকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কারে জানালেন বিস্তারিত৷
তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল আপনি আশা করছেন আগামী ১ বা দু সপ্তাহে শুরু হয়ে যাবে৷ তারপরে বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে৷ ঠিক কতটা সময় লাগতে পারে সম্পূর্ণ পরীক্ষা শেষ হতে?
আদর পুনাওয়ালা: আমরা দ্রুত ভ্যাকসিনটির যাবতীয় পরীক্ষা শেষ করার চেষ্টা করছি৷ আমরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করছি৷ তারপর পরের ধাপে৷ ধরে রাখুন আরও দুই সপ্তাহ৷ মোটামুটি একমাসের মধ্যে আমরা আশা করছি, হাসপাতালে রোগীদের উপর চূড়ান্ত পরীক্ষা করতে পারব৷
তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে কতজনের উপর পরীক্ষা করা হবে?
আদর পুনাওয়ালা: আমরা মুম্বই ও পুনের মধ্যে বহু হাসপাতাল পাচ্ছি, যেখানে করোনা আক্রান্ত ও জনসংখ্যা প্রচুর৷ ট্রায়ালের জন্য যা পারফেক্ট৷ হয়তো ৫ হাজার রোগীর উপরে পরীক্ষা করা হতে পারে তৃতীয় পর্যায়ে৷
সব কিছু ঠিক থাকলে, এই যুগান্তকারী ভ্যাকসিনে ভারতের একটি সংস্থারও অবদান থাকবে৷ আপনার কী মনে হয়?
আদর পুনাওয়ালা: আমরা একেবারে শুরু থেকে ভ্যাকসিন তৈরি করছি৷ আমরা শুধু ওদের প্রযুক্তি ব্যবহার করছি৷ ভারতের যে কোনও সংস্থার কাছেই এটি গর্বের৷ আরও কয়েকটি প্রথমসারির সংস্থাও এর অংশীদার হতে চলেছে৷ বিশ্বে ভ্যাকসিন উত্পাদনে ভারত এখন লিডার৷
যদি কোনও ব্যক্তিকে এই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ দেওয়া যায়, তা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আগামী ৬ মাস বা এক বছর করোনা আক্রান্ত হওয়ার ভয় নেই?
আদর পুনাওয়ালা: দেখুন, এটা প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল থেকে অনুমান করা হচ্ছে৷ এটা প্রমাণ করতে আমাদের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে৷ কারণ, কাউকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে ২ থেকে ৩ মাস অপেক্ষা করতে হয়, তিনি আবার সংক্রমিত হলেন কি না, তা দেখার জন্য৷ সেটাই আমরা নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করছি৷
ভ্যাকসিন ট্রায়ালে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া৷ এই ভ্যাকসিনে মাথা ব্যথা, জ্বরের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে৷ আপনি কি তা নিয়ে চিন্তিত?
আদর পুনাওয়ালা: না৷ অন্যান্য ভ্যাকসিনের মতোই খুব সামান্য কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে৷ অল্প জ্বর, মাথা ব্যথা৷ বাড়াবাড়ি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি, যা ভাল খবর৷ আমার বিশ্বাস, নিরাপত্তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠবে না৷
এটি শুধু একটি ভ্যাকসিনের বিষয় নয়, অন্তত হাফ ডজন ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষায় ইতিবাচক রিপোর্ট মিলেছে৷ প্রথম সংস্থা হিসেবে করোনা ভ্যাকসিন তৈরির প্রতিযোগিতা?
আদর পুনাওয়ালা: না, একেবারেই না৷ আমরা এই প্রতিযোগিতায় নেই৷ আমরা সেরা ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা করছি, যা নিরাপদ ও দীর্ঘমেয়াদী হবে৷ ৫টি ভ্যাকসিনের মধ্যে আমাদের বাছাই করা একটির বেশি ভ্যাকসিন সফল হবে, আমরা নিশ্চিত৷
নভেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত ট্রায়াল হয়ে যাবে৷ কবে নাগাদ বাজারে আসতে পারে ভ্যাকসিনটি?
আদর পুনাওয়ালা: সম্ভবত ডিসেম্বর বা আগামী বছরের প্রথম তিন মাসের মধ্যে৷ কারণ, দেশের প্রতিটি অংশে পৌঁছতে কিছু সময় লাগবে৷ গোটা প্রক্রিয়া শেষ করে ভারতে সকলের জন্য ভ্যাকসিন আসতে ধরে রাখুন আগামী বছর মার্চের মধ্যে৷ তবে স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য কিছু ডোজ আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে তৈরির চেষ্টা করছি৷
আগামী বছরের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে কত ডোজ ভ্যাকসিন তৈরির পরিকল্পনা করছে?
আদর পুনাওয়ালা: আমাদের বর্তমান ক্যাপাসিটি ৭ থেকে ৮ কোটি ডোজ তৈরির মতো রয়েছে৷ ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা চেষ্টা করছি অন্তত ৩ কোটি ডোজ তৈরি করার৷ যদি এই ভ্যাকসিনটি দুটি ডোজের হয়, তা হলে পৃথিবীর সবাইকে দুটি করে ডোজের ভ্যাকসিন দিতে ৩ থেকে ৪ বছর তো লাগবেই আমাদের৷
সাক্ষাত্কারটি ইংরেজিতে পড়তে ক্লিক করুন
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Adar Poonawalla, Coronavirus, Corornavirus Vaccine, SII